কেন পাশ্চাত্যের চাইতে পূর্ব–এশিয়া বেশি নিরাপদ
করোনা জাত–ধর্ম–পরিচয় দেখে না, এটা আমরা জেনে আসছি। কিন্তু রাজনৈতিক ভূগোলের কিছু জ্ঞান বোধ হয় ভাইরাসটির আছে। কোভিড–১৯ ভাইরাস ছড়ানোর মানচিত্রে পাশ্চাত্যের ওপর করোনার করাল ছায়া যতটা, পূর্বে ততটা নয়।এসব অঞ্চল পাশ্চাত্যের তুলনায় উষ্ণ কিন্তু কম সমৃদ্ধ। পরিসংখ্যান থেকে পরিষ্কারভাবেই দেখা যাচ্ছে, করোনা মোকাবিলায় বৃহত্তর চৈনিক অথবা চীন প্রভাবিত জাতিগুলো অন্যদের চেয়ে আলাদা বাস্তবতায় বিরাজ করছে।
ভিয়েতনামে করোনায় এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যু নেই। মালয়েশিয়ায় মৃতের সংখ্যা মাত্র ১১১ জন। সিঙ্গাপুরে ২১। থাইল্যান্ডে ৫৬। ইন্দোনেশিয়ায় যদিও মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ২৮, কিন্তু সাড়ে ২৬ কোটি জনসংখ্যার নিরিখে মৃতের হার পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতোই—প্রতি দশ লাখে গড়ে ৩.৮ জন।
দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও তাইওয়ানের অবস্থাও শোচনীয় হয়নি, যতটা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালি ও জার্মানিতে। বিষয়টি ভাবার মতো। হংকংভিত্তিক ইংরেজি পত্রিকা এশিয়া টাইমসের লেখক অ্যান্ড্রু সালমন এই ভিন্নতার কার্যকারণ নিয়ে লিখেছেন। তাঁর কাছে মনে হয়েছে, জলবায়ু এবং এশিয় সাংস্কৃতিক অথবা জেনেটিক বৈশিষ্ট্য দিয়ে হয়তো এর ব্যাখ্যা করা যায়।
কিন্তু এত বেশি অনুঘটক বা প্রভাবশীল উপাদান আছে যে নিরঙ্কুশ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেওয়া কঠিন। তাঁর আলোচনার সূত্র ধরে কিছু দিকে নজর ফেলা যাক। রাজনৈতিক ব্যবস্থার কথা ধরলে পূর্বের চীন ও ভিয়েতনামে গণতন্ত্র নেই, আবার জাপান, তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়া মোটামুটি গণতান্ত্রিক। তা ছাড়া কোনো দুটি দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থাও এক রকম নয়।
বলা হয়, যক্ষ্মজাতীয় রোগ প্রতিরোধক বিসিজি টিকার কথা—করোনা মোকাবিলায় এগিয়ে থাকা দেশগুলোতে বিসিজি টিকা প্রচলিত থাকলেও সব দেশের বিসিজি টিকা হুবহু একই রকম নয়।