সন্তানের প্রতি মায়েদের ‘সুপার পজিটিভ আচরণ’ এবং কিছু ভাবনা

জাগো নিউজ ২৪ শাহানা হুদা রঞ্জনা প্রকাশিত: ২২ মে ২০২৪, ১১:৫৭

এসএসসির রেজাল্ট বের হবার পর ছাত্রছাত্রীদের সাথে সাথে মায়েদের আনন্দ চোখে পড়ার মত। একজন মা হিসেবে আমিও মনে করি সন্তানের যেকোনো অর্জন বাবা-মায়ের কাছে সবচেয়ে বেশি পাওয়া। এরচাইতে বেশি খুশি বাবা-মা নিজের জীবনের অর্জনেও হন না। বিশেষ করে সেইসব মায়েরা যারা তাদের জীবনের একটা বড় সময় সন্তানকে গড়ে তোলার পেছনে ব্যয় করেন। গর্ভধারণ, জন্মদান, সন্তান প্রতিপালন থেকে শুরু করে সন্তানকে পড়াশোনা শেখানো, টিফিন বানিয়ে দেয়া, হাত ধরে স্কুলে নিয়ে যাওয়া, গরমে ঘেমে নেয়ে স্কুলের সামনে বা কোচিং ক্লাসের সামনে বসে থাকা, এমনকি নিজের চাকুরিক্ষেত্র থেকে অসময়ে অবসর নেয়া- এসব কিছুই করেন তারা শুধু সন্তানের মুখ চেয়ে। সন্তানের মঙ্গলের জন্য এবং সন্তান যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে একথা ভেবে। শ্রেণি-পেশা, জাতি-গোষ্ঠী ভেদে মায়েরা এই দায়িত্বপালন করেন।


বাবারা যেমন সংসার চালনার মূল দায়িত্ব পালন করেন আয়-উপার্জন করে, তেমনি মায়েরাও আরেকটি বড় দায়িত্ব পালন করেন সংসার পরিচালনা, সবার দেখভাল করা, গৃহস্থালির কাজ ও সন্তান লালনপালন করার মাধ্যমে। এর পাশাপাশি অনেক মা চাকরি করেন, কৃষিকাজ করেন, ব্যবসা করেন। কিন্তু সবারই মূল দৃষ্টি থাকে সন্তান পালনে। মায়েরা বিশেষ করে এদেশের মায়েরা নিজের জীবনের সব আনন্দ, চাহিদা ও অর্জনকে বিসর্জন দিতে পারেন, সন্তানের জন্য। মা স্বপ্ন দেখেন তার সন্তান একদিন যোগ্য হয়ে উঠবে, নিজের পায়ে দাঁড়াবে। মনেমনে হয়তো এটাও ভাবেন এরাই একদিন বাবা-মায়ের দায়িত্ব নেবে এবং তখন নিজেদের জীবনে অবসর আসবে। অবশ্য সন্তান দায়িত্ব-কর্তব্য পালন না করলেও বা কম পালন করলেও বাবা-মা খুশি থাকেন। মায়েরা হেলাফেলা সহ্য করেও সন্তানের পাশে থাকতে চান। কিন্তু কয়জন মা বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের কাছে আশ্রয় পান, কয়জন ছেলে বা মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পারেন? কিন্তু পুকুর ঘাটে বা বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসা মা-ও তার সন্তানের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেন না। এই যে মায়েদের এই অতিরিক্ত দরদ, ধৈর্য্য ও অভিযোগহীন আচরণ দেখে আমার এক বন্ধু সেদিন দুঃখ করে বলেছেন, আমাদের মায়েদের টক্সিক পজিটিভিটি জাতি হিসাবে আমাদের পথভ্রষ্ট, স্বার্থপর ও আত্মঘাতি করে তুলেছে। তার মন্তব্যটা নিয়ে ভাবলাম এবং মা হিসেবে নিজেকে মেলানোর চেষ্টা করলাম। মায়েদের ভেতরের এই নেগেটিভ পজিটিভিটি বিষয়টা আমাকে ভাবাচ্ছে। যাকে আমরা সন্তানের প্রতি অন্ধ বা আপাত্য স্নেহ বলি, সেটাকেই আমার বন্ধু বলছে টক্সিক পজিটিভিটি, যা অত্যাধিক ইতিবাচকতা বা ইতিবাচক বিষাক্ততা নামেও পরিচিত। নেতিবাচক আবেগ, বিশেষ করে রাগ, চাপ এবং দুঃখকে অগ্রাহ্য করে যে মানসিক ব্যবস্থাপনা আমরা ভেতওে ভেতওে করে থাকি এবং সামাজিকভাবে সেটাই প্রমাণ করার চেষ্টা করি, সেটাকেই নেগেটিভ পজিটিভিটি বলা যায়।


একজন মায়ের নিজের জীবনের উপর যত ঝড়ঝাপটাই আসুক না কেন, মা তার আঁচ সন্তানের উপর পড়তে দিতে চান না। নিজের পিঠ পেতে দেন সন্তানকে রক্ষার জন্য। এমনকি সন্তানের নেতিবাচক আচরণও অধিকাংশ সময় তাদের চোখে পড়ে না। টক্সিক ইতিবাচকতা হলো এমন একটা বিষয় যে "যতই ভয়াবহ পরিস্থিতি হোক না কেন” তা মেনে নিয়ে উচ্ছ্বসিত থাকার চাপ গ্রহণ করা। টক্সিক ইতিবাচকতা তখনই ঘটে, যখন মানুষ মনে করতে থাকে যে তারপাশে ঘটমান পরিস্থিতি সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা এড়িয়ে চলা উচিত। যে ঘটনাগুলির প্রতিক্রিয়ায় সাধারণত মানুষের মনে দুঃখ তৈরি হয়, ক্ষতি বা কষ্ট হয়, সেগুলোকেই মোকাবিলা করার উপায় হিসেবে এই টক্সিক ইতিবাচকতাকে উৎসাহিত করা হয়, যদিও এর মাধ্যমে বহু সত্যি চাপা পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে, এরকম অনেক ‘সত্যি’ অনেক মা-ই চেপে রাখেন পরিবার ও সমাজের সামনে।


শুধুমাত্র গাড়িভাড়া বাঁচাবেন বলে বা সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে যে মায়েরা শীত, গ্রীস্ম ও বর্ষা সব ঋতুতেই স্কুলের সামনে, শপিং মলের সিঁড়িতে বা ফুটপাতে চাদর বিছিয়ে বসে থাকেন, গল্প করেন, হাতের কাজ করেন, বাজার সদাই করেন তারা কিন্তু খুব শখ করে বা বিনোদিত হওয়ার জন্য এভাবে সময় কাটান, তা নয়। তারা এভাবেই সন্তানের পাশে থাকেন এবং থাকতে চান। এজন্য অবশ্য সংসারের অন্যসব কাজ থেকে মা নিষ্কৃতি পান না। সব কাজ শেষ করে তবেই তাকে সংসার বিশ্রাম দেয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও