বরিসের প্রস্থান ও মহাসংকটে লিজের শুরু

কালের কণ্ঠ গাজীউল হাসান খান প্রকাশিত: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:১১

করোনা-পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন দীর্ঘ সংঘর্ষ এবং তার ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে মহামন্দার যে কালো ছায়া নেমে এসেছে তা মোকাবেলা করতে যুক্তরাজ্যের রক্ষণশীল দলনেত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস কতটুকু উপযুক্ত সেটা নিয়ে এখন শুধু তাঁর নিজ দেশেই নয়, আলোচনা শুরু হয়েছে সবখানেই। তাঁর ভবিষ্যত্ শাসনকালে, তা যতই স্বল্পমেয়াদি হোক না কেন, বর্তমান যুক্তরাজ্য কতটুকু যুক্ত থাকবে সেটি নিয়েও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এখন নানা প্রশ্ন ব্যাপকতা লাভ করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সীমান্তগত ও বাণিজ্যিক কঠোর বিধিমালার প্রশ্নে, উত্তর আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে ২০২৩-এ যে গণভোটের দাবিটি ঝুলে রয়েছে, সেগুলোর কতটুকু সুরাহা করতে পারবেন অপেক্ষাকৃতভাবে কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রাজনীতিক লিজ ট্রাস? বিগত তিনটি রক্ষণশীল সরকারের অধীনে মন্ত্রিত্ব পেলেও তাঁর সে সুতীক্ষ মেধা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও প্রশাসনিক দক্ষতা কোথায়? এ ছাড়া আগের তুলনায় যুক্তরাজ্যের মানুষের অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সংকট বেড়েছে বহুগুণ। মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এগিয়ে যাচ্ছে পাল্লা দিয়ে।


ব্রিটেনের ১৫তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বড় দুঃসময়ে দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন লিজ ট্রাস। এ সংকট দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে না পারলে ব্রিটিশ রাজনীতির গত ৬০ বছরের ইতিহাসে তিনিই হবেন সবচেয়ে স্বল্পস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী। সাবেক রক্ষণশীলদলীয় প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার ছিলেন ব্রিটেনের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী, যাঁর শাসনকাল হয়েছিল দীর্ঘস্থায়ী এবং অনেকটাই সফল। পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় উপবিষ্ট হয়েছিলেন দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। তিনি অল্প সময়ে অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দলে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। অক্সফোর্ড শিক্ষিতা লিজ ট্রাস ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য না হলেও ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচন দ্বারপ্রান্তে এসে গেছে। অন্যান্য দেশ, যেমন—বাংলাদেশ, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২০২৪ সালে বা কাছাকাছি সময়ে। ব্রিটেনব্যাপী এখন প্রশ্ন উঠেছে, তত দিন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যকে যুক্ত রেখে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে পারবেন কী তিনি। অনেকে বলেন, নেহাত ভাগ্যগুণে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন লিজ। সাবেক রক্ষণশীল অর্থমন্ত্রী ঋষি সোনাকের মতো বিদ্যাবুদ্ধি কিংবা কর্মদক্ষতাও তাঁর নেই। এ মন্তব্য বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষ অনেকের।


ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় ব্রিটেনের জ্বালানি সংকট কোনোভাবেই কম নয়। ব্রিটেনে এখন মাথাপিছু জ্বালানি ব্যয় দাঁড়াবে বছরে তিন হাজার ৫০০ পাউন্ডের বেশি, যা সাধারণ মানুষের ধারণাতীত। এ ছাড়া রয়েছে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি। বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে (১০ শতাংশের বেশি) নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী ক্রমেই মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে দৈনন্দিন জীবনযাপনের মান নিচে নেমে যাচ্ছে। মানুষ দৃশ্যতই দরিদ্র হয়ে পড়ছে। খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবার মানও উল্লিখিত কারণে জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় ক্ষমতাসীন দলে নেতৃত্বের পরিবর্তন কতটুকু সুফল বয়ে আনতে সক্ষম হবে সে প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। কারণ রপ্তানি বাণিজ্যের নিম্নগতি এবং জাতীয় রাজস্ব আয়ে ভাটা পড়ছে লক্ষণীয়ভাবে। এ ছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলে অবকাঠামোগত বিনির্মাণ এবং অর্থনৈতিক কিংবা বাণিজ্যিক উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট অর্থ খরচ করে গেছেন দলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তাতে রাজকোষে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যদিও নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেছেন যে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য তাঁর নতুন সরকার একটি জরুরি পরিকল্পনা ঘোষণা করবে এবং কর্মসূচি হাতে নেবে, তবু প্রয়োজনীয় তহবিল জোগান দেওয়ার বিষয়টি অনেকটা অদৃশ্যই থেকে যাচ্ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও