গত ৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে অনুষ্ঠিত হলো ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন। শীর্ষ সম্মেলনের আগে ২ এপ্রিল বিমসটেকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এবং ৩ এপ্রিল বিমসটেকের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদস্য সাত দেশের সরকারপ্রধানরা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার জন্য ৩ এপ্রিল সকালেই ব্যাঙ্ককে পৌঁছেন এবং সম্মেলন শেষে ৪ এপ্রিল রাতে দেশে ফিরে আসেন।
শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী নেতাদের সঙ্গেও বেশ কয়েকটি বৈঠকে তিনি মিলিত হন। সম্মেলনে আগামী দুই বছরের জন্য বাংলাদেশকে বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং প্রধান উপদেষ্টা তা গ্রহণ করেন। তিনি বিমসটেক সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের নেতৃত্বে আঞ্চলিক সহযোগিতা নতুন মাত্রা পাবে।
দুই.
‘সমৃদ্ধ, সহিষ্ণু এবং উন্মুক্ত বিমসটেক’ ছিল এবারের শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয়। সম্মেলনের লক্ষ্য ছিল নিরাপত্তা ও উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ একত্রে মোকাবেলা করার জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা। উপস্থিত নেতারা তাঁদের বিবৃতিতে বিমসটেকের প্রতি তাঁদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার সঙ্গে সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতার অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত এবং সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ও উদ্যোগ উপস্থাপন করেন। তাঁরা আন্ত আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সংযোগ, পর্যটন, সংস্কৃতি বিনিময়, জলবায়ু কর্মকাণ্ড, সবুজ ও নবায়নযোগ্য শক্তি, টেকসই কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তা বাড়াতে অগ্রগতি অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
সম্মেলনে গৃহীত ব্যাঙ্কক ঘোষণাপত্রে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার জন্য তাঁদের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার রূপরেখার উল্লেখ রয়েছে। একই সঙ্গে বিমসটেকের দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ভবিষ্যতে সহযোগিতার জন্য একটি বিস্তৃত ও বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ ব্যাঙ্কক ভিশন ২০৩০ গৃহীত হয়।
শীর্ষ সম্মেলনে এই অঞ্চলে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, যোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং মানব নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে ব্যাঙ্কক ভিশনসহ যে ছয়টি দলিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো : (১) ব্যাঙ্কক ভিশনটি ২০৩০ সালের মধ্যে বিমসটেককে আরো সমৃদ্ধ, শক্তিশালী এবং উন্মুক্ত করে তোলার জন্য প্রথম একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জনগণের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি এবং নতুন সম্ভাবনা অনুসন্ধানকে লালন করার কথা বলা হয়েছে। (২) ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন ঘোষণাপত্রে বিমসটেক এবং ব্যাঙ্কক ভিশন ২০৩০-এর প্রতি নেতাদের দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করা হয়েছে।