কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ভাগাভাগির নির্বাচন কেমন হবে

www.ajkerpatrika.com এ কে এম শামসুদ্দিন প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৫১

দেশের চলমান রাজনীতি নিয়ে আলাপকালে আমার এক বন্ধু বলছিলেন, ‘রাজনীতি এখন একজনকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে, জনগণকে ঘিরে নয়। তিনি যেভাবে চান, বাংলাদেশের রাজনীতি সেভাবেই চলে। রাজনীতিতে তাঁর কথাই শেষ কথা। অতএব আমাদের দেশে রাজার নীতিই রাজনীতি।’


এই নির্বাচনে সংসদের বিরোধী দল ও শরিক দলের নেতা-নেত্রীরা আসন ভাগাভাগির জন্য যেভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কৃপা পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করেছেন, তা দেখে মনে হয়েছে, নির্বাচনে জনগণের যে একটা বিশেষ ভূমিকা থাকে, তা সচেতনভাবেই অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। এই দৌড়ঝাঁপ না করে এসব দলের কোনো উপায়ও নেই। ক্ষমতার লোভ এমনই জিনিস, এর স্বাদ একবার পেলে তা সামলানো ভীষণ কঠিন হয়ে পড়ে। তাতে যদি নিজের মানসম্মানও বিসর্জন দিতে হয়, তাতেও আপত্তি নেই। দলের আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে বিলীন হয়ে যেতে এসব কক্ষচ্যুত রাজনীতিবিদের বিবেকে একবিন্দুও বাধে না। সারা জীবন বাম রাজনীতি করে রাশেদ খান মেনন যখন বলেন, ‘নৌকা তো জোটের প্রতীক হয়ে উঠেছে’, তখন বাকি সবকিছুর অর্থ বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না।


এবারের নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও বিপাকে পড়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন সামাল দিতে যে ঝামেলা মোকাবিলা করতে হয়েছে, এবার যেন আরও বাড়তি কিছু চাপ তাদের সহ্য করতে হচ্ছে। বিগত নির্বাচনে পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে তেমন কোনো চাপ ছিল না। যতটুকুই যা ছিল তা ভারতই সামাল দিয়েছে। এবার যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা যেভাবে ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেলছে, তাতে সরকারকে কিছুটা বেকায়দায় ফেলেছে বৈকি। তবে এবার যে অভিনব কায়দায় নির্বাচনের আয়োজন করা হচ্ছে, তা গণতন্ত্রের ইতিহাসে রেকর্ড হয়ে থাকবে। বৃহৎ বিরোধী দলকে বাইরে রেখে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করার জন্য যে কৌশল নেওয়া হচ্ছে, তা গণতন্ত্রের কোন ভাষায় সংজ্ঞায়িত করা যায়, তা ভাবনার বিষয়। নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীন দল ও তাদের মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী, শরিক দল, সরকারনির্ধারিত বিরোধী দল মিলেমিশে যে নির্বাচন করতে যাচ্ছে, তাকে রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা ছাড়া আর কী বলা যায়।


শরিক দলগুলো আগের মতো এবারও আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করে নির্বাচনের বৈতরণি পার হওয়ার চেষ্টা করছে। ১৪ দলের জোট হলেও, শরিকদের ছয়টি আসন ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই ছয়টি আসন আবার মাত্র তিনটি দলের মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়েছে।


রাশেদ খান মেননের ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি, হাসানুল হক ইনুর জাসদ তিনটি এবং আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জেপিকে একটি। শরিক দলের কেউ কেউ মেনে নিলেও অনেকেই আওয়ামী লীগের এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। মেনে না নিলে কী হবে? এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করার সাহসও তো তাঁদের নেই। কাজেই যা পেয়েছেন, তাই নিয়েই তাঁদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে। কারণ তাঁরা জানেন, এ নিয়ে শোরগোল করেও কোনো লাভ নেই। আওয়ামী লীগের প্রধান যা বলবেন, তাই-ই হবে। তবে দুঃখ হয় জোটের অন্য শরিকদের জন্য। তাদের ভাগ্যের শিকেয় একটি আসনও জোটেনি। সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া তো বলেই ফেললেন, ‘জোটের তো আমরা কোনো ফ্যাক্টরই না। ফ্যাক্টর তো ওয়ার্কার্স পার্টি আর জাসদ। এদের সঙ্গে আলোচনা করলেই সব হয়ে যায়। তাঁরা তো আমাদের কথা চিন্তা করেন না।’ দিলীপ বড়ুয়ার দুঃখ আমরা বুঝি। মন্ত্রিত্বের ক্ষমতাভোগী যে কেউ এমন প্রক্রিয়া দেখাতেই পারেন। এমপি হওয়ার সাধ কার না জাগে। এতে দোষের কিছু নেই। এবার আওয়ামী লীগের দেওয়া ২৬টি আসন নিয়েই জাতীয় পার্টিকে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। এর চেয়ে কম আসন পেলেও এই দলটি যে নির্বাচনে যেত, তা বোঝাই যাচ্ছিল। এ ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর ছিল না। আসন বাড়ানো নিয়ে যা হয়েছে, তা ছিল তাদের বাড়তি কিছু আদায় করার চেষ্টা মাত্র। জাতীয় পার্টি কখনো আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে না। দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের দিল্লি সফরেই এ বিষয়ে ফয়সালা হয়ে গিয়েছিল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন। তাঁদের ধারণা, এ জন্যই এবার জাতীয় পার্টিকে রাজি করানোর জন্য ভারতের কোনো কর্মকর্তার বাংলাদেশ সফরের প্রয়োজন হয়নি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও