বুদ্ধিজীবী হত্যা ছিল জাতিকে বিকলাঙ্গ করার ষড়যন্ত্র
১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তানের জন্মের পরপরই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব বুঝতে পারেন, পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানকে তাদের শোষণের চারণক্ষেত্র বানাতে চাইছে। ১৯৪৭ সালে করাচিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিক্ষা সম্মেলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাপত্রে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ব্যবহারের সুপারিশসহ প্রচারমাধ্যম ও বিদ্যালয়ে কেবল উর্দু ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ওই প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানানো হয়।
১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের জাতির পিতা কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, দ্বিতীয় কোনো ভাষা নয়। অথচ জনসংখ্যার ভিত্তিতে সমগ্র পাকিস্তানের অধিকাংশ মানুষের মাতৃভাষা ছিল বাংলা। যদিও পাকিস্তান সরকার, প্রশাসন এবং সামরিক বাহিনীতে পশ্চিম পাকিস্তানিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। ফলে পাকিস্তানের জন্মের পরপরই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলাভাষী অধ্যুষিত পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে এবং বাঙালি জাতি মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে।