রুচির দুর্ভিক্ষের দায় কার?
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অদ্ভুত এক প্রবণতা। কখন কোন বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় উঠবে, তার কোনো হিসাব নেই। এখন ঝড় উঠেছে রুচির দুর্ভিক্ষ নিয়ে। বিতর্কের কেন্দ্রে আছেন কয়েকবছর ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘হিরো’ হয়ে ওঠা আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। বিতর্কটি তুলেছেন বিশিষ্ট অভিনেতা নাট্যকার মামুনুর রশীদ।
২৬ মার্চ প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মামুনুর রশীদ বলেছিলেন, ‘আজ থেকে ৫০-৬০ বছর আগে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বলেছিলেন, দেশে একটা রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে। আমরা সেই রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি। কী রকম? একদিকে মুক্তচিন্তা।
মুক্তচিন্তার জন্য হুমায়ূন আজাদ প্রাণ দিয়েছিলেন। মুক্তচিন্তার আরও অনেক মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের মিডিয়া মুক্ত হওয়ার ফলে আমরা একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি। সেখান থেকে হিরো আলমের মতো একটা লোকের উত্থান হয়েছে।
মুক্তচিন্তার জন্য হুমায়ূন আজাদ প্রাণ দিয়েছিলেন। মুক্তচিন্তার আরও অনেক মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের মিডিয়া মুক্ত হওয়ার ফলে আমরা একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি। সেখান থেকে হিরো আলমের মতো একটা লোকের উত্থান হয়েছে।
মামুনুর রশীদের বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড়। অনেকে মামুনুর রশীদকে বিষোদগার করছেন। হিরো আলমের পক্ষ নিয়ে অনেকে বলছেন, মামুনুর রশীদ দেশের রুচির মান ঠিক করে দেওয়ার কে? মামুনুর রশীদের মতো হিরো আলমও এই দেশের নাগরিক। তার অধিকার আছে, যা ইচ্ছা তাই করার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কটি ফলো করে আমার বিশ্বাস জন্মেছে মামুনুর রশীদ ঠিক কথাই বলেছেন, আমরা আসলেই ভয়াবহ রুচির দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছি। তবে দুর্ভিক্ষ কখনো হুট করে আসে না।
বন্যা, খরায় দীর্ঘদিন চাষাবাদ ঠিকমতো না হলে ধীরে ধীরে দুর্ভিক্ষ আমাদের গ্রাস করে। তাই সাংস্কৃতিক রুচির দুর্ভিক্ষও একদিনে আসেনি, ধীরে ধীরে আমাদের চোখের সামনেই আমাদের সর্বনাশ হয়েছে। এর দায় মামুনুর রশীদও এড়াতে পারবেন না।
প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এড়াতে চানওনি, ‘কুরুচি, কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির এই উত্থান কীভাবে রোধ করা যাবে, এটা যেমন রাজনৈতিক সমস্যা, তেমনি আমাদের সাংস্কৃতিক সমস্যাও।’
- ট্যাগ:
- মতামত
- দুর্ভিক্ষ
- মার্জিত রুচি
- মামুনুর রশীদ