রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের জন্য কে কাজ করবে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলমত–নির্বিশেষে এক হয়ে কাজ করার যে অঙ্গীকার আমরা দেখেছিলাম, তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা কতটা সাফল্য পেয়েছি, তা একটি ভাবনার বিষয়। গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে আমরা যে অভাবনীয় ঐক্য গড়ে উঠতে দেখেছি, এক বছর পার হয়ে যাওয়ার পর আমরা সেই ঐক্য কি ধরে রাখতে পেরেছি? অথচ দেশ গড়ার যে ঐতিহাসিক সম্ভাবনা এই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে, তাকে পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানোর জন্য দলমত–নির্বিশেষে আবারও সেই ঐক্যের প্রয়োজন।
আমরা দেখতে পাচ্ছি যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংস্কারবিষয়ক নানা রকম প্রস্তাবিত বিষয়কে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এর আগে কমিশনের বৈঠকগুলো মূলত রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে পরিচালিত হয়েছে। আশার কথা হলো, চলমান সময়ে কমিশন সেই আলাপ-আলোচনাকে জনগণের সামনে নিয়ে আসছে। এর মধ্য দিয়ে দেশের সাধারণ জনগণও এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকছে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোজন, যা আমরা এর আগে তেমন একটা দেখতে পাইনি। কোনো একটি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর প্রক্রিয়ায় মতবিভেদ থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। ভিন্নমত থেকে একমত ও দ্বিমত হওয়ার একটি দ্বান্দ্বিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা হয়তো একটি সহনশীল ও যৌক্তিক মতৈক্যে পৌঁছাব। কিন্তু তার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর একটি সহনশীল মানসিকতা ও রাজনৈতিক চর্চার প্রয়োজন। সেই সহনশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও চর্চার অভ্যাস করে তোলার জন্য যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা প্রয়োজন, তার উদ্যোগ কে নেবে?