বাংলা কি অনাদৃতই থেকে যাবে
দারিদ্র্য যদি খুঁজি তাও আছে, অসাম্য খুঁজলে তাও—আমাদের সংস্কৃতিতে এই দুই উপাদানের কোনো অভাব নেই। এবং দারিদ্র্য ও অসাম্যকে এমনিতে যতটা পরস্পর নিকটবর্তী মনে হয়, আসলে তারা তার চেয়েও বেশি ঘনিষ্ঠ। বললে ভুল হবে না মোটেই যে অসাম্যই দারিদ্র্যের মূল কারণ। অসাম্য যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে ধনীতে ও দরিদ্রে, শহরে ও গ্রামে, শিক্ষিতে ও অশিক্ষিতে, সেই বিভেদই দারিদ্র্য সৃষ্টির জন্য দায়ী—কী অর্থনীতিতে, কী সংস্কৃতিতে, যেমন মূল কাঠামোতে তেমনি ওপরকাঠামোতে।
অর্থনৈতিক দারিদ্র্যের পক্ষে সাংস্কৃতিক দারিদ্র্যের কারণ হওয়ার পথে কোনো প্রতিবন্ধক নেই। এ কথাও অবশ্যি সত্য যে টাকা হাতে এলেই যে সংস্কৃতিতে উত্কর্ষ আসবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। মধ্যপ্রাচ্যের তেল-ধনী কোনো কোনো দেশ এ বিষয়ে সরলরৈখিক সমীকরণ টানার বিপক্ষে রায় দিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে যেতে হবে কেন, আমাদের হাতের কাছেই হঠাৎ ধনী পরিবার খুঁজলে পাওয়া যাবে, যারা ওপরে যত বেড়েছে হৃদয়ে তত বাড়েনি।