বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষিতে ‘তিন শূন্য’ তত্ত্ব

জাগো নিউজ ২৪ অধ্যাপক আব্দুল বায়েস প্রকাশিত: ০৬ জুলাই ২০২৫, ১৩:০১

বলা বাহুল্য যে, জুলাই- আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের আগে-পরে ঘটনাবলী বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করে। এক অর্থে মানবজীবন, সম্পদ ধ্বংস এবং অস্থিরতায় ব্যাপক রক্তক্ষরণ ঘটেছে অর্থনীতিতে। এমনিতেই করোনা থেকে শুরু করে রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধে নাকাল ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি তবে অর্থনীতি, ভালোভাবে সামালও দিয়েছিল কিন্তু ওই যে কথায় বলে, অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকিয়ে যায় অবস্থা ওইরকম । তবে সার্বিক নাজুক অবস্থার জন্য মূলত দায়ী করা হতো, আন্তর্জাতিক বৈরী পরিস্থিতিকে নয় বরং বিগত সরকারের আমলের ব্যাপক দুর্নীতি, লুটপাট এবং অপশাসনকে। বস্তুত অতীতের যেকোনো অভ্যুত্থানেই অর্থনীতির উপর মারাত্মক আঘাত এসেছে যেমন হরতাল, অবরোধ, ইত্যাদির কারণে ব্যবসাবাণিজ্য বিশেষত শিল্পকারখানার উৎপাদন হ্রাস এবং সার্বিক অভিগমন ও নির্গমনে বিঘ্নতা সৃষ্টি। তবে এসব কর্মকাণ্ডে যারা নিয়োজিত থাকতেন তারা যেভাবেই হোক লোকসান পুষিয়ে নেবার ব্যবস্থা নিতে পারতেন। কিন্তু এবার যেন একটু অন্যরকম।


দুই.
২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের পর স্বভাবতই আশা ছিল নতুন সরকার ক্ষমতায় বসা মাত্রই অর্থনীতির চাকা সচল হবে এবং ‘আবার জমবে মেলা বটতলা হাটখোলা/ অঘ্রাণে নবান্নের উৎসবে ...।’ কিন্তু ইদানীং বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্য -উপাত্ত বলছে উল্টো কথা– দু একটা ব্যতিক্রম ছাড়া সার্বিক অর্থনীতির অবস্থা খুবই নাজুক; মেলা বসেনি তবে চলছে মাজার এবং মেলা ভাঙার মহোৎসব। এমনকি শ্বেতপত্র প্রকাশনা পরিষদের কর্ণধারও বলে বেরাচ্ছেন যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমান সময়ে সঠিক রাস্তায় হাঁটছে না, নতুন বন্দোবস্তে তো নয়ই পুরদমে পুরনো বন্দোবস্তে। চলছে নাকি বিগত আমলের নীতিমালা, বরাদ্ধ এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণ।


যাই হোক, যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সরকার সফলতার পরিচয় দিয়েছেন সেগুলো হল (ক) অত্যন্ত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির পিঠে চড়ে মূল্যস্ফীতির রাশ কিছুটা টেনে ধরা; (খ) সুবিবেচক নীতিমালা সাপেক্ষে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখা এবং (গ) বেশ কঠোর হস্তে ব্যাংকিং খাতকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে আনার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা। সত্যি কথা বলতে কি, এক অর্থে এই কৃতিত্ব উল্লেখ করার মতো ।



তবে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বিরুপাক্ষ পাল মনে করেন, “ মূল্যস্ফীতির অনমনীয়তা ও বেকারত্বের মতো বিষয়ের কোনো কৌশলগত সমাধানে সরকার তৎপর নয়। সরকার নিজেই তার প্রাথমিক প্রতীজ্ঞা থেকে সরে এসেছে। কথা ছিল অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়া হবে। আওয়ামী লীগ বিরোধী মতকে পরিসর দেয়নি। ওরা যা যা করেছে সেগুলো ‘নতুন’ বাংলাদেশে আর হবে না। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের সাম্প্রতিক সব কাজই অক্কাপ্রাপ্তির আগে আওয়ামী বিধিবিধানের অনুলিপি বলে মনে হচ্ছে। জামায়াত নিষিদ্ধের স্টাইলে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা হলো। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী, নাকি সরকার সমর্থিত সব ছাত্রসংগঠন বরাবরই সন্ত্রাসী, সে কথা ভাবা হলো না। ইতিহাস কী বলে? শুধু ছাত্রলীগ বাদ না দিয়ে সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুরো ছাত্ররাজনীতি বাদ দিলে বোঝা যেত যে সরকার প্রতিশ্রুত রাষ্ট্র সংস্কারে এক ধাপ এগিয়ে গেল। পৃথিবীর যেসব দেশে শিক্ষার মান উন্নত হয়েছে, সেগুলোর কোনোটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টাইলে ছাত্ররাজনীতি হয়? বৈশ্বিক সূচকে তাই তো এত অধঃপতন।“


প্রসঙ্গত বলে রাখা দরকার যে, অর্থশাস্ত্রে ‘নিষিদ্ধ ‘ শব্দটাই অনেকখানি নিষিদ্ধ কারণ এতে করে নিষিদ্ধ বস্তু বা ব্যক্তির প্রতি আগ্রহ বাড়ে ।


তিন.
বিদগ্ধ মহলে জোর আলোচনা এই যে প্রথম থেকেই সরকারের উচিত ছিল কঠোর হস্তে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা। অব্যাহতভাবে একের পর এক কলকারখানায় আগুন লাগিয়ে লুট মালামাল লুট, কর্মচারী পুড়ে মারা, ব্যবসাবাণিজ্য এবং উৎপাদনে নিয়োজিত শিল্প প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেয়া, চাঁদাবাজি , মাস্তানি, দখলদারি চলল বেশ কয়েক মাস। চলছে এখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায়। এমনকি মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রতিপক্ষের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়া, নারীর উপর দুর্বৃত্তদের ঝাঁপিয়ে পড়া এবং কিছু মাওলানার উস্কানিমুলক নারী-বিদ্বেষীবক্তব্য পরিস্থিতি বেসামাল করে রেখেছে অথচ সরকারি আইন শৃঙ্খলা বাহিনি এসব কর্মকাণ্ডের নীরব সাক্ষী হয়ে থাকছে– যেন ওই গানের মতো চেয়ে চেয়ে দেখলাম তুমি জ্বালিয়ে গেলে, আমার বলার কিছু ছিল না, না গো। বলাবাহুল্য যে, দুষ্কৃতিকারীদের এসমস্ত অপকর্ম বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে ভেতরে বাহিরে অনেক খারাপ রেখেছে। বিখ্যাত মানবাধিকার সংথাগুলো বলছে , বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির নাকি অবনতি ঘটছে ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও