হলিউড চড়কাণ্ডে আমরা কী পেলাম
জীবনঘনিষ্ঠ চলচ্চিত্রের সঙ্গে বাস্তব জীবনের পার্থক্য সামান্য, তবে মাঝে মাঝে বাস্তব জীবনের কিছু ঘটনা চলচ্চিত্রের গল্পকেও হার মানায়।
বাংলা সিনেমায় একটি জনপ্রিয় সংলাপ আছে। তা হলো, ‘আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না’। কথাটি সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
সচরাচর সিনেমার অন্তিম দৃশ্যে নায়ক যখন ভিলেনকে পরাজিত করেন এবং প্রতিহিংসাবশত ভিলেনের প্রাণনাশে উদ্যত হন, ঠিক সেই মুহূর্তে একজন সৎ পুলিশ অফিসারের উদয় ঘটে পর্দায়। বহুল চর্চিত সংলাপটি শোনার পর নায়ক তখন একবুক কষ্ট ও হতাশা নিয়ে ভিলেনকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে বাধ্য হন।
দর্শকদের সারি থেকে কেউ কেউ তখন করতালি দেন, কেউ আবার আফসোস করেন। ভিলেন মারা গেলেই যেন দর্শকদের আনন্দ হয় বেশি।
এর সামাজিক ব্যাখ্যাটি অতি সহজ।
কারণ বাস্তব সমাজে যখন আইনের যথার্থ প্রয়োগ দেখা যায় না, তখন সাধারণ দর্শক অন্তত পর্দায় দেখতে চান ভিলেনের নির্মম মৃত্যু। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ভিলেনের সার্থক মৃত্যু দৃশ্যায়নে দর্শকদের মানসিক তৃপ্তি দিতে পরিচালক সচেষ্ট থাকেন।
একইভাবে সিনেমা পর্দার বাইরে বাস্তব জগতে যেকোনো ধরনের ‘সহিংস ঘটনা’ যখন দেখি তখন বিষয়ের পক্ষে-বিপক্ষে আমাদের যুক্তি-প্রতিযুক্তি দেওয়ার প্রবণতা অতি সাধারণ। প্রতিটি ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাখ্যা নিজ নিজ ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে দিতে পছন্দ করি।
যেমন গত ২৭ মার্চ হলিউডের ডলবি থিয়েটারে অস্কার পুরস্কার বিতরণের অনুষ্ঠানে ঘটে যাওয়া ‘চড়কাণ্ডে’ বিশ্বজনমতের পাশাপাশি আমাদের দেশের শিক্ষিত এক অংশ যাঁরা হলিউড অঙ্গনের খোঁজখবর রাখেন তাঁদের মধ্যেও এমনতর মতপার্থক্য উচ্চকিত হতে দেখা গেছে।
সেই ঘটনায় পক্ষ-বিপক্ষ অবলম্বনের সঙ্গে উন্মোচিত হয়েছে আমাদের মানসিক কাঠামো।
- ট্যাগ:
- মতামত
- চড়
- হলিউড ও অস্কার