চাকুরির বয়সসীমা ও সনদ পোড়ানো
বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে কষ্টার্জিত মূল্যবান সনদ পোড়ানোর ঘটনা। দীর্ঘসময় বেকারত্বের জ্বালা ও অপমান সইতে না পেরে কিছু সনদধারী শিক্ষিত মানুষ এসব অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন। অন্যদিকে চাকুরির সরকারি বয়সসীমা পেরিয়ে যাবার ফলে যারা নিজেকে বঞ্চিত মনে করছেন এবং যারা অচিরেই নিজের সরকারি চাকুরি লাভের নির্ধারিত বয়সের গন্ডি পেরিয়ে যাবার আশঙ্কা করছেন তারা রাজপথে আন্দোলনে নেমেছেন।
গেল জুন মাসে রাজধানীর শাহবাগে এই ধরনের একটি আন্দোলনকে দাবি আদায়ের জন্য বেশ সোচ্চার হতে দেখো গেছে। ‘চাকুরিতে বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ’ নামক ব্যানারে শাহবাগে জড়ো হয়ে রাস্তায় বসে দাবি জানাচ্ছিল তারা। তাদের দাবি চাকুরিতে আবেদনের জন্য ফি-এর পরিমাণ প্রথম শ্রেণিতে ২০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৫০, তৃতীয় শ্রেণিতে ১০০ এবং চতুর্থ শ্রেণিতে ৫০ টাকা করতে হবে। পুলিশ তাদেরকে লাঠিপেটা করে এবং ৯ জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। একদিকে সনদ পোড়ানো ও অন্যদিকে সনদধারীদের চাকুরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবি আমাদের দেশের শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠীর এক ধুসর দিকের নগ্নচিত্রকে জনসন্মুখে তুলে ধরেছে।
আমাদের দেশের উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা নিজেই শিক্ষিত বেকার তৈরির একটা সচল কারখানা হিসেবে বিবেচিত। এর খারাপ দিক নিয়ে প্রতিনিয়ত নানা কথা বলা হচ্ছে। নীতিনির্ধারকগণ সেগুলো শুনেও না শোনার ভান করে রাতারাতি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দিচ্ছেন। বিশেষ করে শহরের ঘনবসতিপূর্ণ, আঁটঁসাট ঘিঞ্জি এলাকায়, মার্কেটের ছাদে, একটি ভবনের মাঝে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দান এবং সেগুলোতে মানহীন শিক্ষক ও শিক্ষার পরিবেশ আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে একট ভয়ানক নাজুক অবস্থার মুখে ঠেলে দিয়েছে। পাশাপাশি রাজধানীসহ সব বড় শহরে মারাত্মক যানজট তৈরির বড় উপকরণ হিসেবে সহায়তা করে চলেছে। তবুও থেমে নেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার জন্য ডিও লেটার নিয়ে ব্যবসায়ী সাংসদ ও নীতিনির্ধারকদের এই হীন প্রচেষ্টা।
- ট্যাগ:
- মতামত
- চাকরির বয়সসীমা
- শিক্ষা সনদ
- পুড়িয়ে ফেলা