বিএনপির কাছে গণমানুষের প্রত্যাশা

যুগান্তর খায়রুল কবির খোকন প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৪

রাষ্ট্রনায়ক জিয়া প্রতিষ্ঠিত বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দুই দশক ফ্যাসিবাদী অত্যাচার-নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড লড়াই করে এখন সুপ্রতিষ্ঠিত। এ দলের নেতাদের সামনে এখন প্রধান কাজ হচ্ছে-শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শুরু করা সব কাজ অতি জরুরি কর্মকাণ্ড হিসাবে সম্পন্ন করা। সেখান থেকেই ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী ‘আওয়ামী মাফিয়া-ডাকাত গোষ্ঠীর’ পতন-পরবর্তী সুস্থ রাজনীতির বিকল্প প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া নতুন অভ্যুত্থানের পথে এগোবে।


নির্বাচনে অংশ নেওয়ার তৎপরতা তো ব্যাপকভাবে চলবেই। এর পাশাপাশি জরুরি হচ্ছে সত্তর-আশির দশকে জাতীয় নেতা জিয়াউর রহমানের শুরু করা রাষ্ট্রীয় কাজগুলো সম্পন্ন করা। এক নম্বর হচ্ছে-দেশব্যাপী স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন, সব পতিত পুকুর-জলাশয় খনন। তাতে কৃষি-সেচকাজে বেশি সুযোগ সৃষ্টি হবে, নৌপথে সুবিধা বাড়বে, বন্যার পানি ধারণের অতিরিক্ত শক্তি অর্জনের মাধ্যমে সেই সংকটের আংশিক সমাধান হবে এবং ব্যাপকভাবে মাছ চাষ কার্যক্রম সম্প্রসারিত হবে।


বিএনপি সরকার গঠনের পরবর্তী আঠার মাসের মধ্যে এক কোটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। পরিকল্পিত মাছ চাষের ফলে অন্তত তিন লাখ লোকের কর্মসংস্থান (নতুন এবং স্বকর্মসংস্থান সৃষ্টি) সম্ভব। মনে রাখতে হবে, সাধারণভাবে শিল্প-বিনিয়োগ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করে দ্রুত নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি বেশ জটিল কাজ এবং তার গতি সৃষ্টিতে যথেষ্ট দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীকে উৎসাহিত করে কাজে লাগানো বেশ জটিল ও কঠিন তৎপরতার বিষয়। ফলে কৃষির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।


দেশি-বিদেশি শিল্প-কারখানা ও কৃষিশিল্প খামার বিনিয়োগ বাড়াতে বিশাল কর্মকাণ্ড দ্রুত শুরু করা দরকার। দেশি ধনবান ব্যক্তিদের বিনিয়োগ কার্যক্রমের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের, বিশেষভাবে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, জাপান, মালয়েশিয়ার শিল্প বিনিয়োগকারীদেরসহ অন্যসব দেশের সম্পদশালী শিল্পোদ্যোক্তাদের দিয়ে এ দেশে বিশাল বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনায় বড় উদ্যোগ নিতে হবে। এ উদ্যোগের লক্ষ্যে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)সহ অর্থনৈতিক থিংক ট্যাংক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে নিয়ে এবং এফবিসিসিআই ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), চট্টগ্রাম চেম্বার বডিসহ প্রধান প্রধান শিল্প-কারখানা মালিক গোষ্ঠীর উদ্যমী মালিকদের যুক্ত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ছয় নেতা এবং অন্য স্তরের নেতাদেরসহ অন্তত ২১ নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করে অর্থনীতি-শিল্পবিনিয়োগসংক্রান্ত পণ্ডিত ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শিল্প চেম্বারগুলোর একটি ১০১ সদস্যের বিশেষ ‘থিংক ট্যাংক বডি’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ থিংক ট্যাংক করার লক্ষ্যে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে আহ্বায়ক করা যেতে পারে।


উল্লেখ্য, ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থনে অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র কমিটির আহ্বায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে বিশাল রিপোর্ট পেশ করেছেন, কিন্তু সেই রিপোর্টের যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি বলে তিনি হতাশা প্রকাশ করে অভিমান-ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকবার। এ কমিটিতে অবশ্যই নানা স্তরের অন্তত ২০ জন দেশসেরা অর্থনীতিবিদ, উন্নয়ন-অর্থনীতিবিদকে (বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন-অধ্যয়ন বিভাগের বিখ্যাত প্রফেসররা) যুক্ত করতে হবে। এ বিনিয়োগ-উদ্যোগ কমিটির কয়েকটি টিম চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়াসহ অন্তত প্রথম সারির পনেরো রাষ্ট্রে (যাদের শিল্পোদ্যোক্তারা বাংলাদেশে শিল্প-বিনিয়োগে আগ্রহ প্রদর্শন করছেন) আমাদের বন্ধু-বিনিয়োগ উৎসাহীদের কাছে পাঠাতে হবে-প্রধান প্রধান শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠার পুরো সম্ভাবনার তথ্য-উপাত্তসহ। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়; আমাদের দেশের বেশির ভাগ রাজনীতিক ভেবে বসে আছেন-জাতীয় নির্বাচন হয়ে যাক, ভোটের প্রচার চালানো হোক সর্বশক্তি দিয়ে, তারপর ক্ষমতায় গেলে কিংবা আংশিক দায়িত্ব পেলেও তখন এসব শিল্প-বিনিয়োগ উদ্যোগ নিয়ে কাজ করা যাবে। এটি একেবারেই ভুল ধারণা। নির্বাচনি প্রচার কর্মের অংশ এবং অত্যন্ত ভালো অংশ হতে পারে-এসব উদ্যমী কর্মকাণ্ড। ভোটারদের যদি বোঝানো যায়, রাজনৈতিক নেতারা এ দেশে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে শিল্প-বিনিয়োগ কার্যক্রম শুরুর উদ্যাগ গ্রহণ করছেন প্রধান প্রধান রাজনীতিকের মাধ্যমে, তাহলে তারা আশাবাদী হয়ে এসব রাজনীতিকের পক্ষের দলে ভোট দিতে বেশি আগ্রহী হবেন।


প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যায়ে বিএনপির রাজনীতি, তথা রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানের শুরু করা উন্নয়নের রাজনীতির প্রতি এ দেশের মানুষের অন্তহীন ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা রয়েছে। তাই নেতা জিয়ার অসমাপ্ত কর্মসূচি নতুনভাবে শুরু করা হলে, সবাই আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসবেন। বিএনপির পেশ করা ৩১ দফা তো অবশ্যই মূল্যবান, তা অনুসরণ করতে হবে।


এসবের পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ (দ্রব্যমূল্য নিম্নবিত্তের মানুষের আয়ত্তের মধ্যে আনতে), সামগ্রিকভাবে চাঁদাবাজি আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সব ধরনের সরকারি কর্মচারীদের ঘুস লেনদেন শতভাগ বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে হবে। এসব কাজে প্রতিটি পাড়ায়-মহল্লায় বিএনপির সৎ নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটি করতে হবে। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এসবের কঠোর তদারকি করবেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস-দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ পথেই এগোচ্ছেন। অবশ্যই তার উদ্যমী কর্মকাণ্ডে মধ্যস্তরের ও তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের বিশ্বস্ত সমর্থন দরকার। আমাদের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলটির নেতাকর্মীদের সবাই সচেতন বলে আমার আস্থা রয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও