You have reached your daily news limit

Please log in to continue


দেখেশুনে কুরবানির গরু কিনুন

পবিত্র ঈদুল আজহার মূল আকর্ষণ হলো চতুষ্পদ জন্তু কুরবানি দেওয়া। গত বছর দেশে কুরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭। এর মধ্যে ১ কোটি ৪ লাখ ৪১ হাজার ৮১২টি পশু কুরবানি দেওয়া হয়েছিল। কুরবানি দেওয়া পশুর মধ্যে ৫০ শতাংশ ছাগল, ৪৭ শতাংশ গরু, ১ শতাংশ মহিষ, ১ শতাংশ ভেড়া এবং ১ শতাংশ অন্যান্য পশু ছিল। এককভাবে অনেকেই ছাগল কুরবানি দেওয়ায় ছাগলের চাহিদা বেশি। তবে যৌথভাবে কুরবানির ক্ষেত্রে গরু সবার প্রথম পছন্দ।

দেশে সাধারণত তিন টাইপের গরু দেখা যায়-১. দেশি, ২. প্রিমিয়াম বা আঞ্চলিক ও ৩. শাহিওয়াল ক্রস। গরুর ধরন যাই হোক না কেন, যদি গরুটির মুখের নিচের চোয়ালে দুধদাঁতের পাশাপাশি দেখা যায় কোদালের মতো দুটি স্থায়ী দাঁত, যা ‘ইনসিসর’ দাঁত নামে অধিক পরিচিত, তবে সেই গরুটি কুরবানির জন্য পারফেক্ট। পাশাপাশি ক্রয়ের আগে গরুটির শিঙের গোড়া দেখতে হবে, যদি শিঙের গোড়া মোটা হয়, তবে তা কুরবানির জন্য উপযুক্ত। মনে রাখতে হবে, কিছু গরু দেখতে বড়সড় মনে হলেও যদি ‘ইনসিসর’ দাঁত না গজায় বা শিঙের কাঠামো চিকন ও লম্বা থাকে, তবে তা কোনো অবস্থায় কুরবানির জন্য সিলেক্ট করা যাবে না।

চলুন একটু পরিচিত হই কোন গরুটি দেশি, আঞ্চলিক বা শাহিওয়াল ক্রস। মনে রাখবেন, দেশি গরু যে কোনো রঙের হতে পারে। গরুর মধ্যে আঞ্চলিক জাত হিসাবে মুন্সীগঞ্জের ‘মিরকাদিম’ (সাদা রঙের), পাবনা ও সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের ‘পাবনা ক্যাটল’ (সাদা বা ছাই রঙের), বগুড়ার সারিয়াকান্দির ‘নর্দান ব্ল্যাক গ্রে’ (ধূসর কালো বা ছাই রঙের), চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির রেড চিটাগং ক্যাটল (লাল রঙের), মোহনগঞ্জ হাওড় অঞ্চলের ব্ল্যাক ক্যাটল (কালো রঙের) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। দেশি বা আঞ্চলিক জাতগুলোর দুই দাঁতের একটি ষাঁড় গরুর লাইভ ওয়েট বা জীবন্ত ওজন ২০০ থেকে ৬০০ কেজিতে ওঠানামা করে। তাই অনেকেই দেশি বা শাহিওয়াল ক্রসের ভেতর কনফিউজড হতে পারেন। গ্রামের বাজারগুলোয় দেশি ছোট বা মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। দেশি বা প্রিমিয়াম গরু চিনবেন কীভাবে? দেশি বা প্রিমিয়াম গরুর কান ছোট, মাথা ছোট, কপাল সমান, পাগুলো তুলনামূলকভাবে ছোট, গলকম্বল নেই বললেই চলে (থাকলেও সামান্য); বডি কম্প্যাক্ট ও স্কয়ার লুক এবং নাভাল ফ্ল্যাপ বা ঝুলানো নাভি নেই। আর শাহিওয়াল ক্রস গরু চেনার উপায়-এসব গরুর কান বড়, মাথা বড়, কপাল একটু কার্র্ভ, গলকম্বল বড়, পেট বড়, ঝুলানো নাভি অনেক দূর থেকে দেখা যাবে এবং চামড়া বেশ মোটা থাকে। আমাদের দেশে শাহিওয়ালের সঙ্গে ক্রস হয়েছে এমন গরু কুরবানিতে ক্রস গরু হিসাবে বেশি বেচাকেনা হয়। এসব গরু বাদামি সাদা রঙের হয়ে থাকে, যাদের দৈহিক ওজন ৫০০-৭০০ কেজি। এসব ক্রস গরুর চাহিদা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে বেশি। গরুগুলোর খাবারের উপাদান ও মোটাতাজাকরণের কৌশলের ওপর নির্ভর করে কী পরিমাণ মাংস পাওয়া যাবে। দেখা যায়, দেশি গরু শুকনা খড় ও সবুজ ঘাস বা সাইলেজের ওপর নির্ভর করে লালনপালন করা হয় বিধায় এদের মাংসে চর্বি থাকে না। ফলে ছোট সাইজের কুরবানিযোগ্য একটি খাঁটি দেশি গরু তার দৈহিক ওজনের মাত্র ৫২ শতাংশ মাংস দিতে সক্ষম।

