এ দলে বিভেদ, ও দলে ভাঙন, এভাবেই কি চলবে রাজনীতি
ময়মনসিংহের তরুণ কবি ও গ্রাফিক ডিজাইনার শামীম আশরাফকে প্রথমে ৫৪ ধারায় আটক করে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সাইবার নিরাপত্তা আইনে আবার মামলা করার কারণ কী? তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হকের বিরুদ্ধে পোস্টার করেছেন। পোস্টারের কোথাও মেয়রের নাম নেই। একটি পোস্টারে বলা হয়েছে, ‘হোল্ডিং ট্যাক্সের পাহাড়ের বোঝা কেন সাধারণ মানুষের ওপর চাপাও?’ আরেকটি পোস্টারের ভাষা হলো, ‘শোষক নয়, সেবক চায় নগরবাসী।’
তাহলে মেয়র কেন নিজের কাঁধে নিলেন? কেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাকে দিয়ে মামলা করালেন? ঘটনার পেছনেও ঘটনা থাকে। স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণেই শামীম আশরাফ একাধিক মামলা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ময়মনসিংহ সদর থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হন মোহিতুর রহমান ওরফে শান্ত। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হকের বড় ভাই আমিনুল হক। ওই নির্বাচনের সময় শামীম আশরাফ নৌকার প্রার্থীর পক্ষে পোস্টার করেছিলেন।
সিটি নির্বাচনে মেয়রের বিরুদ্ধে সাঁটানো পোস্টারের পেছনে সংসদ সদস্যের হাত আছে বলে মনে করে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ। সংসদ সদস্যকে ধরেবেঁধে আনতে না পারলেও পোস্টারের মালিক হিসেবে সন্দেহভাজন হিসেবে আশরাফকে আটক করা হয়। সেই পোস্টার সাঁটা হয়েছে শহরের দেয়ালে, প্রকাশ্যে। এখানে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করার সুযোগ নেই।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির দ্বন্দ্বের স্বরূপ বুঝতে ওপরের ঘটনাটি যথেষ্ট। প্রায় প্রতিটি আসনেই আওয়ামী লীগের বিজয়ী বনাম পরাজিত কিংবা নৌকা বনাম স্বতন্ত্র প্রার্থীর রেষারেষি চলছে।
অভ্যন্তরীণ বিভেদ কমাতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। কিন্তু ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে যে বিরোধ দেখা দিয়েছে, তা সহজে মিটবে বলে মনে হয় না। মন্ত্রী–এমপি ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা এখন মুখোমুখি।