জবাবদিহির অভাবে গ্রিড বিপর্যয় এবং লোডশেডিংয়ে ব্যর্থতা
অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম জ্বালানি বিশেষজ্ঞ। বর্তমানে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানি উপদেষ্টা। ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষা সম্পর্কিত বিষয়ে তিনি কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি জাতীয় গ্রিড বিপর্যয় এবং জ্বালানি সংকটে দেশব্যাপী লোডশেডিং ব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
এম শামসুল আলম : আমাদের জাতীয় গ্রিড বরাবরই বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে আছে। ২০১৪ সালে এটা বড় আকারে দেখা গিয়েছিল। সিস্টেমের ফ্রিকোয়েন্সির ভারসাম্য ধরে রাখতে না পারলে এমন বিপর্যয় হওয়া স্বাভাবিক। সেটা বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন কিংবা বিতরণ যেকোনো দিকের সমস্যার কারণেই ঘটতে পারে। ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যতবারই এমন সমস্যা দেখা গেছে, বলা যেতে পারে সবগুলোই ফ্রিকোয়েন্সি আনস্ট্যাবিলিটির কারণে ঘটেছে।
জাতীয় গ্রিডের এই ফ্রিকোয়েন্সির ভারসাম্য ধরে রাখার জন্য যে ধরনের যন্ত্রপাতি দরকার সেটা আমাদের আছে। কিন্তু সেটা কার্যকর রাখার জন্য উৎপাদন ও বিতরণ এই উভয় দিকেই যে গ্রিড কমপ্লায়েন্স দরকার সেখানেই ঘাটতি আছে। যারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করবে তাদের জেনারেটরগুলো গ্রিডের উপযোগী হতে হবে। আবার বিতরণের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ যখন বিতরণ লাইনের মাধ্যমে ভোক্তাদের কাছে যায়, তখন যেন সেই পাওয়ারটা যাতে রেটেড পাওয়ারের চেয়ে বেশি বা ওভার লোডেড না হয়ে যায় সেটাও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এটাই মোটা দাগে গ্রিড কমপ্লায়েন্স তথা ফ্রিকোয়েন্সি ভারসাম্য রক্ষা করার মৌলিক ব্যাপার। কিন্তু কখনোই যথাযথভাবে তা করা সম্ভব হয় না। ফলে জাতীয় গ্রিড সবসময়ই ঝুঁকির মধ্যে থাকে। প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণাদিতে এমন আলামতই পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের কোনো একটি লাইন ওভারলোড হওয়ার কারণেই এই গ্রিড বিপর্যয় ঘটে। বিদ্যুৎ সচিবও এমনই একটা ধারণা দিয়েছেন। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারাও এমন কথাই বলছেন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- লোডশেডিং
- বিদ্যুৎ বিপর্যয়