পাশাপাশি গরুটি যদি আঞ্চলিক জাতের হয়, তবে ৫৭ থেকে ৬০ শতাংশ মাংস পাওয়া যায়; কারণ এসব গরুর খাদ্যে সবুজ ঘাস ও দানাদার উপাদান থাকে এবং তাদের ৪ থেকে ৬ মাস ফ্যাটেনিং করা হয়। উল্লেখ্য, প্রিমিয়াম গরুর ফ্যাটেনিং সময়ে দানাদার খাদ্য ২৫ শতাংশের বেশি দেওয়া হয় না। তবে শাহিওয়াল ক্রস গরুর বডির সাইজ বেশি হওয়ায় তাদের ফ্যাটেনিং করানো হয় ৫০:৫০, অর্থাৎ সবুজ ও দানাদার খাদ্য সমান সমান থাকে। এসব গরুর পেট বড় ও চামড়া মোটা হওয়ায় মাংস কম পাওয়া যায়; যেমন: ৫৫ শতাংশের বেশি মাংস পাওয়া দুষ্কর। প্রতিবছর বাজারে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার গরুর চাহিদা বেশি। কারণ, জনপ্রতি ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে সাতজন মিলে গরু কুরবানি দিলে ১৫ থেকে ২২ কেজি মাংস পাওয়া যায়। অন্যদিকে ক্রস গরু কুরবানি দিলে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হয় এবং এক থেকে দেড় মন মাংস পাওয়া যায়। জেনে রাখবেন, গরুর ফ্যাটেনিং সময়কালে অনেক খামারি কৃত্রিমভাবে মোটাতাজাকরণে ব্যবহৃত নিষিদ্ধ ভেটেরিনারি ড্রাগস, যেমন, স্টেরয়েডাল গ্রোথ হরমোন বা ইঞ্জেকশন দিয়ে থাকে। অসাধু খামারিরা তাদের গরুর মাংসপেশিতে ডেক্সামেথাসন ইঞ্জেকশন বা খাবারের সঙ্গে স্টেরয়েড গ্রুপের বিভিন্ন ট্যাবলেট মিশিয়ে থাকে। উদ্বেগের বিষয় হলো, বেশির ভাগ খামারি অল্পসময়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গরুগুলোকে ওইসব ইঞ্জেকশন বা স্টেরয়েড ড্রাগসের মাল্টিপল ডোজ প্রদান করে এবং তারা কোনো ধরনের উইথড্রোয়াল পিরিয়ড মেনে চলে না। যদিও এসব ড্রাগস পুশ করার পর অন্তত ১৪-২১ দিন বা ৪৫ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় বিক্রি করার জন্য, কিন্তু খামারিরা মাল্টিপুল ড্রাগস ডোজ দিয়েই বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। ফলে এসব গরুর মাংসে ড্রাগস রেসিডিউ থেকে যায় এবং ওই মাংস ভক্ষণ মানবদেহের জন্য ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। নিষিদ্ধ ঘোষিত ড্রাগস দিয়ে আপনার গরুটিই মোটাতাজা হয়েছে কি না, তা বুঝবেন কী করে?

এসব গরুর মুখের সামনে ঘাস ধরলেও নিজে থেকে সহজেই তার জিহ্বা দিয়ে খাবার টেনে নেবে না। এসব গরুর শরীর স্বাভাবিকের (৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) চেয়ে গরম থাকে। এদের নাকের ওপরের অংশ সর্বদা ড্রাই থাকে। এসব গরুর মুখ থেকে অতিরিক্ত লালা পড়তে থাকে এবং ওই লালা ফেনাযুক্ত বা ফেনা ছাড়াও হতে পারে। তারা সারাক্ষণ হাঁপাতে থাকে এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় অস্বাভাবিক শব্দ করে। এসব গরুর গা ‘পানি নামা’ রোগীর শরীরের মতো ফুলে থাকে। গরুগুলো তার বয়সের তুলনায় অস্বাভাবিক মোটা দেখায়, সহজে হাঁটতে চায় না এবং বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে না থেকে বসে থাকতে চায়। কারণ, গরুগুলোর রানের মাংসে বারংবার ডেক্সামেথাসন ইঞ্জেকশন পুশ করায় ওইসব গরুর রান অন্য গরুর রানের চেয়ে বেশি মাংসযুক্ত দেখা যাবে। এসব গরুর বেলায় মনে হবে মাংস সারা শরীরে সমানভাবে না থেকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থোকায় থোকায় আছে। স্টেরয়েড প্রয়োগ করে গরু মোটাতাজা করলে গরুর প্রস্রাব বন্ধ হয়ে শরীরে অতিরিক্ত পানি জমে যায়; ফলে শরীর অতিরিক্ত ফাঁপা মনে হবে। তাই আঙুল দিয়ে গরুর শরীরে চাপ দিলে তা দেবে গিয়ে গর্ত হয়ে যায় এবং সেই গর্তটি আবারও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে লম্বা সময় নেয়। ন্যাচারালি মোটাতাজা করা গরুর ক্ষেত্রে উপরের কোনো লক্ষণই পরিলক্ষিত হবে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন