ট্রাম্পের শাসনকাল নিয়ে কতটুকু আশাবাদী হওয়া যায়

কালের কণ্ঠ গাজীউল হাসান খান প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:০৩

যে বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একজন কট্টর সাম্রাজ্যবাদী, সে অর্থে ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প নন। যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের এক নম্বর পরাশক্তির অবস্থানে ধরে রাখতে বাইডেন যেভাবে তাঁর সামরিক ও আধিপত্যবাদী কৌশল প্রয়োগ করেছেন, সেখানে ট্রাম্প তাঁর দেশের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে বিশ্ববাণিজ্য ও অর্থনীতির মারপ্যাঁচকে সব সময়ই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। রিপাবলিকান দলীয় হলেও ট্রাম্প দৃশ্যত যুদ্ধবাজ নন। বাইডেন দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পেলে ডেমোক্রেটিক দলীয় হয়েও মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে একটি বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতেন।


এ ধারণা ওয়াশিংটন ডিসির তথ্যাভিজ্ঞমহলের। তাদের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হচ্ছে, ডেমোক্র্যাটরা রাজনৈতিক মূল্যবোধগতভাবে অধিকতর সহনশীল হলেও পরাশক্তিগত দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠতে বাধ্য। কারণ পূর্ব দিগন্তে চীনের অপ্রতিরোধ্য উত্থান ঠেকানো এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্রমে ক্রমে শক্তিশালীভাবে মাথা তুলে দাঁড়ানোকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাধর রাজনীতিকরা একটি অশনিসংকেত বলে মনে করেন। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্টের তুলনায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন।


ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত শ্রেষ্ঠত্ব কিংবা আধিপত্য বজায় রাখার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ করার পরিবর্তে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কৌশল প্রয়োগ করে অন্যদের দুর্বল অবস্থানে ঠেলে দিতে বেশি আগ্রহী। এতে তাঁর কৌশলগত মিত্র, এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ট্রাম্প নীতিগতভাবে পিছু হটবেন না। কারণ ওপরে উল্লেখিত তথ্যাভিজ্ঞমহলের মতে, ট্রাম্প একজন কট্টর পুঁজিবাদী ব্যবসায়ী। তিনি রাজনীতি কিংবা কূটনীতির চেয়েও তাঁর ব্যাবসায়িক স্বার্থকে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। কারণ তিনি মনে করেন, একটি শক্তিশালী অর্থনীতিই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি, উন্নয়ন বা সমৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে, যুদ্ধবিগ্রহ কিংবা সংঘাত-সংঘর্ষ নয়।



যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম টার্মের পর ক্ষমতা হারিয়ে ফেললেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো মানসিক পরিবর্তন হয়েছে বলে অনেকে মনে করে না। তাঁর বাহ্যিক আচার-আচরণ একজন ভাবগম্ভীর সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির মতো না হলেও তাঁর কাছে প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ। তাঁর কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান হচ্ছে বিশ্বের সর্বাগ্রে। মুখে স্বীকার না করলেও তিনি ‘শ্বেতাঙ্গদের শ্রেষ্ঠত্ববাদে’ বিশ্বাস করেন।


সে অর্থে অনেকের কাছে তিনি একজন সাম্প্রদায়িক ও বর্ণবাদী ব্যক্তিত্ব। তিনি কোনো প্রথাগত রাজনীতি কিংবা প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা নিয়ে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্ষমতার বলয়ে প্রবেশ করেননি। তবে প্রথাগত সব কিছুকে অগ্রাহ্য করার তাঁর রয়েছে এক দারুণ স্পর্ধা। অনৈতিকভাবে হলেও তাঁর কাছে অর্থবিত্ত কিংবা অর্থনৈতিকভাবে শক্তি-সামর্থ্য অর্জনই হচ্ছে সবচেয়ে বড় রাজনীতি বা কূটনীতি। জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রকৌশল-প্রযুক্তি কিংবা সামরিক ও বেসামরিক—সব ক্ষেত্রেই তাঁর কাছে অগ্রাধিকার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক পুঁজিবাদী অর্থনীতির। সে ক্ষেত্রেও বিশ্বব্যবস্থাকে অগ্রাহ্য করে তিনি অপকৌশলের আশ্রয় নিতে দ্বিধা বোধ করেন না। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিতভাবে করারোপ কিংবা উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করে নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করতে দ্বিতীয়বারের মতো এবারও তিনি যে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী এক চরম অস্থিরতা সৃষ্টি করবেন না, তার ন্যূনতম কোনো নিশ্চয়তা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে চীন, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশ এবং এমনকি ভারত ও অন্যদের ওপর বর্ধিত করারোপ কিংবা বিধি-নিষেধ জারির হুমকি দিতে শুরু করেছেন। এতে ক্রমেই এখন অস্থির হয়ে উঠতে শুরু করেছে বিশ্বের বিভিন্ন বাজারব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে একটি বিশাল বাজার, যাকে অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা কারো নেই। তার পরও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক দক্ষিণ বা ভিন্ন অর্থে নবগঠিত ব্রিকসের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে ট্রাম্পের শাসনকালে বিশ্ববাণিজ্যের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও