সুজন-দুর্জন ও রেলমন্ত্রীর শ্বশুর-শাশুড়ি

দেশ রূপান্তর ড. এম এ মোমেন প্রকাশিত: ১০ মে ২০২২, ১০:০৬

সবার আগে আশ্বস্ত করতে চাই এই লেখাটির শ^শুর-শাশুড়ি বাস্তবের শ্বশুর-শাশুড়ি হলেও বাংলাদেশের হাল কিংবা সাবেক কোনো রেলমন্ত্রীর নয়। কাজেই শিরোনাম দেখেই আগাম বিব্রত হওয়ার কোনো কারণ নেই।


কারণ শ্বশুর সাহেবের নাম শিব প্রসাদ চৌধুরী এবং শাশুড়ি জগোমাতা দেবী। তাদের কন্যা সূত্রে উভয়েই জামাতা লালু প্রসাদ যাদবকে ভারতের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী হিসেবে পেয়েছেন। জামাতা এবং কন্যা উভয়েই বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর আসন অলঙ্কৃত করেছেন।


১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ শিব প্রসাদ চৌধুরী এবং জগোমাতা দেবী মুজাফফরপুর-নয়া দিল্লি ক্রান্তি এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপে বসলেন। তারা উঠেছিলেন বিহারের দ্বারভাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে। বগিটা ছিল শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ফার্স্ট ক্লাস। এমন নয় যে তারা এমন বগিতে সফর করে অভ্যস্ত। জামাতার পার্টির লোকজন এবং রেলের স্থানীয় কর্মচারীরা বেশ সমীহ করে তাদের আরামদায়ক বগিটিতে বসিয়ে গেছেন। ছাপড়া স্টেশনে গাড়ি থামলে ইন্ডিয়ান স্টার্ন সেন্ট্রাল রেলওয়ের টিটিই (ট্র্যাভেলিং টিকিট এক্সামিনার) বগিতে উঠলেন এবং যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষা করতে শুরু করলেন। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে ঢুকে শিব প্রসাদের কাছে টিকিট চাইলেন। সম্ভবত শিবও ভাবেননি লালু প্রসাদের মতো মন্ত্রীর শ্বশুরের কাছে টিকিট কেউ চাইতে পারে। জগোমাতা দেবী ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলেন। ততক্ষণে টিটিই জেনে গেছেন বিনা টিকিটে কারা ধরা পড়েছেন। তিনি এটাও জানেন রেলের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তিনিই অপরাধী হয়ে যাবেন। দায়িত্ব অবহেলার দায় বর্তাবে তার ওপর। সুতরাং আইন অনুযায়ী তিনি প্রাপ্য অর্থ দাবি করলেন। তারা বুঝতে পারলেন মন্ত্রী আমার ‘অমুক’ মন্ত্রীর স্ত্রী আমার ‘তমুক’ এসব বললে তাদের এবং তাদের জামাতার মর্যাদাই ক্ষুন্ন হবে। সুতরাং পুরো টাকা দিয়ে তারা গন্তব্যে পৌঁছালেন। এনডিটিভি থেকে শুরু করে সব সংবাদমাধ্যমে সেদিনের বড় খবর রেলমন্ত্রীর শ্বশুর-শাশুড়ি ধরা পড়েছেন, তারা বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ করছিলেন।


রেলমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবকেও ছাড় দেওয়ার কোনো কারণ নেই। সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বললেন, ‘‘টিটিই সে বড়ি বীরত্ব কা কাম কিয়া হ্যায়’’ টিটিই বীরের মতো কাজ করেছে। আমার সঙ্গে এই বিনা টিকিটের যাত্রীদের যে সম্পর্ক তা জেনেও তিনি ছাড় দেননি এটাই প্রমাণ করে তিনি ভারতীয় রেলওয়ের গৌরব। তিনি আরও বললেন, ‘‘কানুন সব কো লিয়ে একই হ্যায়’’ আইন সবার জন্য সমান। ‘‘এই টিটিই-র কাজটি প্রমাণ করে ন্যায়বিচারের সংস্কৃতি গড়ে উঠছে।’’


লালু প্রসাদ ধোয়া তুলসীপাতা ছিলেন না। গো-খাদ্য আমদানি কেলেঙ্কারিতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী অবস্থায় গ্রেপ্তার হয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। কিন্তু তিনি রেলওয়ে প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছেন। তাকে নিয়ে সে সময় মুখে মুখে যে ছড়াটি প্রচলিত ছিল তা হচ্ছে : ‘‘যব তক রাহেগা সমুসা মে আলু/তব তক রাহেগা বিহার সে লালু।’’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও