কারবালার আর্তি, কারবালার চেতনা

যুগান্তর ড. মাহফুজ পারভেজ প্রকাশিত: ০৬ জুলাই ২০২৫, ১২:৪২

১০ মহররম কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনায় শোকাহত হয় পুরো মুসলিম বিশ্ব। ন্যায়ের পতাকাবাহী নবী বংশের প্রতি জানায় শ্রদ্ধা, সম্মান ও সমর্থন। আত্মত্যাগের মহিমা বর্ণনা করা হয় গান, কবিতা, গজল, কাওয়ালি ও মার্সিয়ায়। অসত্য ও অন্যায়ের প্রতিবাদে অবস্থান নেওয়ার প্রতীতি ঘোষণা করে প্রতিটি মুসলমান।


ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ করা হয় দক্ষিণ ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে অবস্থিত কারবালার নৃশংস ঘটনা। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর মৃত্যুর মাত্র ৫০-৬০ বছরের মধ্যেই তাঁর বংশ চরম অমানবিক অত্যাচারে ও একতরফা আক্রমণে প্রায় নির্বংশ হয়ে যায় কারবালায়। এ আঘাত বাইরে থেকে আসেনি; এসেছে ইসলামের নামধারী অনুসারী ক্ষমতালিপ্সু চক্রের পক্ষ থেকে। যারা পরবর্তী শত শত বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে রাখে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ক্ষমতায় থেকেও তারা ইতিহাসে স্থান পায়নি। ন্যায়ের পক্ষে লড়াই ও আত্মত্যাগ করে ঐতিহাসিক সম্মান লাভ করেছে নবী বংশ তথা আহলে বায়েতের সদস্যরা। যাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)। আর এজন্যই বলা হয়, ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হার কারবালা কে বাদ/প্রতিটি কারবালার পর ইসলাম নতুন করে জেগে ওঠে।


বহুল প্রচলিত এ পঙ্ক্তিতে ইমাম হোসাইন (রা.)-এর নেতৃত্বে পরিচালিত পদক্ষেপের অনুপ্রেরণা নিয়ে বলা হয়েছে, যখনই অন্যায়-অবিচার বা জুলুমের বিরুদ্ধে কেউ সত্য ও ন্যায়ের জন্য আত্মত্যাগ করে, তখনই ইসলাম তার প্রকৃত রূপে জেগে ওঠে এবং পুনরুজ্জীবিত হয়। তাই কারবালা শুধু ইতিহাস নয়, এটি একটি আদর্শ-যেখান থেকে শিক্ষা নেওয়া হয় কীভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়। আসলে কারবালায় ইমাম হোসাইনের (রা.) শাহাদাতের মধ্যেই নিহিত ছিল ইয়াজিদের মৃত্যু। বেঁচে থেকেও লাঞ্ছিত ছিল ইয়াজিদপন্থিরা। আর প্রতিটি কারবালার পরই ইসলামের নব উত্থান ঘটে সত্য পন্থিদের মাধ্যমে। ইমাম হোসাইন (রা.) যার নেতা হিসাবে প্রতিটি মুসলমানের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন।



ঐতিহাসিক কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসাইন (রা.)সহ সর্বমোট ৭২ জন বীর শাহাদতবরণ করেছিলেন। ইমাম হোসাইন (রা.) যখন মক্কা ত্যাগ করে কারবালার পথে রওয়ানা হন তখন তার সঙ্গী-সাথীর সংখ্যা ছিল ৫০ জন। এদের মধ্যে নবী বংশের সদস্য ছিলেন ১৮ জন। বাকি ৩২ জন ছিলেন অন্যান্য বন্ধুবান্ধব, অনুসারী। ১০ মহররম তথা আশুরার দিন ইয়াজিদ বাহিনীর কিছুসংখ্যক সৈন্য নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ইমাম বাহিনীতে যোগ দেয়। উল্লেখ্য, ইমামের কাফেলার অধিকাংশ সদস্যই ছিলেন নারী ও শিশু। তিনি কারবালা পেরিয়ে কুফা নগরীতে যাচ্ছিলেন মানুষের আমন্ত্রণে। যেসব মানুষ দামেস্কে ক্ষমতাসীন ইয়াজিদের অত্যাচারে ছিল নির্যাতিত। যারা বিশ্বাস করতেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অন্য কোনো বংশ বা গোত্রের হাতে নয়, থাকতে হবে সত্য পন্থিদের হাতে। ইসলামে সবচেয়ে সত্য পন্থি হলো নবীর বংশ, যার নেতৃত্বে ছিলেন ইমাম হোসাইন (রা.)। সাধারণ মানুষ চেয়েছিল পূর্ববর্তী খলিফা হজরত আলী (রা.)-এর মতো তার পুত্র ইমাম হোসাইন (রা.) খেলাফতে অধিষ্ঠিত হোন। কারণ তিনিই ছিলেন মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্ব দেওয়ার সবচেয়ে যোগ্য ও হকদার।


সত্যের পক্ষে ইমামের নেতৃত্বে জনতার মধ্যে ঐক্য হতে যাচ্ছে দেখে দামেস্কের ক্ষমতা দখলকারী ইয়াজিদ পক্ষ আতঙ্কিত হয়। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তারা শক্তি ও নির্মমতার মাধ্যমে জনগণকে অবনত করতে থাকে। এমনকি, ইমামের কাফেলায় হাজার হাজার সৈন্য নিয়ে আক্রমণ করে। তাদের অবরুদ্ধ করে পানির পিপাসা ও যন্ত্রণা দিতে থাকে এবং একতরফা হামলা চালায়। এতে তারা শহীন হন। ইমাম অনুসারী ৭২ জন শহীদের খণ্ডিত মস্তক ইয়াজিদের সেনাপতি ইবনে যিয়াদ কারবালা থেকে দামেস্কে পাঠায়। এভাবেই সত্য পন্থিদের ‘কতলে আম’ বা গণহত্যা করা হয়েছিল কারবালার প্রান্তরে।


এই হৃদয়বিদারক, শোকাবহ ঘটনার জন্য আশুরা বা ১০ মহররম মুসলিম উম্মাহর কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামে বারো মাসের মধ্যে রয়েছে পবিত্র চার মাস, যার একটি মহররম। ঐতিহাসিক নানা কারণেও মহররম গুরুত্বপূর্ণ। কারবালা ছাড়াও অতীতে আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে মহররম মাসে। তদুপরি, মহররমকে আল্লাহর মাস বলা হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও