বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ

সমকাল মো. শহীদ উল্লা খন্দকার প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৪, ২২:০৮

বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত জীবনী: হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালি জাতির ত্রাণকর্তা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ লুৎফর রহমান ও মাতা মোসাম্মৎ সাহারা খাতুনের চার কন্যা ও দুই পুত্রের মধ্যে তৃতীয় সন্তান ছিলেন শেখ মুজিব। বাবা মা তাঁকে ডাকতেন খোকা বলে। অজপাড়াগাঁয়ের সেই খোকাই আজকের বাঙালি জাতির মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শৈশবেই তিনি সাধারণ মানুষের অধিকার সম্পর্কে ছিলেন সচেতন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সাধারণ মানুষের ন্যায্য দাবি, অধিকার আদায়ে রাজনীতির কোনো বিকল্প নেই। তাই স্কুল জীবনেই তিনি রাজনীতি শুরু করেন এবং সান্নিধ্য লাভ করেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মতো মহান নেতাদের এবং দাবী জানান ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠার। ১৯৪৭-১৯৭১ পর্যন্ত প্রতিদিনই ছিল তার কঠিন সংগ্রামের জীবন। পশ্চিম পাকিস্তানী শাসন শোষণ ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য তিনি নিরলস সংগ্রাম করে গিয়েছেন। এ সংগ্রামের পথ মোটেও সহজ ছিল না। সাধারণ মানুষের অধিকার আদায় করতে গিয়ে তার স্বল্প জীবনের অধিকাংশ সময়ই কেটে গেছে জেলখানার অন্ধকারে। তবুও মানুষের কথা তিনি ভোলেননি। সংগ্রামের পথ থেকে তিনি সরে আসেননি। আপোষহীন চিত্তে সারাজীবন উৎসর্গ করে গিয়েছেন মানুষের জন্য।


বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বঙ্গবন্ধুর জীবনে জনগণই ছিলেন অন্তপ্রাণ। কথায় কথায় তিনি বলতেন আমার মানুষ, আমার বাঙালি, আমার গরীব দুঃখী অর্থাৎ এদেশের প্রতিটি মানুষকে তিনি নিজের অন্তরে ঠাঁই দিয়েছেন। জনগণের মুখে হাসি ফুটানোই ছিল তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা – এই মৌলিক অধিকারগুলো পূরণের মাধ্যমে বাংলার মানুষের উন্নত জীবন প্রতিষ্ঠাই ছিল তাঁর আদর্শ। যার প্রমাণস্বরূপ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫নং অনুচ্ছেদে রয়েছে মৌলিক চাহিদা পূরণের নিশ্চয়তা। বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক মুক্তিই ছিল তাঁর জীবনের স্বপ্ন। আর এই স্বপ্নই হলো তাঁর আদর্শের বহিঃপ্রকাশ। তাঁর স্বপ্ন ছিল বাঙালি জাতির নিজস্ব ভূমিসত্ত্বা থাকবে, যে ভূমিতে বাঙালি তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারবে, তার নীতি সে নিজেই পরিচালনা করতে পারবে। জনগণকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়া, জনগণকে ক্ষমতায়ন করা, মানুষের জন্য কাজ করা, নিঃস্বার্থভাবে মানুষের জন্য জীবনকে বিলিয়ে দেয়া- এগুলো হলো জাতির পিতার অন্যতম আদর্শ। যে কারণে তিনি জনগণের দাবী আদায়ের জন্য এক আদর্শবাদী আত্মত্যাগী নেতা হিসেবে আজীবন সংগ্রাম করে গিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনে সততাই ছিল মূল চালিকাশক্তি। এই সততার শিক্ষা তিনি পেয়েছেন পরিবার থেকে। বঙ্গবন্ধু তাঁর বাবার দেয়া উপদেশ “Sincerity of Purpose & Honesty Of Purpose” মেনেই সারাজীবন রাজনীতি করে গেছেন।


স্নেহময়ী বঙ্গবন্ধু: বঙ্গবন্ধু এদেশের জনগণকে এতোটাই ভালোবাসতেন যে প্রখ্যাত সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট এর প্রশ্নোত্তরে বলেন, “আমার সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে, আমি আমার জনগণকে ভালোবাসি। আর আমার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে যে, আমি আমার জনগণকে অত্যাধিক ভালোবাসি”। তিনি দেশের সাধারণ মানুষ, যারা আজও দুঃখী, যারা আজও নিরন্তর সংগ্রাম করে বেঁচে আছে, তাদের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখকে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির উপজীব্য করার জন্য শিল্পী, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিসেবীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি দেশের গরিব চাষীদের নিয়ে বলেন, “আমাদের চাষীরা হলো সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাদের উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে। গরীবের উপর অত্যাচার করলে আল্লাহর কাছে তার জবাব দিতে হবে”।


দূরদর্শী বঙ্গবন্ধু: বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদর্শী নেতা। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হলেও, তাতে বাঙালির কোনো লাভ হবে না বিচক্ষণ ও প্রজ্ঞাবান নেতা বঙ্গবন্ধু এটি ভালোভাবেই উপলব্ধি করেন এবং সেসময় হতেই তিনি বাঙালি জাতির স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে থাকেন। “ইতিহাসে তিনিই অমর, যিনি তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি করেন এবং জাতিকে স্বপ্ন দেখান” যা বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত সচেতনতার সাথে বাস্তবায়ন করেন। একারণেই তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নাম নয়; বঙ্গবন্ধু একটি প্রতিষ্ঠান, একটি সত্তা, একটি ইতিহাস। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে অন্তরালের বঙ্গবন্ধু আরো শক্তিশালী। যতদিন বাঙালি থাকবে, বাংলাদেশ থাকবে, এদেশের জনগণ থাকবে ততদিনই বঙ্গবন্ধু সবার অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও