বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া ও পাকিস্তানের বোধোদয়
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় এখনও কারও কারও আক্ষেপের শেষ নেই। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, স্বাধীন বাংলাদেশের বুকে রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করার পরও এবং দলীয় নেতা হওয়ার সুযোগ পেয়েও কিছু নেতা পাকিস্তান আমলকেই বাংলাদেশের চেয়ে উত্তম মনে করেন। এবং নির্লজ্জের মতো পাকিস্তানের গুণকীর্তন করেন প্রকাশ্যে।
২০২২ সালের বিজয় দিবসের প্রাক্কালে এসে তাদের পাকিস্তানপ্রেম যে কতটা ভ্রান্ত ধারণায় প্রতিষ্ঠিত তার পরিসংখ্যানভিত্তিক জবাব দেওয়া যেতে পারে। শুধু কি তাই, যে মুহূর্তে ওরা পাকিস্তানের পতাকাকে নিজের প্রতীক হিসেবে মনে করে, ওই সময়ই পাকিস্তানের মানুষ মনে করে- তারা যদি বাংলাদেশের মতো হতে পারতো। আর সেই অবস্থা কিন্তু কোনো আবেগের কারণে নয়। বাস্তবতার নিরিখে আজ তারা বাংলাদেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখে এবং প্রকাশ্যেই কামনা করে- তারা যদি বাংলাদেশের মতো হতে পারতো। দুঃখজনক হচ্ছে- বাংলাদেশের কিছু বিভ্রান্ত মানুষ সেই পাকিস্তানকেই স্বপ্নের দেশ হিসেবে ভাবতে আরাম পায়।
বাংলাদেশকে দমন করাই ছিল পাকিস্তানিদের প্রধান লক্ষ্য। সেটা শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের জাতির পিতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। নিয়তি আজ সব বদলে দিয়েছে। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর পদাঙ্ক অনুসরণ করে সর্বশেষ ইয়াহিয়া খান পর্যন্ত প্রত্যেকেরই মানসিকতা ছিল এমনটি। কিন্তু সফল হতে পেরেছে কি? তাদের কারণেই পাকিস্তান ভেঙেছে। পাকিস্তান ভাঙায় পাকিস্তানিদেরই কপাল ভেঙেছে। বাঙালি ঠিকই তার নিজের মেধা মনন এবং আন্তরিকতা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
এবার দেখা যাক, কোন কারণে পাকিস্তানিরা বাংলাদেশি হতে চায়। মোটা দাগে যদি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে তুলনা করা হয় তাহলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। পাকিস্তানের ৯ কোটি মানুষের মধ্যে ৫ কোটিরও বেশি অধিবাসী ছিল বাঙালি। এটা ১৯৬১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী। পাকিস্তানের উন্নয়ন যাত্রায় বাংলাদেশকে তথা তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানকে দ্বিতীয় স্তরে মূল্যায়ন করা হতো। সেই পাকিস্তান আজ জনসংখ্যার চাপে চ্যাপ্টা হওয়ার পর্যায়ে পড়েছে।