১১ বছরের মেয়েটিকে কি ‘বাঁচতেও’ দেব না আমরা

প্রথম আলো রাফসান গালিব প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৫০

অবশেষে পাওয়া গেছে ১১ বছরের মেয়েটিকে। কয়েক দিন ধরে মেয়েটির নিখোঁজ সংবাদে ছেয়ে গিয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। অসংখ্য মানুষের মনে উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তা ভর করেছিল—মেয়েটি কোথায় গেল, কীভাবে হারাল, কী হলো তার, কোনো অঘটন ঘটেছে কি না?


মানুষ হিসেবে এই উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তাই স্বাভাবিক। কারণ, এমন মেয়ের মতো তো কারও না কারও সন্তান আছে বা বোন আছে। ফলে এভাবে কোনো বাচ্চা হারিয়ে গেলে আমাদের দুশ্চিন্তাই হয়। তা ছাড়া মেয়েটির মা ক্যানসারে আক্রান্ত। এমন পরিস্থিতিতে সন্তান নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনা আরও বেশি মর্মস্পর্শী হয়ে ওঠে।


মনে আছে পরির মতো শিশু সেই মুনতাহার কথা? গত নভেম্বরে সিলেটের কানাইঘাটের পাঁচ বছর বয়সী বাচ্চাটির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার খোঁজে দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। অনেকে তার সন্ধানে স্বর্ণের চেইন উপহার, লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছিলেন; কিন্তু হায়, বাড়ির পাশেই ডোবায় তার লাশ পাওয়া গিয়েছিল।


যাক, রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে হারিয়ে যাওয়া মেয়েটি নিরাপদেই ফিরে এসেছে, মানে তাকে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী উদ্ধার করেছে। আজকে এর চেয়ে স্বস্তিদায়ক খবর আর কী হতে পারে।


কিন্তু যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসংখ্য মানুষ তাকে নিরাপদে ফেরত পেতে উদ্‌গ্রীব ছিল, সেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই অনেক মানুষের আচরণ দেখে যে কারও মনে হতে পারে, মেয়েটিকে নিরাপদে বা জীবিত ফিরে এসেই বরং ‘অন্যায়’ করেছে। কারণ, মেয়েটি আসলে হারিয়ে যায়নি বরং পালিয়েছিল এক ছেলেবন্ধুর সঙ্গে, যাকে তার কথিত প্রেমিক বলে এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পারছি।



ব্যস, এ বিষয় জানার পর গোটা দৃশ্যপটই যেন বদলে গেল। এই বয়সে একটা মেয়ে কীভাবে প্রেম করতে পারে, আবার প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়েও গেল? কী যুগ এল রে বাবা! বাসায় ক্যানসারে আক্রান্ত মায়ের কথা একটুও ভাবল না? আমাদের কালে আমরা এই এই এই করতাম আর এখনকার বাচ্চা বাচ্চা মেয়ে প্রেম করে পালিয়ে যায়—এমন হাজারো প্রশ্নে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জর্জরিত হচ্ছে মেয়েটি। রীতিমতো তাকে অপরাধের কাঠগড়ায় তুলে ফেলা হয়েছে।


আরও অবাক লাগে, অনেকে এ সুযোগে বাল্যবিয়ের যৌক্তিকতাও হাজির করছেন। পরিবার, সমাজ ও বর্তমান সময়ের জটিল বাস্তবতায় তাঁরা সন্তান লালনপালন ও শিশুর বেড়ে ওঠায় নানা সংকটের সমাধান খুঁজছেন শুধু বিয়ের মাধ্যমে। বিয়ে যেন শিশুর পুতুল খেলা!


ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া ১১ বছরের একটি মেয়ে, বাচ্চা মেয়েই তো। এখনকার বাচ্চারা অনেক কিছুই বুঝে, কিন্তু পরিবার–সমাজ বা দুনিয়ার বাস্তবতা এবং প্রেম বা নারী-পুরুষের সম্পর্ক নিয়ে কতটুকুই–বা বোঝাপড়া থাকার কথা তার?


আর কৈশোর বা বয়ঃসন্ধির এই সময় যেকোনো বাচ্চার জন্য জটিল। এই বয়সেই তো বাচ্চারা ভুল করে। হাসতে খেলতে বা অ্যাডভেঞ্চারাস হয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে, তার বিপদ সম্পর্কে বুঝে উঠতে পারে না। মেয়েটির ক্ষেত্রেও সেটি ঘটেছে বলতেই হয়।


অন্যদিকে মায়ের দুরারোগ্য ব্যাধি, পরিবারের ওপর ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এমন বাচ্চার প্রতি খেয়াল রাখার সুযোগই–বা কোথায়! তখন তো এমন অঘটন ঘটা একেবারেই অস্বাভাবিক না। মেয়েটি নিরাপদে ফিরে এসেছে, এটিই তো বড় আনন্দের বিষয় হওয়ার কথা। কিন্তু না, অনেক মানুষ তাকে নিয়ে বসিয়ে ফেলেছে সোশ্যাল ট্রায়াল। করছে ট্রল, বানাচ্ছে মিম। শুধু তা–ই নয়, নোংরা ও কুশ্রী ভাষায় তাকে আক্রমণও করা হচ্ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও