বাংলা প্রবাদে অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট হইবার যেই কথা বলা হইয়াছে; আমাদের সাম্প্রতিক বাজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় যেন উহার সার্থক রূপায়ণ ঘটিয়াছে।
রবিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনসূত্রে জানা যাইতেছে, অন্তত ১৪টি সংস্থা রহিয়াছে বাজার তদারকির জন্য। কিন্তু জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্যতীত অন্যদের তৎপরতা দৃষ্টিগোচর হইতেছে না।
সর্বশেষ কয়েকটি নিত্যপণ্যের খুচরা মূল্য বাঁধিয়া দিয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বলিয়াছিলেন, উহা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরগুলি মাঠে থাকিবে। তিনি তথায় কৃষি ও প্রাণিসম্পদ-সংশ্লিষ্ট আরও দুইটি অধিদপ্তরের নাম উল্লেখ করিলেও বাস্তবে বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরই তদারকির ব্যর্থ চেষ্টা করিয়া যাইতেছে। আর বাঁধিয়া দেওয়া দর কার্যকর না হইবার কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস অব্যাহত রহিয়াছে।
এইভাবে আর যাহাই হউক, বাজার তদারকি সম্ভব হইবে না; নিয়ন্ত্রণ তো পরের প্রশ্ন। সমগ্র দেশের কথা দূরে থাকুক, খোদ রাজধানীতে নিত্যপণের বাজার রহিয়াছে সহস্রাধিক। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাত্র দুইটি নজরদারি দল দিয়া ঐগুলি তদারকির চিন্তা বাতুলতা ব্যতীত আর কী হইতে পারে? বাজার-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার পরিস্থিতিও তথৈবচ। যেমন কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বাজার লইয়া ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত’ হইলেও উহার ভ্রাম্যমাণ নজরদারি সংক্রান্ত জনবলই নাই। বাজারে নামিতে গেলে জেলা প্রশাসনের সহায়তা লইতে হইবে। ঐদিকে জেলা প্রশাসনও নিশ্চয় কর্মহীন বসিয়া নাই। এখন তদারকির রাধিকার নৃত্য আয়োজনে অর্ধমণ ঘৃত সংগ্রহ করিতে করিতে পণ্যমূল্যের পাগলা ঘোটক কি বসিয়া থাকিবে? এই পরিস্থিতিতে সংস্থাটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে হিতোপদেশ বিতরণ ব্যতীত আর কী করিতে পারে?