নতুন বছরে অর্থনীতির সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ

প্রথম আলো ড. সেলিম রায়হান প্রকাশিত: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩৭

বাংলাদেশ যখন একটি নতুন বছরে প্রবেশ করছে এবং চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতাগুলোকে গভীরভাবে মূল্যায়ন করার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই মূল্যায়ন শুধু আর্থিক নীতি নির্ধারণে নয়, বরং সামগ্রিক অর্থনৈতিক কাঠামো ও কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্যও অপরিহার্য।


বর্তমান অর্থনৈতিক পটভূমিতে এমন অনেক জটিল সমস্যা বিদ্যমান, যা সমন্বিত ও কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে সমাধান করা প্রয়োজন। মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট, বিনিয়োগের স্থবিরতা এবং শ্রমবাজারে অস্থিরতা—এই সব কটিই একটি সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে সমাধান দাবি করে। 


আসন্ন জাতীয় বাজেটের প্রস্তুতির সময় অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো নির্ধারণ করার পাশাপাশি একটি ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে রাজস্ব নীতি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, শিল্পনীতি এবং বাণিজ্যব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। বাংলাদেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা, যেখানে শুধু মূল্যস্ফীতি বা বাণিজ্য ভারসাম্যের মতো স্বল্পমেয়াদি সমস্যা নয়, বরং বৃহত্তর কাঠামোগত অসামঞ্জস্যকেও সমাধান করা হবে।


বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের মূল কারণ হলো অব্যাহত মূল্যস্ফীতি, যা এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক বিগত দুই বছরে বারবার সুদের হার বাড়ালেও মূল্যস্ফীতির ওপর তার খুব একটা প্রভাব পড়েনি। এর ফলে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যর্থ হয়েছে, যেখানে প্রতিবেশী দেশগুলো মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে।



পূর্ববর্তী সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিল, তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও এ বিষয়ে এখনো কোনো উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখাতে পারেনি।


এ ব্যর্থতার মূল কারণ হলো মুদ্রানীতি, রাজস্বনীতি এবং অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থাপনার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। নীতিনির্ধারকদের এখন বুঝতে হবে যে একটি সমন্বিত কৌশল ছাড়া এই পদক্ষেপগুলো বিচ্ছিন্ন এবং অকার্যকর থেকে যায়। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীকে সামাজিক সুরক্ষার মাধ্যমে সহায়তা প্রদান অগ্রাধিকারের শীর্ষে থাকা উচিত।


বাংলাদেশের রপ্তানি এবং প্রবাসী আয় কিছুটা আশার সঞ্চার করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই খাতগুলোর ইতিবাচক প্রবণতা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে কিছুটা উন্নতি সাধন করেছে, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। তবে এ সাফল্য ধরে রাখা এবং দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব নিশ্চিত করার জন্য একটি সুসংহত এবং সমন্বিত নীতি গ্রহণ করতে হবে।


রপ্তানি খাত, বিশেষত তৈরি পোশাকশিল্প, বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে। কিন্তু শ্রম–অসন্তোষ, কারখানার অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন এবং শ্রমনিরাপত্তাসংক্রান্ত সমস্যাগুলো এই খাতের সুষ্ঠু কার্যক্রমের জন্য একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব সমস্যার কার্যকর সমাধান করা না হলে, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি এবং এর মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এর জন্য প্রয়োজন শ্রমিক অধিকার সুরক্ষা, সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং শিল্প সম্পর্ক ব্যবস্থাপনায় কার্যকর সংস্কার।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও