চৌদ্দ দলের সংকট কি কাটবে?

সমকাল মাহফুজুর রহমান মানিক প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২৪, ১১:০০

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের বয়স দু্‌ই দশক হবে আগামী বছর। ওই সময় পর্যন্ত ২৩ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে প্রধানত মধ্যপন্থা ও বামপন্থার সমন্বয়ে গঠিত জোটটি টিকে থাকবে কিনা– সে প্রশ্নই ইদানীং উঠেছে। এমনকি শুক্রবার সমকালের এক খবর অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও এ জোটের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে খোদ শরিকরাই প্রশ্ন তুলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শরিক দলের নেতাদের আপাতত এ বিষয়ে আশ্বস্ত করলেও, নেতারা এতে কতটুকু আশ্বস্ত হয়েছেন, তা সময়ই বলে দেবে। কারণ, গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ১৪ দল একসঙ্গে নির্বাচন করবে– প্রধানমন্ত্রীর এমন আশ্বাসে জোট শরিকদের বেশ খুশি হতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনকালে এবং নির্বাচনের পর শরিকরা জোটের প্রধান দলের ভূমিকা নিয়ে কেবল হতাশাই প্রকাশ করেছে। 


বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদারে ২০০৫ সালের ১৫ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে ১৪ দল গঠিত হয়। এ জোট গঠনের আগে এর সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল, বাসদ, গণতন্ত্রী পার্টিসহ অন্যান্য বামদল ১১ দলীয় বাম জোটের সদস্য ছিল। ন্যাপ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) স্বতন্ত্রভাবে কাজ করছিল। পরবর্তী সময়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টি (জেপি), তরীকত ফেডারেশনসহ আরও কয়েকটি দল ১৪ দলে যোগ দেয়। তবে জোটের বেশির ভাগ দল অন্তত কাগজ-কলমে হলেও বাম মতাদর্শের হওয়ায় ১৪ দলকে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে বামদের জোট হিসেবেই ধরা হয়।


জোট শরিকদের বক্তব্য অনুসারে, ১৪ দলের প্রতিষ্ঠাকালীন অঙ্গীকার ছিল– একসঙ্গে আন্দোলন, একসঙ্গে নির্বাচন ও একসঙ্গে সরকার গঠন। ২০০৮, ’১৪ ও ’১৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত তাদের এ রসায়ন ভালোই চলছিল। প্রথম দুই সরকারে ১৪ দলীয় জোট শরিকদের কয়েকটি মন্ত্রিত্বও দেওয়া হয়। তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ অনেকটাই ‘একলা চলো’ নীতি গ্রহণ করে। ফলে ২০১৯ সালে তৃতীয় দফায় গঠিত সরকারে যেমন জোট নেতাদের ভাগ্য খোলেনি, তেমনি এবার চতুর্থ মেয়াদের সরকারেও শরিক দলের কোনো নেতা ঠাঁই পাননি। 


মন্ত্রিত্ব তো অনেক দূরের বিষয়; দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের তিন শরিক দলকে মাত্র ছয়টি আসনে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকে ছাড় দেয়। এর মধ্যে চারটিতেই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করেন। স্বাভাবিকভাবেই শরিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ চরম আকার ধারণ করে। সেই ক্ষোভ প্রশমনেই নতুন সরকার গঠনের সাড়ে চার মাস পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১৪ দলের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।


এই যে বড় শরিকের উপেক্ষার শিকার হয়ে ছোট শরিকদের হতাশ হওয়া এবং শেষমেশ প্রধানমন্ত্রীর কিছু আশ্বাস পেয়ে তাদের পুনরায় চাঙ্গা হওয়া, এর মধ্যে একটা বিষয় পরিষ্কার– প্রত্যাশিত ক্ষমতার ভাগ না পেয়েও এখন ছোট শরিকদের ক্ষমতাসীনদের আশ্বাসেই খুশি থাকতে হয়।


একই সঙ্গে এটিও বলা যায়, যে ২৩ দফা বাস্তবায়নে ১৪ দলীয় জোট গঠিত হয়েছিল, তার কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে– সে প্রশ্ন তোলারও সময় এসেছে। ২৩ দফায় দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিষয় যেমন আছে, তেমনি দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখা, রাষ্ট্র পরিচালনায় সংবিধানের প্রাধান্য, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দলীয়করণ বন্ধ, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করাও এর অন্তর্ভুক্ত। দুর্নীতি দমন কমিশনকে প্রকৃত স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করাসহ সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠাও ২৩ দফার উল্লেখযোগ্য বিষয়। এর অধিকাংশই যে এখনও অধরা– তা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও