![](https://media.priyo.com/img/500x/https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/11/02/Untitled-1-6725425d6a3c2.jpg)
এই বেহাল বাজারের কোনো অর্থনীতি নেই
বয়স একটু হয়েছে বলতেই হয়। শরীরের পরিবর্তন লক্ষ করলেই বোঝা যায়। বোঝা যায় আমাকে ছেড়ে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চলে যাচ্ছে, কিছু কিছু নষ্ট হচ্ছে। এই যেমন-মাথার চুল অর্ধেক নেই। কালো চুল সাদা হচ্ছে। এসব যাচ্ছে, ছাড়ছে, আমাকে কিন্তু ছাড়ছে না মূল্যস্ফীতি। সেই কবে থেকে মূল্যস্ফীতির কথা লিখছি, লিখছি কাঁচামরিচের দামের কথা, আজও তা লিখে যাচ্ছি। মরিচের মূল্য, দ্রব্যমূল্য আমাকে ছাড়ছে না।
বস্তুত কাউকে ছাড়ছে না। সেই ১৯৭২-৭৪ সালের কথা। সদ্য স্বাধীন দেশ। চারদিকে অভাব। ৯ মাস খেতে কোনো ফসল হয়নি। আমদানি-রপ্তানি বিঘ্নিত। ডলার নেই। তেলের দামে ঊর্র্ধ্বগতি। দেখা গেল কাঁচামরিচের দাম উঠেছে সের প্রতি ১৬ টাকায়। ভাবা যায়, তখনকার ১৬ টাকার কথা! একটা ইলিশ পাওয়া যায় ১০-১৫ টাকায়। সবার মাথায় হাত। শেষ পর্যন্ত কাঁচামরিচ খাব ১৬ টাকা কেজিতে (তখনকার সেরে)। খেতেই হলো। আমি একটি নামকরা কাগজে অর্থনীতির পাতার সম্পাদক। শিরোনাম করলাম। ‘কাঁচামরিচের বাজারে আগুন’। এটা পড়ে স্বর্গীয় জহুর হুসেন চৌধুরী বললেন, এই মিঞা ১৬ টাকার এই শিরোনাম ৩০ টাকা হলে কী করবে?
তখন কি বলবে কাঁচামরিচের বাজারে ‘পেট্রোল’। আমি শুনে অবাক, আজ আর অবাক নই। এবার কাঁচামরিচ কিনলাম ৩০০-৪০০-৫০০-৬০০ টাকা কেজিতে। ভাগ্যের কী পরিহাস! শুধু কাঁচামরিচ নয়, প্রতিটি জিনিসের দাম এখনো ঊর্ধ্বমুখী। পেঁয়াজের দাম আবার বাড়তি, চালের দাম বাড়ছে। সবজির বাজারে সামান্য একটু স্বস্তি। শীতের ফসল আসছে। এভাবে দেখা যাচ্ছে-হার্ট যাচ্ছে, লাং যাচ্ছে, চোখের পাওয়ার কমছে, গায়ের চামড়ায় ভাঁজ পড়ছে-সবই ছাড়ছে আমাকে; কিন্তু স্বাধীনতার ৫০-৫২ বছরেও মূল্যস্ফীতি আমাকে ছাড়ছে না। বস্তুত কাউকে না। মূল্যস্ফীতি ঘটছে তো ঘটছেই। পুরোনো সরকার গেছে। নতুন সরকারের আমলেও। মানুষ রীতিমতো ক্ষুব্ধ। কেন এখন এমন হবে? এখন তো সিন্ডিকেট নেই, চাঁদাবাজি নেই, তার ওপর রয়েছে বিশিষ্টজনের উপদেষ্টা পরিষদ।