You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মিতা জাগ্রত হোক

আজ যখন সংবাদপত্রের পাতায় গাজায় মানবিক ট্র্যাজেডির কথা পড়ি অথবা টেলিভিশনের পর্দায় হিংস্র ইসরাইলি বাহিনীর চরম বর্বরতা, হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসলীলার ছবি দেখি, তখন অশ্রু সংবরণ করতে পারি না। দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধায় গাজার শিশুদের হাড্ডিসার দেহ ও পাণ্ডুর চোখ দেখে সব খাওয়া-দাওয়া বিষাক্ত মনে হয়। বলা হয়, বিংশ ও একবিংশ শতাব্দীতে মানবসভ্যতা চরম শিখরে আরোহণ করেছে; কিন্তু সভ্যতার লেশমাত্রও কোথাও দেখি না, ফিলিস্তিনে তো নয়ই। আমাদের ইতিহাসে ১৯৭১-এ ৯ মাস পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বর্বরতা আমরা লক্ষ করেছি। কিন্তু ফিলিস্তিনে ২০২৩ সাল থেকে যে বর্বরতা চলছে, তা আমাদের জীবনে যে বর্বরতা লক্ষ করেছি, তাকেও হার মানায়। ইসরাইলি বাহিনী গাজায় শুধু হত্যাকাণ্ডই চালাচ্ছে না, তার সঙ্গে ধ্বংস করছে সব ধরনের অবকাঠামো, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বাসস্থান ও মসজিদ। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গত সোমবার পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহত হয়েছে ৬৫ হাজার ৩৪৪ জন, নিহত শিশুর সংখ্যা ২০ হাজার এবং আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭৯৫। নিহত ১ হাজার ৯ জনের বয়স ১ বছরের কম, জন্ম নেওয়ার পরই নিহত হয়েছে ৪৫০ শিশু এবং ক্ষুধায় মারা গেছে ১৩৫ শিশু। খুনি ইসরাইলি বাহিনী গাজায় কোনো খাদ্যবাহী গাড়িরবহর প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। কোনো আন্তর্জাতিক শক্তি গাজায় মানবিক সাহায্য হিসাবে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার তাগিদ অনুভব করছে না। ইসরাইলি বাধাকে অগ্রাহ্য করে কোনো আন্তর্জাতিক শক্তি গাজায় আকাশ থেকে খাদ্য ভূমিতে নিক্ষেপ করছে না। গাজাকে পরিণত করা হয়েছে এক ভয়াবহ মৃত্যুপুরীতে। সেখানে অবস্থান করলে একদিন না একদিন ইসরাইলি বোমাবর্ষণে অথবা গোলাবর্ষণে মৃত্যু অবধারিত বলে সেই নিয়তি হিসাবে মেনে নিতে হবে।

এখন পর্যন্ত ধ্বংস হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৪৭ হজার ১৯৫টি ভবন ও অবকাঠামো। ভেবে দেখুন, রোদ-বৃষ্টি ও শৈত্যপ্রবাহে গাজার লোকগুলোর যারা বেঁচে আছে, তারা কেমন করে বেঁচে থাকছে। মৃত্যুর সঙ্গে যখন মানুষ লড়তে থাকে, তখন তার প্রাণশক্তি অপরিসীম হয়ে দাঁড়ায়। গাজার যারা এখনো ধুঁকছে, তাদের প্রাণশক্তি যে অপরিমেয়, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আমার বিশ্বাস, গাজার নির্যাতিত মানুষের দুঃসহ রাতের অবসান একদিন হবে এবং তাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে, তারা একদিন সভ্যতার সেরা আবাসভূমিটি গড়ে তুলবে। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে গেলেও তারা হয়ে গেছে মৃত্যুঞ্জয়ী। তারা জেনেছে স্বর্গের চেয়েও প্রিয় জন্মভূমি। গাজার প্রায় ৭৫ শতাংশ ভূমি ইসরাইলি সামরিক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফিলিস্তিনকে এ পর্যন্ত ১৫১টি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে। এ রকম দেশের সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। জাতিসংঘের ভোটাভুটিতে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গৃহীত হলেও, মার্কিন ভেটোতে তা নাকচ হয়ে যাচ্ছে। বস্তুত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের কোনো দুর্বৃত্ত দেশের ওপর কোনো রকমের নিষেধাজ্ঞা বা কড়াকড়ি আরোপের ক্ষমতা নেই। বিশ্ব মোড়ল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একের পর এক বিবৃতি দিয়ে, উসকানি দিয়ে খুনি ইসরাইলকে দুর্বিনীত করে তুলছে। বিশ্বে শক্তির ভারসাম্য ধীরে ধীরে পালটাচ্ছে। এ ভারসাম্যা এখনো সর্বোচ্চ পারমাণবিক অস্ত্রধারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে থাকলেও তা ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। মার্কিন মোড়লিপনা আর অনির্দিষ্টকাল ধরে অব্যাহত থাকবে না। চীনকে কেন্দ্র করে চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরীয় অক্ষশক্তি কোমর বেঁধে দাঁড়াতে শুরু করেছে। আমেরিকাকে প্রমাদ গুনতে হবে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় আমেরিকা অনেকটাই নিরাপদ অবস্থানে ছিল। কারণ এ দেশটির দুই পাশে ছিল আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগর। সেসময় এ মহাসাগরগুলো পাড়ি দিয়ে কোনো রাষ্ট্রের পক্ষে তার ওপর হামলা চালানো সম্ভব হয়নি। তাই ২য় মহাযুদ্ধে আমেরিকা ছিল কার্যত ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ কারণে আমেরিকা ছিল প্রায় অক্ষত এবং দেশটি তার সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পদ অক্ষত রাখতে পেরেছিল। আজ পরিস্থিতি ভিন্ন। আমেরিকার প্রতিপক্ষ দেশগুলোর হাতে শব্দের চেয়েও দ্রুতগতিসম্পন্ন আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক মিসাইল রয়েছে। রয়েছে নিউক্লিয়ার ওয়ারহেডও। সুতরাং, আমেরিকাকে ভাবতে হবে ‘এই দিন দিন নয়’। আমরা যুদ্ধ চাই না। শান্তি চাই। সে শান্তি যদি আসে ক্ষমতার ভারসাম্যের মধ্য দিয়ে অথবা মিউচুয়ালি এশিওরড্ ডিসট্রাকশনের কারণে, তাহলেও সে শান্তি কাম্য।

ফিলিস্তিনিদের কপালে দুর্যোগের লিখন লেখা হয়েছিল ১৯১৭ সালে বেলফু’র ডিক্লারেশনের মাধ্যমে। বেলফু-এর ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘His majesty's Government view with favour the establishment in Palestine of a national home for the Jewish people, and will use their best endeavours to facilitate the achievement of this object, it being clearly understood that nothing shall be done which may prejudice the civil and religious rights of existing non Jewish communities in Palestine or the rights and political status enjoyed by Jews in any other country.

I should be grateful if you would bring this declaration to the knowledge of the Zionist federation.’

বেলফু’র ঘোষণার ৩০ বছর পর ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘে ৫৫ শতাংশ ভূমি ইহুদিদের ও ৪৫ শতাংশ আরবদের দিয়ে দুটি রাষ্ট্র গঠনের একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছিল। সেই থেকে ফিলিস্তিনিদের জাতীয় ট্র্যাজেডির সূচনা। সশস্ত্র ইহুদিরা বলপূর্বক ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে। ফিলিস্তিনিরা আবাসভূমি হারিয়ে ফেলে। সেই থেকে ফিলিস্তিনি শিশুদের প্রথম পাঠ ছিল পাখিদেরও নীড় আছে, আমাদের কোনো নীড় নেই। সেই থেকে সূচিত হয়েছিল ফিলিস্তিনিদের অব্যাহত লড়াই-সংগ্রাম। তারা বিভিন্ন আরব দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। জর্ডানে ফিলিস্তিনিরা তাঁবু গেড়ে শিবিরে বাস করত। তাদের বর্ধিত সমরশক্তি জর্ডানের বাদশাকে আতঙ্কিত করে তোলে। জর্ডানের বাদশাহ-এর নির্দেশে ফিলিস্তিনি শিবিরগুলোতে সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। শত শত ফিলিস্তিনিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এটা হলো, মধ্যপ্রাচ্যের রাজা-বাদশাহদের ফিলিস্তিনিদের প্রতি আচরণের এক জঘন্য দৃষ্টান্ত। আজ গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দায়ী করার কোনো বিকল্প আছে কি? মিসরের স্বৈরশাসক সিসি আল ফাত্তাহ থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য রাজা-বাদশাহরা মার্কিনিদের অঙ্গুলি হেলনে ওঠবস করছে বলেই, আজ গাজাবাসীর জীবনে নেমে এসেছে কেয়ামতের আগে আরেক কেয়ামত। এরা বোধহয় ফেরাউন-নমরুদের বংশধর।

আমাদের প্রজন্ম, গত শতাব্দীর ষাটের দশক দেখেছে। ষাটের দশক ছিল দুনিয়াব্যাপী মুক্তি-সংগ্রামে উত্তাল দশক। ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া, ওমান, ইয়েমেন, আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, মোজাম্বিক, কঙ্গো, কিউবা, গুয়েতেমালাসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই চলছিল সশস্ত্র মুক্তি-সংগ্রাম। ফিলিস্তিনিরাও এ মুক্তি-সংগ্রামে বাস্তুচ্যুত অবস্থায় মুক্তি-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিল আল ফাতাহ, পপুলার ফ্রন্ট ফর লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন এবং পপুলার ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ফর দি লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন প্রভৃতি সংগঠনের নেতৃত্বে। লায়লা খালেদ ছিলেন পপুলার ফ্রন্ট ফর লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের অমিত তেজি এক সদস্য। তিনি ১৯৬৯ সালের ২৯ আগস্ট একটি টিমের সদস্য হিসাবে টি ডব্লিউ ফ্লাইট ৮৪০ রোম থেকে তেল আবিবে যাওয়ার পথে হাইজ্যাক করেন এবং এ বোয়িং ৭০৭ বিমানটি দামেস্কে নিয়ে যান। কিছু মিডিয়া থেকে জানা যায়, পপুলার ফ্রন্টের নেতৃত্ব ভেবেছিলেন আইজাক রবিন, যিনি ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত, তিনি এ বিমানে যাত্রী ছিলেন। কিন্তু আসলে তিনি ওই বিমানে ছিলেন না। লায়লা খালেদ পাইলটকে হুকুম করেছিলেন, বিমানটিকে যেন তার জন্মস্থান হাইফার ওপর দিয়ে চালিয়ে নেন, যাতে তিনি তার জন্মস্থান দেখতে পান। কোনো যাত্রীকে আহত করা হয়নি এবং তাদের নিরাপদে বিমান থেকে নেমে যেতে দেওয়া হয়। তারপর হাইজ্যাকাররা বিমানটির সামনের অংশ উড়িয়ে দেয়। সে সময় লায়লা খালেদ হয়ে উঠেছিলেন আমাদের মতো তরুণ-তরুণীদের জপমন্ত্র। সেদিন স্লোগানে স্লোগানে লায়লা খালেদের নাম উচ্চারিত হতো। লায়লা খালেদ বিমানটি হাইজ্যাক করে ফিলিস্তিনের মুক্তি-সংগ্রামের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলেন। লায়লা খালেদ সেদিন সফল হয়েছিলেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন