 
                    
                    কর্ণফুলী টানেল চট্টগ্রামকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউনসে’ পরিণত করার পথ খুলে দেবে
চট্টগ্রাম নগরী বর্তমানে কর্ণফুলী নদীর উত্তর পাশে বেশ কয়েক মাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। চট্টগ্রাম বন্দরও কর্ণফুলী নদীর উত্তর পাড়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় অবস্থিত। অথচ নদীর স্বাভাবিক খাঁড়ি নদীর দক্ষিণ পাড়সংলগ্ন জলধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ওই পাড়ের পাশেই নদীর স্রোতধারা অনেক বেশি তীব্র, উল্টো দিকে নদীর জলপ্রবাহের সঙ্গে আসা পলিমাটি জমা হওয়াই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তাই উত্তর পাড়ের বন্দরের জেটিগুলোর নাব্যতা সংরক্ষণে প্রতি বছর খননকাজ চালাতে হয়, কয়েক বছর পরপর ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। ঐতিহাসিকভাবে জানা যায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ বছর আগে যখন চট্টগ্রাম নৌ-বন্দর গড়ে উঠেছিল তখন প্রধানত কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়েই ওই বন্দরের অবস্থান ছিল।
কিন্তু ব্রিটিশ আমলে যখন আধুনিক বন্দর হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় তখন তদানীন্তন ভারতবর্ষের উত্তর-পূর্বাংশের সঙ্গে রেল ও সড়ক যোগাযোগ সহজে এবং সুলভে প্রতিষ্ঠার যুক্তিতে বন্দরের জেটিগুলো নদীর উত্তর পাড়েই নির্মাণ করা হয়, যার ফলে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের বাণিজ্য কেন্দ্র এবং আবাসিক এলাকাগুলোও ওই বন্দরকে ঘিরে গড়ে ওঠে। এ ভূ-রাজনৈতিক কারণেই চট্টগ্রাম বন্দরও কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীরে সম্প্রসারিত হয়নি, যেহেতু বন্দরের অবস্থানের কারণে চাক্তাই খালের মোহনা থেকে কর্ণফুলী নদীর মোহনা পর্যন্ত নদীতে কোনো সেতু নির্মাণের সুযোগ নেই। তিন দশক আগেও শুধু জলপথেই ওই এলাকার জনগণ চট্টগ্রাম শহরে আসতে পারত, নব্বইয়ের দশকে বাকলিয়ায় সেতু নির্মাণের আগে। এ প্রতিবন্ধকতার জন্যই চট্টগ্রাম নগরী কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে সম্প্রসারিত হয়নি। দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা এবং বাঁশখালী এখনো চট্টগ্রামের সবচেয়ে অনুন্নত দুটি উপজেলা হয়ে রয়েছে, যদিও আকাশপথে এ দুটি উপজেলা চট্টগ্রাম নগরী থেকে সবচেয়ে নিকটবর্তী এলাকা।
 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                -68f7ebaa39de2-6903ee942e8e5.jpg)