কোরবানির ঈদের কতগুলো বাস্তব সমস্যা আছে। একটা হলো, দাঁতের ফাঁকে মাংসের আঁশ আটকে যাওয়া। এই সমস্যার সমাধান হলো খিলান। ফ্লস। টুথপিক। কিংবা মাংস না খাওয়া। আরেকটা বাস্তব সমস্যা হলো, ওভার–ইটিং। বেশি খেয়ে ফেলা।
একটা সত্য গল্প বলি। আমাদের লেখক-সাংবাদিক-প্রযোজক বন্ধু লিটন হায়দারের কাছে এই গল্প শুনেছি। নেদারল্যান্ডসে এক বাঙালির কিডনি কাজ করছে না। কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। তাঁকে চিকিৎসকেরা বলে দিয়েছেন, আপনি কখনো হাসপাতালের ১০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে যাবেন না। আপনার জন্য হেলিকপ্টারও রেডি। শুধু কিডনিদাতা পাওয়া গেলেই আমরা আপনাকে ডেকে নেব।
কিডনি পাওয়া গেল। ট্রান্সপ্লান্ট বা প্রতিস্থাপনের কাজ শেষ হলো।
কিন্তু সমস্যা হলো, কিডনি শরীরের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছে না।
চিকিৎসকেরা গবেষণা করলেন। শেষে কারণ বের করলেন, এই কিডনি ইউরোপের মানুষের। আপনার কিডনি বাংলাদেশের। ছোটবেলা থেকে খেয়েছেন ভাত-মাছ, শাকসবজি। ইউরোপের কিডনি সামলেছে রুটি, মাখন, আঙুর কিংবা আঙুরের রস। লাল রস। সাদা রস। কাজেই আপনার শরীরের সঙ্গে তা খাপ খাওয়াতে পারছে না।
একসময় বলা হলো রোগীকে, আপনি আর সাত দিন বাঁচবেন।
এরপর বলা হলো, আপনি আর এক ঘণ্টা বাঁচবেন। লিটন হায়দারের হাত ধরে সেই মরণাপন্ন বাঙালি বললেন, ‘আমার জমানো টাকা মায়ের কাছে পৌঁছে দেবেন।’ রোগী ফোন করলেন দেশে। মায়ের কাছে। তখন মুঠোফোন ছিল না। ল্যান্ডফোন। ‘মা, আমার আয়ু আছে আর এক ঘণ্টা। ডাক্তার বলে দিয়েছেন।’
- ট্যাগ:
- মতামত
- ঈদুল আজহা
- ঈদ উদযাপন
- বন্যা দুর্গত
- ঈদযাত্রা