কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আকৃতিতে খাটো হলেও নাটবল্টু বলবান

www.ajkerpatrika.com সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশিত: ৩০ আগস্ট ২০২৩, ১০:০৭

দেশজুড়ে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। সেগুলোর প্রয়োজন আছে। পদ্মা সেতু তো আমাদের জন্য খুব বড় অহংকারের বস্তু। কিন্তু ছোট ছোট সাঁকোও তো দরকার। সাঁকো তৈরি না করলে এবং তৈরি সাঁকোর রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতি ঘটলে তো সাধারণ মানুষের দুর্দশা ঘুচবে না। এমন খবর তো আমাদের হরহামেশাই দৈনিক পত্রিকায় পড়তে হয় যে গ্রামাঞ্চলে ‘২০ হাজার মানুষের নদী পারাপারের জন্য বাঁশের সাঁকোই ভরসা।’ আর একই দৈনিকে একই দিনের খবর দেখতে পাই: ১২ ইঞ্চি জমির বিরোধ নিয়ে পাঁচজন হাসপাতালে ভর্তি। আবার বাসস্ট্যান্ডের নামকরণ দিয়ে মাইকে টেঁটাযুদ্ধের ডাক। বড় বড় জিনিসের নিচে চাপা থাকা অবস্থায় মানুষ নিজ নিজ ছোটখাটো সুখ-দুঃখ ও সমস্যা নিয়ে অত্যন্ত অস্থির হয়ে আছে। তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে, ছোট হয়ে পড়ছে। ছোট ছোট যে খবরের কথা উল্লেখ করলাম, এর আশপাশেই আরও একটি ছোট খবর ঘোরাফেরা করছে দেখলাম। সেটি এ রকমের, বৃদ্ধ বাবাকে তাঁর দুই ছেলে মিলে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। বৃদ্ধের অপরাধ, ছেলেদের তিনি জমি লিখে দিচ্ছেন না। বৃদ্ধের বয়স ৮০। তিনি এখন কোথায় যাবেন? গেছেন থানায়। নালিশ করবেন বলে। আশা করা হচ্ছে, পুলিশ এ ক্ষেত্রে বৃদ্ধ পিতার সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু পুলিশ যে উল্টো পথও ধরে, এমন খবরেরও তো কোনো ঘাটতি নেই। যেমন এ রকম একটা খবর, ‘মা-বাবাকে ঘরছাড়া করতে পুলিশ দিয়ে পেটাল ছেলে।’


মানুষের মধ্যে স্নেহ-মমতার অভাব ঘটেছে, বিবেক-বিবেচনার ভীষণ দুর্দশা—এসব কথা আমরা বলতে পারব, বলা দরকারও। ‘আদর্শলিপি’র নীতিকথাগুলো যে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ আবশ্যক বৈকি। কিন্তু আসল ঘটনাটা তো অন্য রকমের। সেটা নৈতিক নয়, বৈষয়িক। নৈতিকতা বিষয়সম্পত্তির মালিকানা নির্ধারণ করে দিচ্ছে না, উল্টোটাই বরং ঘটছে। নৈতিকতা মার খাওয়ার ভয় পেয়েছে, ভয় পেয়ে চলে গেছে বিষয়সম্পত্তির মালিকানার অধীনে। আগে এটা যে সত্য ছিল না, এমন নয়। হ্যাঁ, সত্য আগেও ছিল। রাজা-বাদশারা পর্যন্ত বাবাকে খুন করেছে, সিংহাসনের লোভে। তবে এখন পুঁজিবাদের বিকাশের সর্বোচ্চ যুগে, ব্যাপারটা আগের তুলনায় অধিকতর সর্বজনীন হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপাদানটি প্রতিযোগিতার মতো বৃদ্ধি পাচ্ছে। অভাব আগেও ছিল, কিন্তু অভাববোধ এমন তীব্র ছিল না। আর ছিল না এমন নির্মম প্রতিযোগিতা।চট্টগ্রাম থেকে রেলে চেপে কক্সবাজারে যাওয়া যাবে—এমন সুখের খবরে কে না উল্লসিত হয়েছেন। মস্ত বড় পরিকল্পনা, মস্ত বড় অর্জন। কিন্তু পাহাড় থেকে পানির ঢল নেমে যে রেললাইনকে বাঁকা করে দিতে পারে, সেই ছোট্ট বিষয়টিকে তো যথোপযুক্ত ভাবনা দিয়ে বিবেচনায় রাখা হয়নি। যে জন্য রেললাইনে বড় একটা বিপর্যয় ঘটে গেছে। নাটবল্টুও অনেক সময় খুব বলবান হয়ে ওঠে, যদিও আকৃতিতে তারা খুবই খাটো।


তবে বড়রা আরও বড় হবে এবং ছোট থাকাই যাদের বিধিলিপি, তারা ওই ছোটই রয়ে যাবে—এটাই তো নিয়ম। গাছেরা তাই বেড়ে ওঠে, ঘাসেরা ঘাসই রয়ে যায়। এটা ঘাসদের জন্য মোটেই কোনো সান্ত্বনা নয় যে ঝড় এলে গাছদের ভয় থাকে উপড়ে পড়ে যাওয়ার। কিন্তু ঘাসেরা বেঁচে যায়, ঝড়-বৃষ্টির পরে বরং সতেজভাবে হেসে ওঠে। সান্ত্বনা নয় এই সরল কারণে যে ঘাসকে ছাগলে খায়, মানুষ পায়ে মাড়ায় এবং রোদে তারা শুকিয়ে মরে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও