বিজেপির ‘কংগ্রেসায়ন’ ও ইন্দিরার পথে মোদি
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি এই মুহূর্তে যে অবস্থায়, তা পর্যালোচনা করে বলা যায়, বিজেপির ‘কংগ্রেসায়ন’ চূড়ান্ত করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাশাপাশি বিপন্ন কংগ্রেসকে যুক্তরাষ্ট্রীয় ধাঁচে গড়ে তোলার পথে হাঁটতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলীয় ভূমিকার এ এক অদ্ভুত অদলবদল বা ‘রোল রিভার্সাল’। এতে কার লাভ, কারই–বা কতটা ক্ষতি, বোঝা যাবে ডিসেম্বরের গোড়ায় ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হলে।
নভেম্বরে ভোট হচ্ছে চার বড় রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা ও ছত্তিশগড়ে। পঞ্চম রাজ্যটি মিজোরাম। মেইনল্যান্ড ইন্ডিয়ার বাইরে হলেও ‘মণিপুরি পরিস্থিতি’ বিচারে রাজনৈতিক দিক থেকে এই রাজ্যের ভোট এবার যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এই প্রথম রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে বিজেপি তাদের স্বীকৃত নেতাদের ওপর ‘ভরসা’ না রেখে নির্বাচনে যাচ্ছে। মোদি-মাহাত্ম্য তাদের একমাত্র বল-ভরসা। সেটা বিরাট ঝুঁকি হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন উঠে গেছে। ফাটকায় জিতলে নরেন্দ্র মোদির পাল্লা আরও ভারী হবে। তাঁর ক্ষমতা নিয়ে যে মিথ তৈরি হয়েছে, তা আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠবে। প্রমাণিত হবে, মোদিই বিজেপি। এক থেকে এক শ তিনিই। তিনিই প্রথম, তিনিই শেষ, তাঁর ইচ্ছাই সব।
কিন্তু হারলে দল তো বটেই, প্রধানমন্ত্রী নিজেও নিজেকে দাঁড় করাবেন প্রবল চ্যালেঞ্জের মুখে। প্রশ্ন উঠবে বিজেপির ‘কংগ্রেসায়ন’–এর যৌক্তিকতা নিয়ে। তার মাশুল আগামী বছর লোকসভা ভোটে তাঁকে দিতে হবে কি না, শুরু হবে সেই জল্পনা।
উল্টো দিকে কংগ্রেস পুরোপুরি নির্ভরশীল স্থানীয় নেতৃত্বের ওপর। রাজস্থানে অশোক গেহলট-শচীন পাইলট, মধ্যপ্রদেশে কমলনাথ-দিগ্বিজয় সিং জুটি ও ছত্তিশগড়ে ভূপেশ বাঘেলকে সামনে রেখে তারা ময়দানে নেমেছে। কর্ণাটকে এই নীতিই সাফল্য দিয়েছে। অন্যত্রও এটাই ভরসা। রাহুল-প্রিয়াঙ্কা প্রচারে যাচ্ছেন ঠিকই। সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও সক্রিয়। কিন্তু অতীতের মতো দিল্লি ছড়ি ঘোরাচ্ছে না; রাজ্য নেতাদের প্রাধান্য দিচ্ছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বিধানসভার নির্বাচন