কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি ও তলা ফুটো চৌবাচ্চার অঙ্ক

প্রথম আলো কল্লোল মোস্তফা প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:৩৪

সরকারের নির্বাহী আদেশে গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ল ৫ শতাংশ। শুধু তা-ই নয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জানিয়েছে, এখন থেকে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করা হবে। (বিদ্যুতের দাম বাড়ল, বাসস, ১২ জানুয়ারি ২০২৩) আশঙ্কা হলো, যেহেতু বেসরকারি খাত থেকে প্রতিবছর বিপুল অর্থ ব্যয় করে বিদ্যুৎ ক্রয় করা হয়, কাজেই সমন্বয়ের নামে কার্যত নিয়মিত দাম বাড়ানোই হবে।


বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত এমন একটি সময়ে নেওয়া হলো, যখন নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এমনিতেই মানুষ ব্যাপক চাপে রয়েছে। গত আগস্টে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম এক লাফে লিটারে ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে দেয় সরকার। পরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে লিটারে ৫ টাকা কমানো হলেও দ্রব্যমূল্যের ওপর তার তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। (ডিজেলের দাম ৩৪ টাকা বাড়ানোর পর কমল ৫ টাকা, প্রথম আলো, ২৯ আগস্ট ২০২২) কাজেই অতীত ইতিহাস বলে, বিদ্যুতের দাম যদি কোনো মাসে কমানোও হয়, সেটার কোনো প্রভাব দ্রব্যমূল্যের ওপর না পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। ফলে প্রতি মাসে বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের অর্থ হবে নিত্যপণ্য ও সেবার দামে নতুন করে অরাজকতা তৈরি করা।


বলা হচ্ছে, আইএমএফের শর্ত অনুসারে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমানোর জন্যই এই মূল্যবৃদ্ধি। প্রশ্ন হলো, ভর্তুকি কেন দিতে হচ্ছে এবং সেই ভর্তুকির টাকা কোথায় যাচ্ছে, কারা পাচ্ছে? ভর্তুকি দিতে হচ্ছে; কারণ, আমদানিনির্ভর ও ব্যয়বহুল তরল জ্বালানিভিত্তিক বেসরকারি মালিকানার বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে পিডিবিকে। সেই সঙ্গে রয়েছে ক্রমবর্ধমান ক্যাপাসিটি চার্জের বোঝা। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা যত বেড়েছে, পিডিবির লোকসান তত বেড়েছে। আর সেই লোকসান কমানোর কথা বলে গত ১৪ বছরে এ নিয়ে ১১তমবারের মতো গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে কিন্তু লোকসান ও ভর্তুকি কমেনি; বরং বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর চাপ তৈরি হয়েছে। (৫ শতাংশ বাড়ানো হলো বিদ্যুতের দাম, প্রথম আলো, ১২ জানুয়ারি ২০২৩)


তলা ফুটো চৌবাচ্চার অঙ্কের কথা আমরা জানি। চৌবাচ্চার তলায় যদি ফুটো থাকে, তাহলে যতই পানি ঢালা হোক না কেন, চৌবাচ্চা পূর্ণ হবে না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের চৌবাচ্চার ফুটো হলো বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র। ২০২০-২১ সালে গড়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ছিল ৬ টাকা ৬১ পয়সা, যা ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২১-২২ সালে দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ৮৪ পয়সা। এর মধ্যে পিডিবির নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন খরচ ৫ টাকা ২ পয়সা এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন খরচ ৪ টাকা ৪৭ পয়সা হলেও বেসরকারি খাতের রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের গড় উৎপাদন খরচ ৯ টাকা ৮০ পয়সা ও আইপিপিগুলোর গড় উৎপাদন খরচ ১১ টাকা ৫৫ পয়সা। এক বছর আগে বেসরকারি খাতের রেন্টাল ও আইপিপি বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ছিল যথাক্রমে ৭ টাকা ৪৭ পয়সা ও ৮ টাকা শূন্য ২ পয়সা। (পিডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০২১-২২, পৃষ্ঠা ৯৬) বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়াই ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়ার কারণে বেসরকারি খাতের কোনো কোনো আইপিপি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে ৫৫ টাকা এবং ভাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট ২৭ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। (পিডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০২১-২২, পৃষ্ঠা ১১৪-১১৭) ফলে এটা স্পষ্ট যে বেসরকারি খাতের আইপিপি ও রেন্টাল মডেলের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ কিনতে গিয়েই পিডিবির লোকসান বাড়ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও