You have reached your daily news limit

Please log in to continue


বাঙালি মুসলমানের রায় : ইতিহাসের ধারা

১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্ম ছিল উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব ঘটনা। এ আন্দোলনের প্রধান চালিকাশক্তি ছিল মুসলিম লীগ, যা খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বিশেষত, বাঙালি মুসলমানরা পাকিস্তান আন্দোলনের সবচেয়ে বড় সমর্থক গোষ্ঠীতে পরিণত হয়। ১৯৪৫-৪৬ সালের নির্বাচন ছিল এর সবচেয়ে স্পষ্ট প্রমাণ। ওই নির্বাচনে পূর্ব বাংলায় মুসলিম লীগ মুসলিম ভোটের ৮৩.৬ শতাংশ পায় এবং মুসলমানদের জন্য নির্ধারিত ১২২টি আসনের মধ্যে ১১৬টিতে জয়লাভ করে। ভারতজুড়ে মুসলমানদের জন্য নির্ধারিত ৫২৪টি আসনের মধ্যে তারা ৪৫৩টি আসন দখল করে নেয়, যা ছিল অবিসংবাদিত এক বিজয়।

এ নির্বাচনি সাফল্য শুধু সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে হয়নি, এর পেছনে ছিল বাঙালি মুসলমানের দীর্ঘ রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা, ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা এবং হিন্দু জমিদার ও ভদ্রলোক শ্রেণির অর্থনৈতিক-সামাজিক আধিপত্য থেকে বেরিয়ে আসার বাসনা। মুসলিম লীগ পূর্ব বাংলার গ্রামাঞ্চলে এমন এক জনভিত্তি গড়ে তোলে, যা পাকিস্তান আন্দোলনের চূড়ান্ত সাফল্য অনিবার্য করে ফেলে।

পাকিস্তানের প্রেক্ষাপটে মুসলিম লীগের উত্থান ও পতন

ভারতের অন্য ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল যেমন-জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ বা আহরার মুসলিম লীগের পাকিস্তান পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছিল। তারা বিশ্বাস করত, ধর্মীয় ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠন ইসলামের রাজনৈতিক-নৈতিক দর্শনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, বরং এটি বাস্তবে মুসলমানদের জন্য নতুন সংকট ডেকে আনবে। এমনকি কংগ্রেসে সক্রিয় বিশিষ্ট উলামা যেমন-মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানি স্বাধীন ভারতবর্ষে একসঙ্গে বসবাসের আদর্শ প্রচারকারী ‘সমন্বিত জাতীয়তাবাদের’ পক্ষে অবস্থান নেন।

কিন্তু মুসলিম লীগের প্রস্তাব ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। একদিকে কংগ্রেসের ভেতরে মুসলমানদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ সীমিত থাকার বাস্তবতা, অন্যদিকে প্রাদেশিক স্তরে মুসলিম লীগের সংগঠনিক বিস্তার-এই দুই মিলিয়ে পাকিস্তান আন্দোলনের পক্ষে প্রবল জনসমর্থন তৈরি হয়।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠনের মাধ্যমে মুসলিম লীগ তাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করে। কিন্তু ইতিহাসের পরিহাস কী নিদারুণ পরিহাস! রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর দলটির জনপ্রিয়তা অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে কমতে থাকে। মাত্র সাত বছরের মাথায় ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব বাংলায় মুসলিম লীগের ভরাডুবি ঘটে। যুক্তফ্রন্টের বিপুল জয়ের বিপরীতে মুসলিম লীগের অর্জন ছিল নগণ্য-২৩৭টির মধ্যে মাত্র ১০টি আসন। এর মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যায় বাঙালি মুসলমানের তীব্র বিরাগের বাস্তবতা। তৎকালীন পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং পাকিস্তান আন্দোলনের সময় মুসলিম লীগের অন্যতম মুখ নুরুল আমিন পরাজিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তরুণ ছাত্রনেতা খালেক নেওয়াজ খানের কাছে। এ পরাজয় কেবল একটি ব্যক্তিগত ব্যর্থতা ছিল না; বরং এটি ছিল রাজনৈতিক বার্তা যে, তরুণ প্রজন্ম এবং শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মুসলমানরা মুসলিম লীগের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা হারিয়েছে।

আরও তাৎপর্যপূর্ণ ছিল প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও দৈনিক আজাদের প্রভাবশালী সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দীনের পরিণতি। নির্বাচনে তার জামানত পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হয়। পাকিস্তান আন্দোলনের সময় যিনি মুসলিম লীগের পক্ষে কলম চালিয়েছেন, সেই ব্যক্তির এমন পরিণতি দেখিয়ে দেয় যে, নতুন প্রেক্ষাপটে মুসলিম লীগের প্রতি বাঙালি মুসলমানের অনাস্থা ছিল গভীর ও সর্বব্যাপী।

পতনের মূল কারণ : শ্রেণি ও সংস্কৃতির দ্বন্দ্ব

ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ শুভ বসু তার ইন্টিমেশন্স অব রেভুল্যুশন গ্রন্থে মুসলিম লীগের পতনের পেছনে শ্রেণি-সংস্কৃতিনির্ভর দ্বন্দ্বকে প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তবে এটি ক্লাসিক মার্ক্সীয় অর্থে বুর্জোয়া বনাম প্রলেতারিয়েত দ্বন্দ্ব ছিল না; বরং ছিল উপমহাদেশীয় মুসলিম সমাজের অভ্যন্তরীণ ‘আশরাফ’ বনাম ‘আতরাফ’ বিভাজনের রাজনৈতিক বহিঃপ্রকাশ।

১৯৪৯ সালের মধ্যে খাজা নাজিমুদ্দিনের নেতৃত্বে আশরাফ গোষ্ঠী দলীয় মুসলিম লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা দখল করে নেয়। এরা ছিলেন মূলত শহরভিত্তিক, শিক্ষিত ও সামাজিকভাবে উচ্চ মর্যাদাপ্রাপ্ত মুসলমান, যাদের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক অভিমুখ ঔপনিবেশিক আমলাতন্ত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। এর বিপরীতে পাকিস্তান আন্দোলনের সময় মফস্বল ও গ্রামাঞ্চলভিত্তিক ‘আতরাফ’ থেকে উত্থান হওয়া নেতাকর্মীরা ক্রমশ দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে দূরে সরে যেতে থাকে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন