কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

You have reached your daily news limit

Please log in to continue


নন্দিত নরকে আগুনের হাসি

আমরাই তো ছিলাম তখন বেইলি রোডে। শহুরে জীবনের সব পথ থেকে আসা মানুষেরা। ক্যান্সারবিজয়ী সাংবাদিকও হেরে গেলেন আগুনের কাছে। ইতালিফেরত বাবা স্ত্রী ও তিন সন্তানকে স্থায়ীভাবে নিতে এসেছেন, ভিসা হয়েছে সবারই, যাওয়ার আগে খেতে এসেছিলেন– সব শেষ। সিরাজগঞ্জ থেকে এসএসসি পাস করে ঢাকায় এসেছিল ছেলেটি, রেস্টুরেন্টে কাজ করে টাকা জমিয়ে ইতালি যাবে– তার মৃত্যুর খবরে গ্রাম্য পিতার অবস্থা সংকটজনক। বন্ধুদের সাথে খেতে গিয়েছিলেন বুয়েটিয়ান মেয়েটি, ২০১৮ সালে মা হারিয়েছেন, পুলিশের ডিআইজি বাবা তখন থেকে দুই মেয়েকে নিজে মানুষ করছেন, সেই দুই বোনের একজন মৃত। মিন্টো রোড থেকে রাস্তা পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিলেন ভিকারুননিসা নূন স্কুলের শিক্ষিকা– মৃত। দুই সাংবাদিক কত কঠিন বাস্তবতায় কাজ করেছেন; কিন্তু বেইলি রোডের আগুন থেকে আর ফেরেননি। কিংবা মর্গে পড়ে থাকা টুকটুকে মেয়েটি-সুন্দর জুতাজোড়া দেখা যায় শুধু, আর কিছু দেখাও যায় না, সহাও যায় না। অনেক দিন পর দেশে ফিরেছেন প্রবাসী নেতা। বন্ধুরা ধরেছিলেন, ‘কফি খাওয়া দোস্ত।’ আরেকজনের এক দিন পরই বিদেশ যাওয়ার ফ্লাইট…। লিপইয়ারে যাদের জন্ম, এমন অনেকেও ছিলেন বিভিন্ন তলায়-জন্মদিনটাই তাদের কারও কারও মৃত্যুদিন হলো। 

‘পাঠাও’ রাইডাররাও ছিলেন এই দলে, খাবারের পার্সেল নিতে। ছিলেন বাবুর্চি, বয়, কর্মী। ছিলেন শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, আইনজীবী, ছিলেন সাংবাদিক, ছিলেন মেধাবী ও পিছিয়ে পড়া, ছিলেন শিশুরা ও তাদের মাতাপিতা, ছিলেন ব্যবসায়ী, ছিলেন চাকরিজীবী-আমাদের সকল পেশার সকল শ্রেণির মানুষ যে ভবনটায় পুড়ে গেলেন, সেই পোড়া কঙ্কালসম ভবনটাই যেন বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশ কি বনপোড়া হরিণীর মতো আর্তনাদ করছে? শোনা যায় না। শুধু শুনেছি ফায়ার সার্ভিসের সাইরেন, অ্যাম্বুলেন্সের চিৎকার। লাশবাহী গাড়ির হিমশীতলতা চেপে বসছে শুধু। বাংলাদেশ কি এখন দোজখের নিকটতম প্রতিবেশী? নইলে এত আগুন কেন? কোনো আগুনই নিরীহ না। বাণিজ্যিক আগুন, রাজনৈতিক আগুন, নাশকতার আগুন, লোভের আগুন, পাপের আগুন, হিংসার আগুন, দুর্ঘটনার আগুন– সব আগুনেই আমরা পুড়ছি। আর যে পুড়ব না, তার গ্যারান্টি দিতে পারবে না রাষ্ট্র বা সরকার, যারা নাকি জীবন-মৃত্যুর ম্যানেজার। তাদের টালি খাতায় এক রাতেই যোগ হলো ৪৬টি নাম।

বলা হয়, আগুন ক্ষুধার্ত। কিন্তু বাংলাদেশে আমরা আগুনকে মুক্তি দিয়েছি ক্ষুধা থেকে। নিয়মিতভাবে বঙ্গীয় আদম সন্তানেরা আগুনের খাদ্য হয়, জ্বালানির মতো পুড়ে যায়। বলা হয়, মাছের মার পুত্রশোক নাই। মাছ একবারে হাজারে হাজারে বিয়ায়। তার কোনটি বাঁচল আর কোনটি মরল সে হিসাব রাখার সুযোগ তার নাই। দেশের যদি কোনো জননী থেকে থাকে, তার অবস্থাও সম্ভবত মাছের মার মতো। পৃথিবীর অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশের এই মানবপুঞ্জের কিছু কিছু মরলে কার কী ক্ষতি! কান্না রপ্তানি করে ডলার তো আনা যায় না। 

হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় নাশকতায় নিহত হয়েছিলেন বিদেশিসহ ২০ জন। তার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কত আয়োজন, কত সতর্কতা তারপরে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু লাগাতার আগুনে পুড়ে অজস্র আদম সন্তানের বীভৎস মৃত্যু ঘটছে, সেই মৃত্যুর কোনো দাম নাই? যেহেতু আগুন অবাধ ও নিরপেক্ষ, তাই তা সুষ্ঠুভাবে পোড়াতে পারছে। পোড়াতে পারছে ট্রেন-বাস, পোড়াতে পারছে বস্তি ও বাজার, পোড়াতে পারছে অ্যাপার্টমেন্ট ও রেস্তোরাঁ। যেহেতু বাধা নাই, যেহেতু আগুন নেভানোর ব্যবস্থা থাকে না অধিকাংশ ভবনে, যেহেতু বিস্ফোরক ও দাহ্যবস্তুর গুদাম থাকতে পারে লোকালয়ে, যেহেতু গাড়ি ও বাড়িতে বোমাস্বরূপ গ্যাস সিলিন্ডার কোলে নিয়েই আমাদের বসবাস ও যাতায়াত চলছেই চলবে, সেহেতু কারও কোনো দায় নাই। না ভুক্তভোগী, না কর্তৃপক্ষ, কারও কোনো বিকার নাই। ঘটনা ঘটলে ওপর মহল বলবে, ‘কর্তৃপক্ষ দায়ী নহে।’ ‘আপন প্রাণ বাঁচা’ নেটিজেনরা ফেসবুকে ‘সেইফ’ স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের খবর জানাবে শুধু, কোথায় কে মরল তা থামাতে সোচ্চার হবে না। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন