নারীকে গণধর্ষণের হুমকি: বিশ্ববিদ্যালয় কি সহিংসতার প্রশিক্ষণশালা

ডেইলি স্টার আরাফাত রহমান প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:২৪

ডাকসু নির্বাচন ফিরেছে। ফিরেছে জাকসু, রাকসু। সঙ্গে ফিরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির উত্তাপ, মতবিনিময়ের সুযোগ, নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা। কিন্তু এই প্রত্যাবর্তনের সবচেয়ে ভয়াবহ বার্তাটি হলো, নারী নেতৃত্ব মানেই এখন হুমকি, অপমান ও ধর্ষণের ভয়।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী প্রার্থী, যিনি আদালতে রিট করেছিলেন, তাকে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।


সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক শিক্ষার্থী লিখেছে, 'আগে একে গণধর্ষণের পদযাত্রা করা উচিত।' এটা নিছক কোনো 'রাগান্বিত মন্তব্য' নয়, এটা স্পষ্টত অপরাধ।


এটা নারীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সহিংসতার প্রকাশ্য ঘোষণা। এটি নেতৃত্বের প্রতিযোগিতাকে রূপান্তরিত করেছে নারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণায়।


ঘটনার দুই দিন পর তীব্র বিক্ষোভের মুখে গতকাল অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীকে মাত্র ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্যদিকে বরাবরের মতোই রাজনৈতিক সংগঠনগুলো দায় এড়িয়ে বলেছে, "সে আমাদের কেউ নয়।" অথচ হুমকির ভাষা, প্রেক্ষাপট এবং উদ্দেশ্য, সবই রাজনৈতিক।


এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি একটি ধারাবাহিক কৌশলের অংশ, যেখানে নারী নেতৃত্বকে পরিকল্পিতভাবে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে।


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসু নির্বাচন ঘিরে নারী ও আদিবাসী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে চালানো হয়েছে সাইবারবুলিং, চরিত্রহনন এবং অপপ্রচার। বিকৃত ছবি, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, মিথ্যা তথ্য—সব ছড়ানো হয়েছে সংগঠিতভাবে। উদ্দেশ্য একটাই, তাদের মনোনয়ন ঠেকানো, প্রচারণা থামানো, নেতৃত্বের পথ বন্ধ করা।


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু নির্বাচনেও একই চিত্র। ছাত্রদলের নারী নেত্রীদের বিরুদ্ধে উঠেছে সাইবারবুলিং, 'ভিকটিম শেমিং' এবং সরাসরি শারীরিক হেনস্তার অভিযোগ। শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির সময় তাদের নিয়ে কটূ মন্তব্য, ধাক্কাধাক্কি, অপমান, সবই চালানো হয়েছে। প্রশাসন তখনও নিশ্চুপ থেকেছে।


নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম হলের ছাত্রদলের সহসভাপতি মিলন খানকে আজ দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে ছাত্রদল। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এখনো কোনো সাড়া নেই।


তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়, তিনটি নির্বাচন। বার্তা একটাই: নারী নেতৃত্ব থামাতে ধর্ষণের হুমকি, ডিজিটাল অপমান এবং শারীরিক নিপীড়ন এখন রাজনৈতিক কৌশলে পরিণত হয়েছে।


বিশ্ববিদ্যালয়, যা একসময় জ্ঞানচর্চার জায়গা ছিল, আজ সহিংসতার প্রশিক্ষণশালায় রূপ নিচ্ছে।


ডিজিটাল পরিসর এই সহিংসতাকে আরও হিংস্র করেছে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, সবখানেই নারী প্রার্থীদের ভিডিও কেটে, বিকৃত করে এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যেন তারা "অযোগ্য", "অশালীন" বা "অনৈতিক।"


তাদের পোশাক, ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ছড়ানো হচ্ছে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য। "এই পোশাকে কেউ নেতা হতে পারে?", "যে নিজেকে ঢাকতে জানে না, সে কীভাবে নেতৃত্ব দেবে?"—এসব প্রশ্ন নয়, এগুলো সাংগঠনিক সন্ত্রাস।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও