জলবায়ু ন্যায়বিচার উপেক্ষিত : কপ ৩০ ও বাংলাদেশের শূন্য প্রাপ্তি

ঢাকা পোষ্ট ড. এ কে এম মাহমুদুল হক প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:৪৬

জলবায়ু পরিবর্তন আজ আর বৈশ্বিক আলোচনার কোনো তাত্ত্বিক বিষয় নয়; বাংলাদেশের জন্য এটি একটি প্রতিদিনের বাস্তবতা। বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের অবদান নগণ্য হলেও জলবায়ু বিপর্যয়ের অভিঘাত সবচেয়ে বেশি বহন করছে এই দেশই। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, তাপপ্রবাহ, খরা ও লবণাক্ততার মতো দুর্যোগ এখন বাংলাদেশের অর্থনীতি, কৃষি ও মানুষের জীবনযাত্রাকে নিয়মিতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। অথচ এই বাস্তবতার বিপরীতে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় বাংলাদেশের প্রাপ্য জলবায়ু ন্যায়বিচার আজও নিশ্চিত হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ শীর্ষে থাকলেও, ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তার অবস্থান বরাবরের মতোই প্রান্তিক।


জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য দায়বদ্ধতা, ন্যায়বিচার ও বৈশ্বিক সংহতির প্রধান মঞ্চ। প্রতিশ্রুতি ছিল, যারা ঐতিহাসিকভাবে দূষণ করেছে তারা ক্ষতিপূরণ দেবে, আর যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা সহায়তা পাবে। কিন্তু বাস্তবে একের পর এক COP (Conference of the Parties) সম্মেলন বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য আশ্বাসের বদলে হতাশাই বাড়িয়েছে। এই ধারাবাহিকতার সর্বশেষ সংযোজন হলো কপ ৩০– যেখানে উচ্চ প্রত্যাশা থাকা সত্ত্বেও জলবায়ু ন্যায়বিচারের প্রশ্নটি আবারও কার্যকরভাবে উপেক্ষিত থেকে গেছে।


জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (UNFCCC) আওতায় গত ১০-২১ নভেম্বর ব্রাজিলের বেলেম শহরে কপ ৩০– এর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে কপ ৩০– কে ঘিরে আলোচনা শুরু হয়েছে তার অনেক আগেই। সম্মেলনের লক্ষ্য, অভিষ্ট, স্থান নির্বাচন এবং সম্ভাব্য কর্মসূচি— সবকিছুই পরিকল্পিত হয়েছে বহুমাত্রিক রাজনৈতিক, পরিবেশগত ও কৌশলগত বিবেচনায়। সব মিলিয়ে এবারের কপ ৩০– কে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল বেশ উচ্চ। কারণ, এটি কেবল আরেকটি জলবায়ু সম্মেলন নয়; বরং বৈশ্বিক জলবায়ু রাজনীতিতে একটি ভিন্ন বার্তা দেওয়ার চেষ্টা।


এবারের সম্মেলনের উল্লেখযোগ্য দিক হলো : প্রথমত, সম্মেলনের জন্য ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকার কোনো উন্নত শহর নির্বাচন করা হয়নি। বরং কপ ৩০– এর জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ব্রাজিলের বেলেম (Belém) শহর— যার পেছনে রয়েছে গভীর প্রতীকী ও কৌশলগত তাৎপর্য। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা নিজেই এই স্থান নির্বাচনের পক্ষে জোরালো ভূমিকা পালন করেন। বেলেম শহর পরিচিত “আমাজনের প্রবেশদ্বার” হিসেবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাজন রেইনফরেস্ট বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ‘কার্বন সিঙ্ক’— যা বিপুল পরিমাণ কার্বন শোষণ করে বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।


এই বিশাল বনভূমির একেবারে সন্নিকটে সম্মেলনের আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বনেতাদের সামনে একটি স্পষ্ট বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে— প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা কেবল নীতিগত অঙ্গীকারের বিষয় নয়, বরং এটি অস্তিত্বের প্রশ্ন। বলা যায়, এর মাধ্যমে আমাজনকে বিশ্ব জলবায়ু রাজনীতির কেন্দ্রে নিয়ে আসার একটি সচেতন প্রচেষ্টা করা হয়েছে। প্রকৃতির সান্নিধ্যে বসে প্রকৃতির সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা— এই প্রতীকী বার্তার কারণেই অনেকেই কপ ৩০– কে আখ্যা দিচ্ছেন “ফরেস্ট কপ” নামে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও