কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আমরা কি চার্বাক দর্শন অনুসরণ করছি?

যুগান্তর ড. আর এম দেবনাথ প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৩৩

সঞ্চয়পত্রের নাম কেউ শুনতে পারে না। অর্থ মন্ত্রণালয় পারে না। উগ্র বাজারপন্থি অর্থনীতিবিদরা পারে না। ব্যাংকাররাও শুনতে পারে না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তো বটেই। এরা সবাই সঞ্চয়পত্রের বিরুদ্ধে বহুকাল ধরে। এক্ষেত্রে তাদের ভিন্ন ভিন্ন কারণ রয়েছে। সে ভিন্ন প্রসঙ্গ। তবে তাদের অপছন্দের ফল আমরা এখন পাচ্ছি। ‘সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ধারাবাহিক কমছে’-এ খবর এখন কাগজে আসছে। একটি খবরে দেখলাম, গত সেপ্টেম্বর মাসে ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। বিপরীতে পুরোনো সঞ্চয়পত্র ভাঙানো হয়েছে ৬ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকার। অর্থাৎ যে টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে, তার চেয়ে বেশি ভাঙানো হয়েছে। এ পরিসংখ্যানের মানে কী? মানে হচ্ছে, মানুষ সঞ্চয়পত্র কিনছে না আগের মতো।


সঞ্চয়পত্র একসময় ছিল সঞ্চয়ের একটি আকর্ষণীয় মাধ্যম। মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সঞ্চয়কারীরা আগে এতে টাকা বিনিয়োগ করত কয়েকটি কারণে। এটা সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ। সরকারকে টাকা ধার দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এটা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ হওয়ায় এতে মুনাফা একটু বেশি তুলনামূলকভাবে। কিন্তু আজ আর এ অবস্থা নেই। এর বিক্রিকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। নানারকম শর্ত আরোপ করা হচ্ছে। সুদের হার কমানো হয়েছে। উৎসে কর বসানো হয়েছে। বিক্রির সর্বোচ্চ সীমা হ্রাস করা হয়েছে। ‘সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প’ হিসাবে স্বীকৃত হওয়া সত্ত্বেও এর ওপর ‘ইনকাম ট্যাক্স’ আরোপ করা হয়েছে। সঞ্চয়পত্র কিনতে হলে এখন আবার ‘ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার’ (টিআইএন) লাগছে। শর্তের বেড়াজালে আবদ্ধ বেচারা সঞ্চয়পত্র। ফলে মানুষ এখন আর সঞ্চয়পত্রের দিকে যেতে চায় না। বিনিয়োগ করতে গিয়ে এত ‘ঝামেলা’-দরকার কী? এতে পরিষ্কার হয়ে উঠেছে যে, দীর্ঘদিনের জনপ্রিয় এ সঞ্চয়মাধ্যম ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে। কারণ সরকার এটাই চায় বলে প্রতীয়মান।


ঠিক আছে, সঞ্চয়পত্র নেই তো কী হয়েছে? টাকা বিনিয়োগ করার মতো আরও মাধ্যম রয়েছে। জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হচ্ছে ব্যাংক আমানত। সুদ পাওয়া যাক আর না যাক, নিরাপদ হোক আর না হোক, আমানতের টাকা ‘লুটেরারা’ লুট করে নিক আর না নিক-টাকা রাখা যেতে পারে ব্যাংকে। রাখা যেতে পারে জমিতে। স্বর্ণ কেনা যায়, ডলার কেনা যায়। বেশ অনেক মাধ্যম আছে। সঞ্চয়ের টাকা থাকলে তা রাখার জায়গা একটা না একটা হবেই। সবচেয়ে বড় কথা, এখন ‘সঞ্চয়’ নিজেই প্রশ্নের সম্মুখীন। কী দরকার সঞ্চয়ের? সঞ্চয় না করে বরং ভোগ করো। খরচ করো। বাজারে (মার্কেট) যাও। উদারভাবে কেনাকাটা করো। ভালো ভালো রেস্টুরেন্টে খেতে যাও। দামি দামি হোটেল-মোটেলে দু-একটা রাত কাটাতে ঢাকার বাইরে যাও, পারলে বিদেশ যাও-অন্তত ভারত, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ইত্যাদি দেশে। ঘুরে বেড়াও। দেখো, ভোগ করো। সঞ্চয় দিয়ে কী হবে? দুদিনের সংসার। কিছুই রবে না-এ দুনিয়া হবে ছারখার। অতএব, ভোগ করো, নতুন নতুন জিনিস ক্রয় করো। বর্তমান উগ্র বাজার অর্থনীতির কথা এটাই। এর উদ্দেশ্য মানুষকে ভোক্তা বানানো, ভোগী বানানো। ত্যাগী নয়, জ্ঞানী নয়। এখন ত্যাগী, জ্ঞানীর কোনো মূল্য নেই। সর্বত্রই প্রাধান্য ব্যবসার, বিনিয়োগের, জিডিপির, মাথাপিছু আয়ের। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের সফরসঙ্গী হন ব্যবসায়ীরা, বিনিয়োগকারীরা। কবি-সাহিত্যিকের সেখানে জায়গা নেই। এটাই ভোগবাদী সমাজের কথা। কোম্পানি ভালো বেতন দিচ্ছে, গাড়ির ব্যবস্থা আছে, একটি ফ্লাটের ব্যবস্থাও আছে; অতএব, বেতন পাওয়ার পর চলে যাও হোটেল-মোটেলে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও