ডেঙ্গু থেকে জিকার আঘাত, কীভাবে সামলাবে বাংলাদেশ

প্রথম আলো কবিরুল বাশার প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৭:২২

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার আতঙ্কে আতঙ্কিত যখন বাংলাদেশের মানুষ, তখন অনাড়ম্বরভাবে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মশা দিবস। প্রতিবছর ২০ আগস্ট মশা ও মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্য পালন করা হয় মশা দিবস।


১৮৯৭ সালের এই দিনে ব্রিটিশ চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী স্যার রোনাল্ড রস আবিষ্কার করেন, ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্লাজমোডিয়াম মশার মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এই যুগান্তকারী আবিষ্কার মশাবাহিত রোগ নিয়ে আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণার দ্বার উন্মোচন করে এবং রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে নতুন যুগের সূচনা ঘটায়। তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯০২ সালে স্যার রোনাল্ড রস নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।


বিশ্ব মশা দিবস মূলত মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি, প্রতিরোধ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পালিত হয়। মশা বিশ্বে মানুষের মৃত্যুর অন্যতম বড় কারণ হিসেবে বিবেচিত। প্রতিবছর কোটি কোটি মানুষ ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাস, ইয়েলো ফিভার, জাপানিজ এনসেফালাইটিস এবং ফাইলেরিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুই বিশ্বব্যাপী শত শত মৃত্যুর জন্য দায়ী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মশাবাহিত রোগ বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম প্রধান হুমকি এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মশামাহিত রোগের প্রকোপ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।


জলবায়ু পরিবর্তন কেবল পরিবেশ বা প্রতিবেশব্যবস্থার কাঠামোই বদলে দিচ্ছে না, বরং মশাবাহিত রোগের বিস্তার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাস ও ইয়েলো ফিভারের মতো রোগের বিস্তারে তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাতের ধরন এবং আর্দ্রতার পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মশার প্রজনন ও জীবনচক্রের গতি বেড়ে যায়। উষ্ণ আবহাওয়ায় মশার ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ মশায় রূপান্তরের সময় অনেক কমে আসে, ফলে অল্প সময়ে মশার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। একই সঙ্গে মশার শরীরে থাকা জীবাণু বা ভাইরাসও দ্রুত বৃদ্ধি পায়, যা সংক্রমণের হারকে আরও বাড়িয়ে দেয়। আগে শীতল আবহাওয়া মশার বৃদ্ধি সীমিত বা নিয়ন্ত্রিত করত, কিন্তু এখন উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে এমন এলাকায়ও মশা জন্মানো শুরু করেছে, যেখানে আগে তারা টিকতে পারত না।


বৃষ্টিপাতের ধরন পরিবর্তনও মশাবাহিত রোগের বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত স্থান তৈরি করে। আবার অনিয়মিত বা দীর্ঘায়িত বর্ষা মশার প্রজননের মৌসুমকে বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে রোগের বিস্তার বছরজুড়েই ঘটতে থাকে।


অন্যদিকে খরা পরিস্থিতিতে মানুষ পানি সংরক্ষণ করে, যা সঠিকভাবে ঢেকে না রাখলে এডিস মশার বংশবৃদ্ধির আদর্শ ক্ষেত্র হয়ে ওঠে।
এ ছাড়া আর্দ্রতা বৃদ্ধির ফলে মশার ডিম, লার্ভা ও পূর্ণাঙ্গ মশার বেঁচে থাকার হার বেড়ে যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থার পরিবর্তন মশার সক্রিয় সময় ও বেঁচে থাকার সময়কালকে দীর্ঘায়িত করে।


এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়ণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব এবং ড্রেনেজ সমস্যার মতো বিষয়গুলো, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে আরও তীব্র করছে এবং মশার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করছে।


ফলে জলবায়ু পরিবর্তন ও নগরায়ণের যৌথ প্রভাবে মশাবাহিত রোগ এখন এমন সব অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে, যেখানে আগে এগুলোর অস্তিত্ব ছিল না। সংক্রমণের মৌসুম দীর্ঘায়িত হচ্ছে, নতুন নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে, স্বাস্থ্য খাতে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে এবং অর্থনৈতিক ক্ষতিও বাড়ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও