ব্যবসা-বাণিজ্যে বিদ্যমান অস্থিরতা কাটাতে হবে

কালের কণ্ঠ ড. সুলতান মাহমুদ রানা প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭

কয়েক দিন থেকে গণমাধ্যমে ব্যবসায়ীদের দুর্দশা নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন চোখে পড়েছে। গত ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর দেশের বেশ কিছু শিল্পগোষ্ঠীর কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে কোনো শিল্প গড়ে উঠছে না। ব্যবসায়ীদের অনেকেই ঋণখেলাপি হচ্ছেন।

গত ৩০ নভেম্বর ঢাকায় বাণিজ্য সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টার উপস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা বলেন, তিন-চার মাসে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সফল হয়নি অন্তর্বর্তী সরকার। এমনকি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সামনে ব্যবসায়ীদের পেটানো হচ্ছে বলেও তাদের কেউ কেউ মন্তব্য করেন।


বিভিন্ন কারণে বর্তমান সময়ে ব্যবসায় যে মন্দা চলছে—এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। বড় ব্যবসায়ী ছাড়াও ছোট ব্যবসায়ীদের অবস্থাও খুব বেশি ভালো না। ব্যবসার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা-অনিশ্চয়তা বেড়েই চলেছে। এবং তা জনমনে অসন্তোষ ও শঙ্কা তৈরি করছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা এবং মালিকদের নামে মামলা হওয়ায় তারা অনেকেই পলাতক।


গত কয়েক মাসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সক্রিয়তার অভাবে সারা দেশে যেভাবে চুরি ও ডাকাতি হয়েছে, তা সত্যি দেশের জন্য আশঙ্কাজনক।

এখন কিছুটা চুরি-ডাকাতি কিংবা লুটপাট কমে এলেও অন্য অনেক ক্ষেত্রে অস্থিতিশীল পরিবেশ চোখে পড়ার মতো। সরকারের পক্ষ থেকে এসব বন্ধে তৎপরতা থাকলেও এখনো পুরাপুরি নিয়ন্ত্রণে নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনরে নেতারা এ বিষয়ে যথেষ্ট সজাগ রয়েছেন, সেটি তাদের বক্তব্য-বিবৃতি দেখলে স্পষ্ট ধারণা করা যায়। আমরা দেখেছিলাম জুলাই-আগস্ট মাসে যেসব ছাত্র আন্দোলন করেছিল, তাদেরই আবার কিছু অংশ এখন বিভিন্ন দাবিতে রাস্তায় নামছে। কিন্তু বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সব নৈরাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।




অনেকেই মন্তব্য করছে যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কার্যক্রম এখনো পুরোপুরি সক্রিয় হয়নি, যদিও সব ক্ষেত্রেই সরকার ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করেছে। তার পরও কেন হচ্ছে না, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সক্রিয় করার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও দিয়ে যাচ্ছেন। আবার আমার কাছে মনে হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীও যথেষ্ট তৎপর রয়েছে তাদের দায়িত্বের বিষয়ে। এর পরও পরিস্থিতি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সন্তোষজনক না হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। প্রায় প্রতিটি ভোগ্য পণ্যের মূল্য বেশ বাড়তি। বাজারের বেশির ভাগ ক্রেতার আক্ষেপ, কষ্ট এবং দীর্ঘশ্বাস চোখে পড়ার মতো, যদিও স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে পূর্ণ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদেশের প্রবেশ করার কথা ২০২৬ সালে, তার পরও দেশে অনেক মানুষ রয়েছে দারিদ্র্য ও অতিদরিদ্র অবস্থায়। দৈনিক, সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক আয় দিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে অনেকের। ধনীরা টের না পেলেও মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা অনেকটা দিশাহারা হতে চলেছে।


অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের ধারণা, এক-এগারোর পরিস্থিতির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি একই পন্থায় শিল্প খাতে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। গত ৪ ডিসেম্বর কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে জানতে পারলাম যে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাসে বড় বাঁকবদল হওয়ায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ ক্রমেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। এমনকি এখনো সাধারণ মানুষ একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের একজন এক-এগারোর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন, ‘বিভিন্ন শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তারা কারাগারে থাকায় তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ধস নামতে থাকে। খেলাপি হতে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান। মাসের পর মাস বকেয়া পড়ে কর্মীদের বেতন। ওই অবস্থায় অনেকেই কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হন। আবার কোনো কোনো কর্মী স্বেচ্ছায় চাকরিতে ইস্তফা দেন। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়ায় বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ শতাংশেরও বেশি।’


সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক-এগারোর এক গবেষণার তথ্য মতে, ‘ওই সময় চাল, আটা, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নতুন করে দুই কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৫ শতাংশ।’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও