তবুও কাটে না আঁধার
আমরা নির্মাণ যতটা দেখি এর পাশাপাশি ক্ষয়ও দেখি অনেক। গত ৪ ডিসেম্বর একটি দৈনিকে 'ভারতে দুই বোন পাচার, দেখা হলো যৌনপল্লিতে' শিরোনামে প্রকাশিত খবরটি ফের প্রশ্ন দাঁড় করিয়েছে- আর কত জীবন ক্ষয়ে, ধসে, বিপন্ন-বিপর্যস্ত হয়ে প্রত্যয়ের সেই বাংলাদেশের সন্ধান মিলবে? রাষ্ট্রশক্তি কিংবা প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের এই খবরগুলো কতটা পীড়িত করে এবং একই সঙ্গে খবরের অন্তরালের খবর অনুসন্ধান করে প্রতিকারে কতটা নিষ্ঠ করে? সরল নয় এসব প্রশ্নের উত্তর। যদি তা-ই হতো তাহলে তো সমাজবিরোধী, জীবন নিয়ে ব্যবসাকারীদের এত দৌরাত্ম্য কিংবা বাড়-বাড়ন্ত লক্ষণীয় হয়ে উঠতে পারত না। ওই শিরোনামে প্রকাশিত খবরের গর্ভে নিহিত যশোরের লাবণী ও পারুল এই দুই বোনের অন্ধকারের গলি থেকে আলোতে ফিরে আসার বেদনাকাতর তথ্য এও প্রশ্ন দাঁড় করায়- আমাদের কত, আর কত লাবণী ও পারুলের দুর্বিষহ জীবন কাটছে কীটদংশিত হয়ে ভয়ংকরতার মধ্যে।
লাবণী স্কুলের গণ্ডি পেরোতে পারেনি ভালো ছাত্রী হওয়া সত্ত্বেও। অষ্টম শ্রেণি পার হওয়ার পরই তার জীবনে নেমে আসছিল বাল্যবিয়ের অভিশাপ। বড় বোন পারুলকেও কৈশোর না পেরুতেই বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে। লাবণীর ইচ্ছা ছিল অনেক দূর যাবে পড়াশোনা করে। কিন্তু পরিবারের সিদ্ধান্ত আর তার ইচ্ছার মধ্যে যখন ব্যবচ্ছেদ ঘটে, তখনই সে সিদ্ধান্ত নিল পালাবে; বাল্যবিয়ের অভিশাপে অভিশপ্ত হওয়া থেকে মুক্তি নিতে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- নারী নির্যাতন
- সমাজব্যবস্থা