পারমাণবিক জ্বালানির দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা
আমি সাধারণত রিকশা বা অটোরিকশায় যাতায়াত করলে চালকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপচারিতায় তাদের মনোভাব জানতে চাই। দেশের রিকশাচালক থেকে শুরু করে আমজনতা অনেকেই জানেন পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বিষয়ে। বেশ কয়েকজন রিকশা ও অটোচালকের সঙ্গে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বিষয়ে আলাপ করে জানতে পারলাম, সেখানে নাকি বিশাল আকৃতির অতি উঁচু ধরনের চারটি পারমাণবিক বোমা তৈরি হচ্ছে! এগুলো ফুটলে দেশের অবস্থা কী হবে, তা নিয়ে তারা খুবই শঙ্কিত। আসলে তারা বোঝাতে চেয়েছেন চারটি ১৭৫ মিটার উঁচু কুলিং টাওয়ারকে। এগুলো মূলত তাপ বর্জনের জন্য ব্যবহৃত হবে এবং এগুলো দিয়ে ধোঁয়ার মতো যা বের হবে তা হলো জলীয় বাষ্প, যা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়। এই নেতিবাচক ভাবনা যে শুধু রিকশা ও অটোচালকদের মধ্যে রয়েছে, তা কিন্তু নয়।
সচেতন মহল থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিদের মধ্যেও অনেক মিথ রয়েছে। আমি একটি গবেষণায় দেখেছি, পারমাণবিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের মধ্যেও নেতিবাচক অনেক ধারণা রয়েছে। এই নেতিবাচক ধারণা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা ও সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। এ ধরনের ধারণা যত কমানো যায় ততই মঙ্গল। এটা অবশ্যই সম্ভব। পারমাণবিক শিল্পে যারা কর্মরত, তারা এ প্রযুক্তি সম্পর্কে যা জানেন তা সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করে, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে প্রযুক্তির নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরলে অনেক সুফল পাওয়া সম্ভব। স্কুল-কলেজের পাঠ্যপুস্তকেও এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত।
শুনতে পাচ্ছি, রূপপুরে প্রথম চুল্লিটির জন্য চলতি সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ রাশিয়া থেকে পারমাণবিক জ্বালানি আসবে। এ নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া সরব ভূমিকা পালন করছে। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলাম, ঘটনা সত্য। খুবই আনন্দের কথা। আমরা স্বপ্নের রূপপুর বাস্তবায়নের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছি।