কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ঢাকার যানজট বনাম দিল্লির গণপরিবহন ব্যবস্থা

সমকাল কল্লোল মোস্তফা প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০২২, ১০:২০

ঢাকায় যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। কার্যকর গণপরিবহন ব্যবস্থা না থাকার কারণে রাস্তাগুলো দিন দিন ব্যক্তিগত গাড়িতে ভরে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মোটরসাইকেলের সংখ্যা। বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে ২৭২টি মোটরসাইকেল এবং ৪১টি ব্যক্তিগত গাড়ি নিবন্ধিত হয়। ২০১০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে রাজধানীতে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ১ লাখ ৭৮ হাজার থেকে দ্বিগুণ হয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার এবং মোটরসাইকেল দাঁড়িয়েছে আট গুণ; প্রায় ৭ লাখে। ব্যক্তিগত গাড়ির কারণে বাড়ছে ট্রাফিক জ্যাম; মোটরসাইকেলের কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনা বাড়ছে অকার্যকর গণপরিবহন ব্যবস্থায় একই রুটের দুই বাসের রেষারেষির কারণে। একটা বাস রাস্তার যতটুকু জায়গা দখল করে অন্তত ৪০ জন মানুষ পরিবহন করে, ততটুকুু জায়গা দখল করে দুটি ব্যক্তিগত গাড়িতে হয়তো ৪/৫ জন মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু এই পরিসংখ্যান দিয়ে তো সামর্থ্যবান মানুষকে ব্যক্তিগত
গাড়ি আর মোটরসাইকেল কিনতে নিরুৎসাহিত করা যাবে না, যদি যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন বাস রাস্তায় সময়মতো না পাওয়া যায়!


ঢাকার রাস্তায় যেভাবে বাস চলাচল করে, সেটাকে গণপরিবহন ব্যবস্থা বলা মুশকিল। ঢাকার বাস চলাচলের অনুমোদন থেকে শুরু করে এর পরিচালন পদ্ধতি পুরোটাই সমস্যাসংকুল। এখানে কোনো রুটে বাস চালানোর প্রধান যোগ্যতা হলো রাজনৈতিক ক্ষমতা। ক্ষমতার জোরে প্রভাবশালীরা বাস রুটের অনুমোদন নিয়ে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন বাস মালিককে সেই রুটে বাস চালানোর অনুমোদন প্রদান করেন। বাস মালিকরা আবার চুক্তিভিত্তিক পরিবহন শ্রমিকদের হাতে বাস তুলে দেন। দিন শেষে মালিককে দেওয়ার জন্য জমার টাকা, জ্বালানি খরচ, টোল, চাঁদা ও ঘুষের ব্যবস্থা করার পর যা থাকে, তা ভাগাভাগি করে নেয় চালক ও তার সহকারী। এই টাকা তোলার জন্য চালকরা কোনো নিয়ম মানে না। আসন সংখ্যার বেশি যাত্রী পরিবহন, জায়গায় জায়গায় থেমে যাত্রী ওঠানামা করা, বাড়তি ভাড়া আদায় থেকে রেষারেষি করে বেপরোয়া গতিতে বাস চালানো- সবই চলে। ফলে একদিকে যাত্রীসেবার মান কমছে; অন্যদিকে দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও জখম বৃদ্ধি পাচ্ছে।


ঢাকায় চলা বেশিরভাগ বাস-মিনিবাস রংচটা ও লক্কড়ঝক্কড়; পেছনের লাইট-ইন্ডিকেটর আর সামনের লুকিং গ্লাস থাকে না এগুলোর। ভেতরে আসন বিন্যাস এমন যে, দুই পা মেলে ঠিকঠাক বসারই উপায় থাকে না। সেই সঙ্গে তেল চিটচিটে আচ্ছাদনে গা গুলিয়ে আসে। বাসগুলোতে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে গাদাগাদি করে যেতে হয়। গরমের দিনে ঘামে এবং বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। এত কষ্ট সহ্য করতে রাজি থাকার পরও প্রয়োজনের সময় বাস পাওয়া এবং সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছানোর কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। বিশেষ করে নারী, শিশু ও বয়স্কদের জন্য ঢাকার বাসে ওঠানামা এবং ভেতরে গাদাগাদি করে যাতায়াত করা এক বীভৎস অভিজ্ঞতা। এ রকম পরিস্থিতিতে কোনো ব্যক্তির যদি ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার মতো আর্থিক সামর্থ্য তৈরি হয় তাহলে তিনি তার এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য তা কিনবেন না কেন? বাস্তবে ঘটছেও তাই। করোনাকালে ২০২০, '২১ সাল ও চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে সারাদেশে ৩১ হাজার ৫৭৫টি ব্যক্তিগত গাড়ি নেমেছে।


এ সমস্যার সমাধান করতে হলে গণপরিবহন ব্যবস্থা ঠিক করতে হবে। গণপরিবহন ব্যবস্থা ঠিক করা মানে শুধু ফ্লাইওভার, এক্সপ্রেসওয়ে আর মেট্রোরেল নির্মাণ করা নয়। গত এক দশকে ঢাকায় প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা খরচ করে উড়াল সড়ক নির্মাণ, দুই হাজার কোটি টাকায় হাতিরঝিল উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চলছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, বিআরটি ইত্যাদির নির্মাণকাজ। কিন্তু রাজধানীর কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনার সুপারিশ অনুসারে ঢাকায় বাস বাড়ানো, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনা, ঢাকা ঘিরে রিং রোড নির্মাণ ইত্যাদিতে গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে যানজট সমস্যার সমাধান হয়নি। উল্টো যানবাহনের গড় গতিবেগ ২০০৭ সালের ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার থেকে কমে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারে নেমেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও