বিরল ব্যক্তিত্ব আবু সাঈদ চৌধুরী
বিচারপতি, রাষ্ট্রপতি ও বুদ্ধিজীবী আবু সাঈদ চৌধুরী টাঙ্গাইলের নাগবাড়ীর জমিদার পরিবারে ৩১ জানুয়ারি ১৯২১ জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৭ সালের ২ আগস্ট লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন।
বিচারপতি চৌধুরী কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বি.এ (১৯৪০), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এম.এ. ও আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভের পর ইংল্যাণ্ডের লিংকন্স ইন থেকে ব্যারিস্টারি পাস করেন। খ্যাতনামা ছাত্রনেতা হিসেবে প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (১৯৪০), নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (১৯৪০) ও নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের ব্রিটিশ শাখার সভাপতি (১৯৪৬) নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন এবং ভারত বিভাগের পর ঢাকায় এসে ১৯৪৮ সালে ঢাকা হাইকোর্টে আইন ব্যবসায়ে যোগ দেন। ১৯৬০ সালে আবু সাঈদ চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তানের অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং ১৯৬১ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন। তিনি পাকিস্তানের সাংবিধানিক কমিশনের সদস্য (১৯৬০-৬১) এবং বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের (১৯৬৩-৬৮) চেয়ারম্যান ছিলেন।
বিচারপতি চৌধুরী ১৯৬৯-এর ২০ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হন। ১৯৭১-এর ফেব্রুয়ারি মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অধিবেশনে যোগদানের জন্য জেনেভায় গমন করেন। একই বছর মার্চ মাসে পূর্ব পাকিস্তানে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে সেনাবাহিনীর উপর্যুপরি গুলিবর্ষণে ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদে উপাচার্যের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে জেনেভা থেকে পাকিস্তান সরকারের কাছে পদত্যাগপত্র প্রেরণ করেন। বিদেশি বেতারে ২৫ মার্চের কালরাতে পাক-বাহিনীর গণহত্যার সংবাদ শুনে জেনেভা থেকে লন্ডন আসেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ঢাকা থেকে ব্রিটিশ হাই কমিশন অফিস কর্তৃক সেখানে প্রেরিত টেলেক্স পড়ে জানতে পারেন বাংলাদেশে পাকবাহিনীর নিষ্ঠুর গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিস্তারিত তথ্য। অতঃপর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ অবলম্বন করেন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বিচারপতি
- নমনীয়
- আবু সাঈদ চৌধুরী