সরকারি কলেজে শিক্ষার এ কোন হাল!

যুগান্তর বিমল সরকার প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০

সম্প্রতি প্রকাশিত ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলকে ঘিরে সরকারি কলেজ নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করার তাগিদ অনুভব করছি। সরকারি কলেজ; আজকাল যেমনই হোক, একসময় সবার কাছেই ছিল এক আরাধ্য বস্তু। ‘আমি সরকারি কলেজে পড়ি, আহা!’ আরাধ্য বস্তু কীভাবে? তাহলে কিছুটা পরিষ্কার ও ব্যাখ্যা করে বলতে হয়।


ব্রিটিশ আমলে (পূর্ববঙ্গের) ঢাকায় ‘ঢাকা কলেজ’ (১৮৪১), চট্টগ্রামে ‘চট্টগ্রাম কলেজ’ (১৯৬৯) ও রাজশাহীতে ‘রাজশাহী কলেজ’ (১৮৭৩) নামে তিনটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ঢাকা প্রথম, চট্টগ্রাম দ্বিতীয় আর রাজশাহী বাংলাদেশের তৃতীয় কলেজ (তিনটি কলেজই সরকারি উদ্যোগে স্থাপিত)। ঠিক এভাবে অত্যন্ত ধীর লয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও বেশকটি কলেজ স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের সময় আমাদের ভাগে ও ভাগ্যে মোট ৮টি সরকারি কলেজ পড়ে। পাকিস্তান আমলে ২৪ বছরে আরও কয়েকটি বৃদ্ধির ফলে সরকারি কলেজের মোট সংখ্যাটি চব্বিশে দাঁড়ায়। স্নাতক শ্রেণিতে আমি ভর্তি হওয়ার সময় (১৯৭৭) আনন্দমোহন কলেজ ছাড়া এ অঞ্চলের (ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, জামালপুর, শেরপুর) আর কোথাও সরকারি কলেজ ছিল না। ১৮৪১ সালে ঢাকা কলেজ স্থাপিত হওয়ার ১২৩ বছর পেরিয়ে গেলেও বৃহত্তর ঢাকা, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর অঞ্চলের বর্তমান ১৭ জেলার মধ্যে আর কোনো কলেজ সরকারিকরণের মুখ দেখতে পায়নি। ১২৩ বছরের ব্যবধানে (১৮৪১-১৯৬৪) এ সুবৃহৎ এলাকায় দ্বিতীয় সরকারি কলেজ হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের (১৯৬৪)। অতএব সুবিস্তৃত এলাকায় একমাত্র সরকারি কলেজটির শিক্ষার্থী হিসাবে আমাদের যে কী আনন্দ আর গর্ব! এখন ভাবলে মনে হয়, এ রূপকথার গল্প।


কিন্তু আজ? আগের দিন আর নেই। এখন ঘর থেকে বের হয়ে পা বাড়ালেই সরকারি কলেজ। বিভাগীয় ও জেলা শহর ছাড়িয়ে এখন উপজেলায় উপজেলায় সরকারি কলেজ। সারা দেশের ডিগ্রি স্তরে আনুমানিক দুই হাজার ২৫০ কলেজের মধ্যে এক-চতুর্থাংশের বেশি (মোট ছয়শরও বেশি) কলেজ সরকারি। একদিক থেকে আনন্দেরই কথা, বৃহত্তর ময়মনসিংহের অন্তত ৬০টির (সরকারি) মধ্যে আমাদের কিশোরগঞ্জ জেলায় ১৫টি কলেজ সরকারি।



কিশোরগঞ্জের কলেজগুলোর মধ্যে জেলা সদরের গুরুদয়াল কলেজ ১৯৮০ ও কিশোরগঞ্জ মহিলা কলেজ ১৯৮৯ সালে সরকারিকরণ হয়। এছাড়া ভৈরবের জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজ ২০১২ ও ইটনায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কলেজ ২০১৬ সালে সরকারিকরণ হয়। বাকি ১১ উপজেলা সদরের ১১ কলেজ সরকারি হয় ২০১৮ সালে।


১৫ অক্টোবর ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। ৯টি সাধারণ এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলে মোট ১১টি বোর্ডে এবার পাশের হার ৭৭.৭৮ শতাংশ। সাধারণ ৯টি বোর্ডে এ হার ৭৫.৫৬ আর ঢাকা বোর্ডে ৭৯.২১ শতাংশ। পাশের শতকরা হারের দিক দিয়ে ঢাকার অবস্থান চতুর্থ। ঢাকার উপরে রয়েছে রাজশাহী (তৃতীয় : ৮১.২৪ শতাংশ), বরিশাল (দ্বিতীয় : ৮১.৮৬ শতাংশ) ও সিলেট বোর্ড (প্রথম : ৮৫.৩৯ শতাংশ)।


ফল প্রকাশের পরপরই আমি আমাদের কিশোরগঞ্জ জেলার ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের একটি তালিকা সংগ্রহ করি। একইসঙ্গে ২০২৩ সালেরটিও। সংগ্রহ করলেও এ ক’দিন খুঁটিয়ে দেখার সময়-সুযোগ হয়ে উঠেনি। কিন্তু ভালো করে চোখ বুলিয়ে দুদিন ধরে এ নিয়েই ভাবছি। এ ফলাফল, বিশেষ করে জেলার সরকারি কলেজগুলোর ফলাফল আমার কাছে খুব অস্বস্তিকর ঠেকছে; এ কোন হাল, এ কী করেই বা সম্ভব! ২০২৪ ও ২০২৩ দু’বছরই ঢাকা বোর্ডে পাশের হার যেখানে ৭৯ শতাংশ, সেখানে একটিমাত্র কলেজ ছাড়া বাকিগুলো তা ছুঁতে তো পারেইনি, উপরন্তু ২০২৪ সালে ১০টি আর ২০২৩ সালে ৮টি সরকারি কলেজে পাশের হার ৭০ বা ৭০-এর নিচে! এখানে আমি নাম উল্লেখ করতে চাই না : দুটি সরকারি কলেজে পাশের হার ৬০ শতাংশেরও কম। ২০২৩ ও ২০২৪ পরপর দু’বছরই ৭০ শতাংশের কম পাশ করেছে এমন সরকারি কলেজ রয়েছে ৪টি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও