আয়বৈষম্য নিরসনের নীতিমালা গ্রহণ করা জরুরি

www.ajkerpatrika.com ড. মইনুল ইসলাম প্রকাশিত: ২১ মে ২০২৩, ২০:০৫

গত ১৩ এপ্রিল ২০২২ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপের প্রাথমিক ফলাফল পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। ওই জরিপে বাংলাদেশের জনগণের আয়বৈষম্য পরিমাপক জিনি সহগের মান নির্ধারিত হয়েছে শূন্য দশমিক ৪৯৯। অতএব, এখন নির্দ্বিধায় বলা যায় যে বাংলাদেশ একটি উচ্চ আয়বৈষম্যের দেশে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে এসে সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয় আদর্শ হিসেবে গ্রহণকারী একটি দেশ উচ্চ আয়বৈষম্যের দেশে পরিণত হওয়ার মানে হলো দেশটি হাইজ্যাক হয়ে শ্রমজীবী জনগণের মালিকানার দেশ থেকে সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের করায়ত্ত ‘শোষকের দেশে’ পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ‘মুক্তির সংগ্রামের’ মাধ্যমে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশে মুখ থুবড়ে পড়েছে শ্রমজীবী জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির অঙ্গীকার। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ক্রমান্বয়ে বেড়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। ২০২০-২২ পর্বে করোনাভাইরাস মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার কমে গেলেও তা ৫ শতাংশের কাছাকাছি ছিল এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার আবার ৬ শতাংশ অতিক্রম করবে বলে প্রাক্কলন করা হচ্ছে। অতএব এটা অনস্বীকার্য, বাংলাদেশের অর্থনীতি অনুন্নয়ন ও পরনির্ভরতার ফাঁদ থেকে মুক্ত হয়ে টেকসই উন্নয়নের পথে যাত্রা করেছে।


কিন্তু মাথাপিছু জিডিপি যেহেতু একটি গড় সূচক, তাই এই প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যদি দেশে আয়বৈষম্যও বাড়তে থাকে তাহলে জিডিপি প্রবৃদ্ধির সুফল সমাজের উচ্চবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর কাছে পুঞ্জীভূত হওয়ার প্রবণতা ক্রমশ শক্তিশালী হতে থাকে; ফলে নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ প্রবৃদ্ধির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। আয়বৈষম্য বৃদ্ধির এই মহাবিপদ এ দেশের ১৯৭৫-পরবর্তী শাসকমহল ডেকে এনেছে। দুঃখজনকভাবে আশির দশক থেকেই আয় ও সম্পদবৈষম্য ক্রমশ বাড়তে বাড়তে এখন বাংলাদেশ একটি ‘উচ্চ আয়বৈষম্যের দেশে’ পরিণত হয়েছে। অর্থনীতিতে আয়বৈষম্য বৃদ্ধি বা হ্রাস পরিমাপ করার জন্য নানা পরিমাপক ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে লরেঞ্জ কার্ভ এবং জিনি সহগ অন্যতম। কোনো অর্থনীতির জিনি সহগ যখন দ্রুত বাড়তে থাকে এবং শূন্য দশমিক ৫-এর কাছাকাছি পৌঁছে যায় বা শূন্য দশমিক ৫ অতিক্রম করে, তখন নীতিনির্ধারকদের বোঝার কথা যে আয়বৈষম্য মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত হাউসহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে মোতাবেক বাংলাদেশের জিনি সহগ নির্ধারিত হয়েছিল শূন্য দশমিক ৪৮৩, যা ১৯৭৩ সালে ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ৩৬। ২০২২ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপে তা আরও বেড়ে শূন্য দশমিক ৪৯৯ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের প্রতিবেদন ওয়ার্ল্ড আলট্রা ওয়েলথ রিপোর্ট ২০১৮ মোতাবেক, ২০১২ থেকে ২০১৭, এই পাঁচ বছরে অতি ধনী বা ধনকুবেরের সংখ্যা বৃদ্ধির দিক দিয়ে বড় অর্থনীতির দেশগুলোকে পেছনে ফেলে সারা বিশ্বর এক নম্বর স্থানটি দখল করেছে বাংলাদেশ। ওই পাঁচ বছরে বাংলাদেশে ধনকুবেরের সংখ্যা বেড়েছে বার্ষিক ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ হারে; ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ছিল ২৫৫। ওই গবেষণা প্রতিবেদনে ৩০ মিলিয়ন বা ৩ কোটি ডলারের (৩২৮ কোটি টাকা) বেশি নিট-সম্পদের অধিকারী ব্যক্তিদের ‘আলট্রা-হাই নেট-ওয়ার্থ’ (ইউএইচএনডব্লিউ) ইনডিভিজুয়্যাল হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। অতএব, শেখ হাসিনার বর্তমান মন্ত্রিসভায় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর সংখ্যাধিক্যকে কাকতালীয় বলা যাবে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও