স্কুলশিক্ষার্থীদের পরিবহন সমস্যার সমাধান কীভাবে

প্রথম আলো তারিক মনজুর প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:১২

সরু তিনটি চাকা। তার ওপর খাঁচার মতো একটি কাঠামো। নাম দেওয়া হয়েছে স্কুলভ্যান। একেকটি ভ্যানে চড়ে স্কুলে যায় ছয় থেকে আটটি শিশু। ভ্যানগুলোর নিবন্ধন নেই, চালকের প্রশিক্ষণ নেই। ছবির নিচে এ রকম ক্যাপশন দিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। প্রতিবেদনটি স্কুলে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীদের পরিবহন–সংকটকে প্রকট করে তুলেছে।


রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের একটি হিসাব সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, দেশে গত সাড়ে পাঁচ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৫ হাজার ৩৮৪ জন নিহত হয়েছেন, যার ১৩ শতাংশই শিক্ষার্থী। সংখ্যায় তারা ৪ হাজার ৬২৮ জন। এর মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসার পথে যানবাহনের চাপায় বা ধাক্কায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে এটি নতুন করে ভাবার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে, স্কুলে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীদের পরিবহন সমস্যার ভালো সমাধান কী হতে পারে।

স্কুলে সন্তানকে আনা-নেওয়ার জন্য অভিভাবকেরা সাধারণত স্কুলভ্যান, রিকশা, মোটরসাইকেল, গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে থাকেন। প্রায় ক্ষেত্রেই এসব পরিবহন একদিকে যেমন নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি করে, অন্যদিকে রাস্তায় যানজট বাড়ায়। অধিকাংশ স্কুলের শিক্ষার্থী-পরিবহনে বাস না থাকায় অভিভাবকেরা একরকম বাধ্য হয়েই বিকল্প মাধ্যমে যাতায়াত করছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের আর্থিক সংগতির ব্যাপারটিও মাথায় রাখতে হয়।



যেসব অভিভাবকের আর্থিক সক্ষমতা আছে, তাঁরা সন্তানের স্কুলে যাওয়া-আসার জন্য ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবস্থা করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, একটি গাড়িতে সাধারণত একজন শিক্ষার্থীই যাতায়াত করে। এসব গাড়ির কারণে ক্লাস শুরু ও স্কুল ছুটির সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে যানজট তৈরি হয়। আবার যাতায়াতে ব্যবহৃত রিকশা ও ভ্যানও স্কুলগেটে যানজট তৈরি করে। যেসব স্কুলে দুই শিফটে ক্লাস হয়, সেসব স্কুলের সামনে ও আশপাশের রাস্তায় কয়েক দফায় যানজটের ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। এমনকি ওই স্কুলের শিক্ষার্থী-অভিভাবকেরাও এর ভুক্তভোগী হন।


নিরাপদ পরিবহনব্যবস্থা শিক্ষার্থীর মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। ঝুঁকি ও যানজট কমানোর উপায় হিসেবে অনেকেই স্কুলবাসের কথা বলেন। স্কুল থেকে মাইক্রোবাস বা মিনিবাসের ব্যবস্থা করা গেলে অবশ্যই সমস্যা কমবে। এতে অভিভাবকদের পরিবহন ব্যয়ও কমতে পারে। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সন্তানকে স্কুলে আনা-নেওয়ার জন্য অভিভাবককে কয়েকবার বাড়ি ও স্কুলের পথে যাওয়া-আসা করতে হয়। তা ছাড়া মা-বাবা উভয়েই চাকরিজীবী হলে এ কাজে বেতন দিয়ে লোক রাখতেও দেখা যায়।


প্রতিটি স্কুলের উচিত আবশ্যিকভাবে স্কুলবাসের ব্যবস্থা করা। স্কুলগুলো এই দায়িত্ব সরাসরি নিতে না চাইলে প্রয়োজনে দরপত্র আহ্বান করে কিংবা চুক্তি ভিত্তিতে কোনো এজেন্সি বা পরিবহন সার্ভিসকে এ দায়িত্ব দিতে পারে। শিক্ষার্থীদের অনিরাপদ করে ভ্যানে বা মোটরসাইকেলে যাতায়াতের সুযোগ রাখা যাবে না। ভ্যানের গায়ে স্কুলের নাম লেখা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভ্যানের মালিক বা চালকদের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা থাকে না। আবার মোটরসাইকেলে সকালবেলা যেসব শিক্ষার্থীকে বহন করা হয়, তাদের অনেককেই পেছনে বসে ঘুমাতে বা ঝিমাতে দেখা যায়!
স্কুলের সামনের যানজটের জন্য আমাদের মানসিকতাও দায়ী। প্রত্যেক অভিভাবকই তাঁর সন্তানকে নিয়ে ঠিক স্কুলগেটেই নামতে চান। সামান্য পথও হাঁটতে চান না। রিকশা বা গাড়ি, যে মাধ্যমেই যাতায়াত করা হোক না কেন, স্কুল থেকে খানিকটা দূরে নেমে পড়লে স্কুলগেটের যানজট কমানো সম্ভব। আবার দেখা যায়, যেসব ব্যক্তিগত গাড়ি শিক্ষার্থীদের পরিবহনে ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর কোনো কোনোটি স্কুল ছুটি পর্যন্ত আশপাশের রাস্তায় অপেক্ষা করে। এভাবেও যানজট বাড়ে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও