গণমাধ্যম আইন: নিশ্চিত হোক মর্যাদা, আগ্রাধিকার ও নিরাপত্তা সুরক্ষা
অবশেষে গণমাধ্যমকর্মী আইনটি সংসদে উপস্থাপিত হয়েছে। এ পর্যন্ত আসতে সময় লাগল ১০ বছর। সাংবাদিকদের দাবিদাওয়ার সময় হিসাব করলে যোগ হবে আরও ৫ বছর।
এই আইনের একটি বড় পূর্ব ইতিহাস আছে। ভারত ভাগ হয়ে যখন পাকিস্তান হলো, তখন দেখা গেল, সব পেশায় শৃঙ্খলা আনার জন্য নানা আইনকানুন-বিধি আছে, কিন্তু সাংবাদিকতার জন্য কিছুই নেই। ধারণা করি, ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী অবিভক্ত ভারতে তাদের গোটা শাসনামলে সংবাদমাধ্যমকে যেহেতু শত্রুপক্ষ ভাবত, আবার অন্যদিকে সে সময়কার সাংবাদিকতা পুরোটাই যেহেতু শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহৃত হতো, সেহেতু এ পেশা (তখনো সংবাদমাধ্যমশিল্প হয়নি) নিয়ে কালাকানুন ছাড়া কোনো কানুন প্রণীত হয়নি। এ অবস্থায় সাংবাদিকদের মর্যাদা ও বেতন-ভাতা নির্ধারণে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান গণপরিষদে প্রস্তাব করেন সদস্য নূর আহমেদ। এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান প্রেস কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিশন রিপোর্ট পেশ করে ১৯৫৯ সালে। এ রিপোর্টের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতেই ১৯৬০ সালে জারি করা হয় দি ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট (কন্ডিশন অব সার্ভিস) অরডিন্যান্স। এই আইন বলেই ১৯৬০ সালে বিচারপতি সাজ্জাদ জানের নেতৃত্বে গঠিত হয় প্রথম ওয়েজ বোর্ড। ১৯৬১ সালে ৩১ ডিসেম্বর প্রথম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদ ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় ওয়েজ বোর্ড হওয়ার কথা ছিল ১৯৬৬ সালে। সে সময়কার অগ্নিগর্ভ পাকিস্তান, বিশেষত পূর্ব পাকিস্তানে সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড অগ্রাধিকার তালিকায় ছিল না।