
ছবি সংগৃহীত
কর্ণস্টার্চের যে বিস্ময়কর ১৫ টি ব্যবহার আপনি জানেন না!
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০৯:২৮
ফটো সোর্স : www.1mhealthtips.com
(প্রিয়।কম)- প্রায় সব বাসাতেই কর্ণস্টার্চ থাকে। এটি রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয় কোন জিনিস ঘন করার জন্য। আপনি কি জানেন এটি আপনার ত্বক ও চুল এর সমস্যা সমাধানেও অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে? কর্ণস্টার্চ অনেক ভালো একটি পরিষ্কারক। এটি রঙ করার কাজেও ব্যবহার করা যায়। নিত্যদিনের বহুবিধ সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম এই বহুমুখী পণ্যটি। যেহেতু কর্ণ স্টার্চ সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায় তাই এটি সকলের জন্যই ব্যবহার করা সহজ। আসুন এবার কর্ণ স্টার্চ বা ভুট্টা মাড় বা ভুট্টা কাই এর বহুবিধ ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেই।
১। ডায়াপার র্যাশ
ছোট শিশুর ডায়াপার র্যাশকে শীতল করতে পারে কর্ণ স্টার্চ। শিশুর ডায়াপার র্যাশ হলে প্রতিবার ডায়াপার পরিবর্তনের সময় কর্ণ স্টার্চ লাগান। এছাড়াও শিশুর গোসলের সময় পানির মধ্যে এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ পরিমাণ কর্ণ স্টার্চ মিশিয়ে নিতে পারেন।
২। চামড়ার জিনিস থেকে তেলের দাগ দূর করতে
প্রায়ই চামড়ার কোন জিনিসে তেল লেগে দাগ হয়ে যেতে দেখা যায়। এই সমস্যাটির সমাধানের জন্য চামড়ার কোন জিনিসের তেলের দাগের উপর কর্ণস্টার্চ দিয়ে সারারাত রেখে দিন। পরদিন সেই জায়গাটি একটি ব্রাশ দিয়ে মুছে নিন।
৩। রোদেপোড়া দাগ দূর করতে
কর্ণস্টার্চ ব্যবহার করে রোদেপোড়া দাগ দূর করতে পারা যায়। পানির সাথে কর্ণস্টার্চ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। রোদেপোড়া দাগের জায়গায় এই মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখুন যতক্ষণ না শুকায়। তারপর উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৪। ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করতে
আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়ে থাকে তাহলে কর্ণস্টার্চ ব্যবহার করে ত্বকের তৈলাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মুখে সামান্য পরিমাণ কর্ণস্টার্চ পাউডার ব্যবহার করুন।
৫। কালির দাগ দূর করতে
কাপড়ে লেগে যাওয়া কালির দাগ দূর করতে সাহায্য করে কর্ণস্টার্চ। দুধের সাথে কর্ণস্টার্চ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে কাপড়ের কালির দাগের উপর লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ব্রাশ দিয়ে মুছে নিন এবং স্বাভাবিক ভাবে কাপড়টি ধুয়ে ফেলুন।
৬। পোড়ার চিকিৎসায়
পুড়ে যাওয়া ত্বক ভালো করতে কর্ণস্টার্চ ব্যবহার করতে পারেন। আট কাপ উষ্ণ গরম পানিতে এক টেবিলচামুচ কর্ণস্টার্চ ও এক টেবিলচামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। গজ বা কাপড়ের টুকরো মিশ্রণটিতে চুবিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে আধা ঘন্টা রেখে দিন।
৭। অ্যাথলেট ফুট
পায়ের আঙ্গুলের ছত্রাকের সংক্রমন এড়ানোর জন্য পায়ে কর্ণস্টার্চ লাগান। জুতার মধ্যেও দিয়ে রাখতে পারেন।
