বড় বিপদের আশঙ্কা
অনেক বিষয় রয়েছে, যা নিয়ে বৃহত্তর স্বার্থে আপস এবং কিছুটা ছাড় দেওয়া যায়। কিন্তু রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে এমন বিষয় নিয়ে হেলাফেলা বা আপস করার অর্থ আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া। শাসককুল কখনো কখনো নিজেদের মসনদ রক্ষা ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ইস্যুর মধ্যে ভারসাম্য খুঁজতে গিয়ে আম-ছালা দুটিই হারিয়েছেন। ইতিহাসে এর অনেক উদাহরণ আছে। ঘরের মধ্যে থাকা ছদ্মবেশী শত্রুর চাটুকারিতা-মোসাহেবিতে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তাতে শুধু ক্ষমতা হারা নয়, নিজের জীবন ও রাষ্ট্র—দুটিই গেছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, রাজ্য শাসনে রাজার জন্য আপন-পর বলতে কিছু নেই, সবাই আপন, আবার সবাই পর। বিশেষ আপন বিবেচনা ইতিহাসের অনেক মর্মান্তিক ট্র্যাজেডির জন্ম দিয়েছে। নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও মীরজাফরের মধ্যকার আত্মীয়তার সম্পর্ক ও তার পরিণতি আমাদের ইতিহাসের বড় এক ট্র্যাজেডি। আপসের পথে হাঁটায় সিরাজউদ্দৌলা নিজের জীবন হারিয়েছেন এবং তার মধ্য দিয়ে প্রায় ২০০ বছর ভারতবর্ষকে ব্রিটিশের গোলামি করতে হয়েছে। ১৭৫৭ সালের ২ জানুয়ারিতে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির সঙ্গে আলীনগরের সন্ধি যদি স্বাক্ষর না করতেন, তাহলে ভারতবর্ষের ইতিহাস ভিন্ন হতে পারত।