সম্পদে হিন্দু নারীর অধিকার ও বিতর্ক
হিন্দু মহাসভার কথা তো আমরা জানি—ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক সংগঠন। ভারতের স্বাধীনতার আগে থেকেই এরা হিন্দু জাতীয়তাবাদী ধারণাটা জনপ্রিয় করে। ১৯৪৭-এর আগে আমাদের এই ভূখণ্ডে, যেটা আজকের বাংলাদেশ, এখানে হিন্দু মহাসভার কার্যক্রম ছিল। পাকিস্তানের সময়ও ছিল, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেও আছে। হিন্দু মহাসভার রাজনৈতিক মত, পথ ও কাজের ধারা নিয়ে বলার কিছু নেই, আপনারা সবাই জানেন। ভারতে বর্তমানে ওদেরই ‘পরিবার’ এখন রাষ্ট্রক্ষমতায়—ওরা এটাকে বলে সংঘ পরিবার।
বাংলাদেশে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক নামে এক ভদ্রলোক আছেন, তিনি হচ্ছেন বাংলাদেশে হিন্দু মহাসভার সাধারণ সম্পাদক। এই সংগঠনের কার্যক্রম বা অন্য কোনো নেতার কথা বা কাজ নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হয় না, কিন্তু প্রামাণিক সাহেব, তাঁর কথা, মতামত ইত্যাদির জন্য সব সময়ই আলোচিত। প্রামাণিকের রয়েছে একঝাঁক অনুসারী বা বাংলায় যাকে আমরা বলি চ্যালা।
গোবিন্দ প্রামাণিকের এই চ্যালারা বর্তমানে হিন্দু পারিবারিক আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনের বিরোধিতায় নেমেছে, বিশেষ করে অনলাইনে এ লক্ষ্যে তারা নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অফলাইনেও তাদের কার্যক্রম নিতান্ত কম নয়, মিটিং-মিছিল, শোভাযাত্রাও করেছে। তাদের একটা ছাত্র যুব সংগঠন আছে। সেই সংগঠন একটি বিশাল পোস্টার প্রকাশ করেছিল বছরখানেক আগে, যেখানে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন পরিবর্তনের বিপক্ষে নানা ধরনের কৌতুককর তর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। গোবিন্দ প্রামাণিক এবং তাঁর এই চ্যালারা আইনের সব দিক নিয়ে আগ্রহী নন—একটা জায়গায় তাঁরা প্রামাণিকের সঙ্গে একমত এবং সবাই মিলে সেটারই বিরোধ করছেন।
নারীদের কোনো উত্তরাধিকার তাঁরা দিতে রাজি নন। নারীরা পিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবেন, সেটা কোনো অবস্থাতেই তাঁরা মানবেন না। পিতার সম্পত্তি এই ভাইয়েরা নিজেরা একা একা খাবেন, বোনকে এক কণামাত্র দিতে রাজি নন। এ জন্য তাঁরা এই আইনের পরিবর্তনের পক্ষে সদ্যই কেউ কিছু বললে তাঁর বিরুদ্ধে হামলে পড়েন আর তাঁকে অনলাইনে নানাভাবে আক্রমণ করেন।