৮। ড্রাই শ্যাম্পু
কর্ণস্টার্চ ড্রাই শ্যাম্পু হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আপনি যখন খুব তাড়ার মধ্যে থাকবেন যে চুল ধোয়ার সময় নেই তখন মাথার তালুতে কর্ণস্টার্চ দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে চুল আঁচড়ে ফেলুন। কর্ণস্টার্চ আপনার চুলের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে নেবে এবং চুলকে সতেজ দেখাবে। বিকল্প আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে, এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ কর্ণস্টার্চের সাথে কয়েক ফোঁটা এসেন্সিয়াল অয়েল মিশিয়ে মেকআপ ব্রাশ দিয়েও চুলে লাগাতে পারেন।
৯। ফেস ক্লিনার
কর্ণস্টার্চ দিয়ে মুখ পরিস্কার করা সম্ভব। দুই টেবিলচামুচ কর্ণস্টার্চ ও দুই টেবিলচামচ গ্লিসারিন আধা কাপ পানিতে মিশিয়ে তাপে ফুটান যতক্ষণ না একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি হয়। সাবানের পরিবর্তে এই মিশ্রণটি মুখ ধোয়ার জন্য ব্যবহার করুন।
১০। রূপার জিনিস পরিষ্কার করতে
রূপার তৈরি জিনিস পরিষ্কার করতে কর্ণস্টার্চ ব্যবহার করতে পারেন। কর্ণস্টার্চ ও পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। একটি পুরনো কাপড়ের টুকরায় মিশ্রণটি লাগিয়ে রূপার জিনিসটি ঘষুন। শুকিয়ে গেলে একটি নরম কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
১১। বইয়ের চিতির দাগ দূর করে
প্রায়ই চিতির দাগ পড়ে বই নষ্ট হয়। এই সমস্যাটির সমাধানের জন্য বইয়ের মধ্যে কর্ণস্টার্চ ছিটিয়ে দিয়ে রাখুন। কয়েক ঘন্টা এভাবে রেখে দিয়ে ওই পৃষ্ঠাটি ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন। কর্ণস্টার্চ আদ্রতা শুষে নিয়ে চিতি ধ্বংস করে।
১২। রক্তের দাগ দূর করে
কাপড় থেকে রক্তের দাগ দূর করার জন্য কাপড় ধোয়ার সময় পানির সাথে কর্ণ স্টার্চ মিশিয়ে নিন। দাগের জায়গাটি ব্রাশ দিয়ে ঘষে নিন। ধোয়ার পর কাপড়টি সূর্যের আলোয় শুকাতে দিন। যদি দাগ থেকে যায় তাহলে পুনরায় কাপড়টি একই ভাবে ধুয়ে নিন।
১৩। মাড় হিসেবে
কর্ণস্টার্চকে মাড়ের মত ব্যবহার করা যায়। দুই কাপ পানিতে এক টেবিলচামচ কর্ণস্টার্চ মিশিয়ে ঝাঁকিয়ে নিন। কাপড় ইস্ত্রি করার সময় মিশ্রণটি স্প্রে করে নিন। এটি কাপড়ে মাড় দেয়ার মতোই কাজ করবে।
১৪। ঘাম দূর করে
শরীরের ঘাম দূর করতে কর্ণস্টার্চ সাহায্য করে। শরীরে কর্ণস্টার্চ দিলে ডিউডোরেন্টের মত কাজ করে। এটি ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে পারে। বগলের দুর্গন্ধ দূর করতে কিছুটা কর্ণস্টার্চ নিয়ে হাতের নিচে দিয়ে রাখুন।
১৫। ম্যাট লিপস্টিক
চকচকে লিপিস্টিকের উপর কর্ণস্টার্চ দিয়ে ম্যাট লুক করা যায়। লিপিস্টিক লাগানোর পরে আঙ্গুলের মধ্যে কর্ণস্টার্চ নিয়ে ঠোঁটে লাগান যতক্ষণ না এটি অদৃশ্য হয়। এতে ঠোঁটে ম্যাট লুক আসার পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হবে।
যদি আপনি বাজারের বিভিন্ন পণ্যের রাসায়নিক উপাদানের প্রতিক্রিয়া থেকে মুক্ত থাকতে চান তাহলে সহজ লভ্য ও সাশ্রয়ী কর্ণস্টার্চ ব্যবহার করতে পারেন।
লিখেছেন-
সাবেরা খাতুন
ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ
প্রিয়.কম